তিনধাপে সড়কটির নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। এখন অপেক্ষা শুধু উদ্বোধনের।
এ বিষয়ে ১৭ ইসিবি’র অধিনায়ক লে. কর্নেল মেহেদী হাসান বলেন, মেরিন ড্রাইভ সড়ক উদ্বোধনের জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
পর্যটন কর্পোরেশন কক্সবাজারের ব্যবস্থাপক ও হোটেল শৈবালের ম্যানেজার স্রীজান বিকাশ বড়ুয়া বলেন, কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়ক এই অঞ্চলে পর্যটনের দুয়ার খুলে দিয়েছে। এরই মধ্যে দেশ-বিদেশের পর্যটকদের কাছে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে সড়কটি। পথ চলতে চলতে পাহাড়-সমুদ্রের অপরূপ মেলবন্ধন দেখে মোহিত হচ্ছেন পর্যটকরা। এই সড়ক ঘিরে এরই মধ্যে উখিয়া-টেকনাফের মানুষের জীবনযাত্রার মানও বদলাতে শুরু করেছে।
কলাতলী থেকে সীমান্তবর্তী টেকনাফ উপজেলার সাবরাংয়ে প্রস্তাবিত বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল পর্যন্ত প্রায় ৮০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সড়কটির নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১৬ প্রকৌশল নির্মাণ ব্যাটালিয়ন (ইসিবি)। বর্তমানে নির্মাণকাজ প্রায় শেষ হয়ে এসেছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী ৬ মে কক্সবাজারের উখিয়ার ইনানীতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সড়কটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করার কথা রয়েছে।
কক্সবাজার সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রানাপ্রিয় বড়ুয়া বলেন, নির্মাণকাজ পুরো শেষ হলে সড়কটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সড়ক ও জনপথ বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
মেরিন ড্রাইভ সড়ক নির্মাণ প্রকল্প তৃতীয় পর্যায়ের প্রকল্প কর্মকর্তা মেজর নাহিদুল ইসলাম জানান, পর্যটকদের কাছে আরও দৃষ্টিনন্দন করতে সড়কের পাশে নানা প্রজাতির প্রায় ১১ লাখ গাছ লাগানো হয়েছে। এসবের মধ্যে রয়েছে সোনালু, শিশু, নিম ও নানা প্রজাতির ফলজ গাছ। এছাড়াও সমুদ্রতীরবর্তী স্থানে প্রায় ৫ লাখ ঝাউগাছের চারা রোপন করা হয়েছে। নির্মাণকাজ শেষ হলে ভবিষ্যতে সড়কটির সৌন্দর্যবর্ধনের আরো কাজ চলবে। চার লেনে উন্নীত করা হবে সড়কটি। রেজুখালের ওপর নির্মিত হবে আকর্ষণীয় একটি সেতু।
১৯৯৩ সালে তৎকালীন সরকারের আমলে ৪৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভ প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়। তখন প্রাক্কলন ব্যয় ধরা হয়েছিল ২০৩ কোটি ২১ লাখ টাকা। সড়ক ও জনপথ বিভাগের নিযুক্ত ঠিকাদার কলাতলী মোড় থেকে নিরিবিলি হ্যাচারি পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার সড়ক নির্মাণের পর সাগরের প্রবল স্রোতে ও ঢেউয়ের ধাক্কায় তা সাগরেই বিলীন হয়ে যায়।
এরপর ১৯৯৫ সালে সড়কের নির্মাণকাজের দায়িত্ব দেওয়া হয় সেনাবাহিনীর প্রকৌশল নির্মাণ ব্যাটালিয়নকে। বর্তমানে সড়কটির দৈর্ঘ্য বাড়িয়ে ৪৮ কিলোমিটার থেকে ৮০ কিলোমিটার করা হয়েছে। প্রথম ধাপে কলাতলী থেকে ইনানী পর্যন্ত ২৪ কিলোমিটার, দ্বিতীয় ধাপে ইনানী থেকে শীলখালী পর্যন্ত ২৪ কিলোমিটার ও তৃতীয় ধাপে শীলখালী থেকে টেকনাফের সাবরাং পর্যন্ত ৩২ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। নির্মাণকাজের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৪৫৬ কোটি টাকা।
মেজর নাহিদুল ইসলাম বলেন, সড়কটির তৃতীয় ধাপের নির্মাণকাজ শেষ করার কথা ছিল ২০১৮ সালের মধ্যে। কিন্তু প্রায় একবছর আগেই নির্মাণকাজ শেষ হয়ে এসেছে। আগামী ৬ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সড়কটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পর্যটন-জেলা কক্সবাজারের উন্নয়নে বেশক'টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছেন। মেরিন ড্রাইভ সড়ক এদেরই একটি। ৬ মে সড়কটির উদ্বোধনকে সামনে রেখে কক্সবাজারে প্রধানমন্ত্রীকে বরণ করতে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে জেলা প্রশাসন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৭ ঘণ্টা, মে ০৩, ২০১৭/আপডেট
টিটি/আইএসএ/টিসি/জেএম