ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বইমেলা

ভাঙছে ২৮ দিনের মিলনমেলা

হোসাইন মোহাম্মদ সাগর, ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০০২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৮
ভাঙছে ২৮ দিনের মিলনমেলা এবছর শেষবারের মতো বইয়ে চোখ বুলিয়ে নিচ্ছেন পাঠক/ছবি: দেলোয়ার হোসেন বাদল

গ্রন্থমেলা প্রাঙ্গণ থেকে: প্রকৃতিজুড়ে এখন ফাগুনের বন্দনা। এর মাঝে নতুন বইয়ের মাদকতায় একদিন-দু’দিন করেই যেন ফুরিয়ে এলো সময়। প্রাণের অমর একুশে গ্রন্থমেলার শেষ দিন বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি)। আবার শুরু হবে প্রত্যাশা একটি নতুন বছর, একটি নতুন বইমেলার জন্য।

মঞ্চে নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন, বটতলা কিংবা পুকুর পাড়ে লিটলম্যাগ চত্বরে বসে বাদাম খাওয়া, দলবেঁধে ঘুরে বেড়ানোর জন্য বন্ধুদের নিয়ে হুড়োহুড়ি, ছোট্ট শিশুদের বায়না, অথবা স্টলের সামনে প্রিয় লেখকের অটোগ্রাফ নিতে ভিড় করা- গ্রন্থমেলাকে স্মৃতির অ্যালবামে ধরে রাখার জন্য ক্লিক-ক্লিক করে ক্যামেরায় ফ্লাশ জ্বলে ওঠা- আজ থেকে এসব দৃশ্য ফিরে পেতে নতুন করে শুরু হবে অপেক্ষার পালা।

পরিচ্ছন্ন সুন্দর মেলায় স্নিগ্ধ ছিমছাম পরিবেশ।

নতুন বই, ঝলমলে প্রচ্ছদ, লেখক-পাঠকের আনাগোনায় জমজমাট ছিল পুরো মাস। ভাষা আন্দোলনের চেতনায় ঋদ্ধ এক মাসের বইমেলায় যে প্রাণের জোয়ার ছিল, সেই মিলনমেলা ভাঙবে আজ। পুরো ফেব্রুয়ারি মেলা ঘিরে বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছিল উৎসবের আমেজ।

বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) মেলার শেষ দিনে এখনও যারা প্রিয় লেখকের বইটি সংগ্রহ করতে পারেননি, সেটি সংগ্রহ করবেন। অনেকে বাড়ি ফিরবেন ব্যাগভর্তি বই হাতে। তাইতো শেষ দিনে মেলার দ্বার খুলতেই দেখা গেছে ভিড়। মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা যায়, স্টলগুলোতে বিক্রয়কর্মীদের দম ফেলার সময় নেই। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ভিড় বেশি হলেও পিছিয়ে নেই বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণও।

কথা হলো মধ্যবয়সী পাঠক আজিজুল হকের সঙ্গে। তিনি এসেছেন গাজীপুর থেকে। বাংলানিউজকে বলেন, যেহেতু বইমেলা শেষ হচ্ছে, তাই শেষবারের মতো বইপ্রেমী হয়ে চলে এলাম। এর আগেও কয়েকবার এসেছি, তবে কিছু কেনার বাকি রয়েছে, সেগুলো সংগ্রহ করবো আজ।

এই মিলনমেলা ভাঙছে আজঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আরিফুর রহমান বলেন, আজ বই না কিনলেই বা কী! বই তো পরে দোকানে পাওয়া যাবেই। কিন্ত এই আড্ডামুখর পরিবেশের জন্য তো প্রতীক্ষায় কাটবে সামনের পুরোটা বছর। তাই চলে এলাম বন্ধুদের নিয়ে।

শেষ সময়ে বই বিক্রির অবস্থা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন প্রকাশকরা। মিশ্র প্রতিক্রিয়াও ব্যক্ত করেছেন অনেক স্টল মালিক। অবসর প্রকাশনীর প্রকাশক আলমগীর রহমান বলেন, নানা অসঙ্গতি থাকা সত্ত্বেও এবার মেলা ভালো হয়েছে।

মেলার আয়োজন নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন আয়োজক প্রতিষ্ঠান বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান। তিনি বলেন, এবারের মেলার আয়োজন নিয়ে আমরা সন্তুষ্ট। কোনো ধরনের অঘটন ছাড়াই মেলা শেষ হতে যাচ্ছে। এটাই আমাদের মূল সন্তুষ্টির জায়গা।

ছুটির দিন না হলেও বিকেলে দ্বার খোলার পর থেকেই সারিবদ্ধভাবে মেলায় প্রবেশ করতে শুরু করেন বইপ্রেমীরা। সন্ধ্যার পরে মেলা আরো জনারণ্য হবে এবং শেষ দিনে বিক্রি আরো বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করছেন প্রকাশকসহ সংশ্লিষ্টরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৮
এইচএমএস/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।