ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

মাদকের বিরুদ্ধে গর্জন শুনতে চাই

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৬, ২০২০
মাদকের বিরুদ্ধে গর্জন শুনতে চাই লালদীঘি মাঠে মহাসমাবেশ। ছবি: উজ্জ্বল ধর

চট্টগ্রাম: মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মহাপরিচালক জামাল উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমার এক বছরে ৬ বিলিয়ন ডলারের ইয়াবার ব্যবসা করেছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ থেকে হাজার কোটি টাকা লুটে নিয়েছে। সময় এসেছে মাদক রুখে দাঁড়ানোর। মাদক সহ্য করলে, মাদক আমাদের ধ্বংস করে দেবে।

বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে লালদীঘি মাঠে মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, যৌতুক ও দুর্নীতি প্রতিরোধ মহাসমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

কয়েকজন মাদকাসক্তের সঙ্গে আলাপের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন,  তাদের জিজ্ঞেস করেছিলাম, তোমরা মাদক খেলে মস্তিষ্ক শেষ হয়ে যায়, পুরুষত্ব নষ্ট হয়ে যায়।

নারী হলে বন্ধ্যা হয়ে যায়। লিভার, কিডনি নষ্ট হয়ে যায়।
এত কিছু ক্ষতি করে তোমরা কেন মাদক গ্রহণ করেছো? এ কথা শোনার পর তারা কেঁদে বলে, এ কথাতো কেউ জানায়নি। মাদক খেলে যে মানুষ আর মানুষ থাকে না জন্তু জানোয়ারে পরিণত হয়, সেটি আগে কেউ জানায়নি।  

তিনি বলেন, মাদকাসক্ত সন্তানের হাতে বাংলাদেশে তিনশ’র বেশি মা-বাবা খুন হয়েছে। কীভাবে পেরেছে মা-বাবাকে হত্যা করতে। মাদক গ্রহণের পর তারা আর সন্তান ছিলো না, পুত্র ছিলো না, কন্যা ছিলো না। জন্তু জানোয়ারে পরিণত হয়েছিলো। এ কারণে তারা নৃশংসভাবে আপন মা-বাবাকে হত্যা করতে পেরেছে। কয়েকদিন আগে এক মাদকাসক্ত মা-বাবাকে কুপিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে।

২০৪১ সালে উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্ন মাদক স্তব্দ করে দেওয়ার আশঙ্কা জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। পৃথিবীর মধ্যে বিস্ময়ে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ। ছোট্ট এ দেশের উৎপাদন বিশ্বকে বিস্মিত করেছে। আপনারা নিশ্চয় জেনেছেন, বাংলাদেশ ধান উৎপাদনে দ্বিতীয়। সবজি উৎপাদনে দ্বিতীয়। তৈরি পোশাক উৎপাদনের দ্বিতীয়। মাছ উৎপাদনে দ্বিতীয়। ছোট্ট একটি দেশ বিশ্বের মধ্যে শীর্ষস্থান ধরছে। এ অগ্রযাত্রা থামিয়ে দিতে প্রতিবেশী দেশ থেকে লক্ষ লক্ষ ইয়াবা ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে। মিয়ানমার ২০১৮ সালে ৬ বিলিয়ন ডলারের ইয়াবার ব্যবসা করেছে। তারা বাংলাদেশ থেকে হাজার কোটি টাকা লুট করে নিয়ে গেছে।

এভাবে মাদক আগ্রাসন চললে উন্নত বাংলাদেশ কখনোই অর্জিত হবে না। তাই আজ সময় এসেছে মাদকের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর। প্রধানমন্ত্রী মাদকের বিরুদ্ধে ‘শূন্য সহিষ্ণুতা’ ঘোষণা করেছেন। এর অর্থ কোনোভাবেই মাদককে সহ্য করা হবে না। কারণ মাদককে যদি সহ্য করি তবে মাদক আমাদের ধ্বংস করে দেবে।  

মাদকের বিরুদ্ধে যে যুদ্ধ শুরু হয়েছে-মাদককে রুখে দিতে চট্টগ্রামবাসী প্রথম কাতারে আসীন থাকবে। আমি বিশ্বাস করি, এ যুদ্ধে চট্টগ্রামবাসী জয়ী হয়ে জানান দেবে, চট্টগ্রাম মাদক আগ্রাসনের জায়গা নয়। যেখানে মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয় সেখানে জয় সুনিশ্চিত। আরও আন্দোলন দুর্বার করবো, দুর্জয় গতিতে এগিয়ে যাবো। চট্টগ্রামকে মাদকশূন্য করবোই করবো। মাদকের বিরুদ্ধে গর্জন শুনতে চাই।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে আছেন চসিক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। বিশেষ অতিথি হিসেবে আছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (প্রশাসন ও অর্থ) আমেনা বেগম।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৬, ২০২০
এআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।