বাংলানিউজের সঙ্গে একান্ত আলাপকালে আমেরিকার সাদার্ন মিসিসিপি ইউনিভার্সিটির জনস্বাস্থ্য বিভাগের অধ্যাপক ড. কামরুন মুস্তাফা এসব কথা বলেন।
ইলিনয় অ্যাসোসিয়েশন অব বিহেভিরেয়াল হেলথের সদস্য ড. কামরুন মুস্তাফা ১৭ বছরে ধরে শিক্ষকতার পাশাপাশি মাদকাসক্তদের নিয়ে কাজ করছেন।
আমেরিকায় মাদক ও মানসিক স্বাস্থ্য কাউন্সেলিং বিভাগের সদস্যও তিনি। সেখানে ৪ বছর ধরে কারাগারে মাদকাসক্ত বন্দিদের কাউন্সেলিং করেছেন।
ড. কামরুন মুস্তাফা বলেন, মাদক মানব মস্তিষ্কের স্বাভাবিক বিচার-বিবেচনাবোধ কেড়ে নেয়। নষ্ট করে দেয় কার্যক্ষমতা। তবুও অনেক কারণে ব্যক্তিকে মাদক থেকে দূরে রাখা সম্ভব হয় না।
‘এক্ষেত্রে কাউন্সেলিং করে মাদকমুক্ত হওয়া এবং চিকিৎসা নিতে উৎসাহিত করা হয়। এরপর পরিবারকে তা কার্যকর করতে হবে। ব্যক্তির জীবনযাপনকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। ইতিবাচক হতে উদ্বুদ্ধ করার পাশাপাশি মাদকমুক্ত পরিবেশের ব্যবস্থা করতে হবে। ’
২০১৭ সাল থেকে ঢাকায় মানসিক রোগীদের সেবা দিচ্ছেন ড. কামরুন। পাশাপাশি শ্রম ও নৌ মন্ত্রণালয়ের অধীনে কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকদের মানসিক সমস্যা নিয়েও কাজ করছেন।
দেশের মাদকাসক্তদের ব্যাপারে তিনি বলেন, দুদেশের মাদকাসক্তের প্রকৃতি একই। এদেশে মাদকাসক্ত তরুণদের আত্মহত্যার প্রবণতা বেশি।
‘আমেরিকায় কাউন্সেলিংয়ে পরিবারকে অন্তর্ভুক্ত করা যেতো না। বাংলাদেশে সে সমস্যায় পড়তে হয় না। তাই এখানে দ্রুত ফলাফল আসে। ’
‘তবে এদেশে মাদকের কুফল সম্পর্কে সচেতনতার অভাব রয়েছে। এখানে অশান্তি থেকে মুক্তি কিংবা একসাথে চলতে মাদক গ্রহণ করে। যা ছোটখাটো ব্যাপার। এ ছাড়া সহজলভ্যতার কারণে মাদক গ্রহণের প্রবণতাও বেশি। ’
ড. কামরুন মুস্তাফা বলেন, ‘মানসিক অবস্থা একদম খারাপের দিকে গেলে এখানে কাউন্সেলিং করানো হয়। অথচ প্রাথমিক পর্যায়ে কাউন্সেলিং করা গেলে আরও বেশি সুফল মিলতো। ’
মাদকের কারণে একাধিক প্রজন্ম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, মাদকাসক্ত নিজেই অশান্তিতে ভুগেন। পরিবারকেও ভোগান। একজন মাদকাসক্ত সুস্থ সন্তান জন্ম দিতে পারেন না। তাদের সন্তানের শারীরিক ও মানসিক সমস্যা দেখা দেয়।
তিনি বলেন, মাদককে না বলুন-স্লোগান রয়েছে। কিন্তু কি কারণে মাদককে না বলবে, গ্রহণ করলে কি ক্ষতি হবে; তা মানুষ জানে না। সুতরাং মাদকের প্রভাব সম্পর্কে জানতে হবে। তারপর মাদকমুক্ত দেশ গড়া যাবে। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০১৯
এসইউ/এসি/টিসি