এছাড়া গ্রাম সিএনজি অটোরিকশা বন্ধ ঘোষণা করলেও অবৈধ 'টোকেন বাণিজ্যের' মাধ্যমে নগরের কয়েকটি এলাকায় চলাচল করে এসব গ্রাম সিএনজি। এসব সিএনজি অটোরিকশার অধিকাংশের কোনো নম্বর নেই।
নগরের ছিনতাইসহ নানা অপরাধ কর্মকাণ্ডে এসব নম্বরবিহীন সিএনজি অটোরিকশা ব্যবহার হয়। নগর গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা বেশ কয়েকবার নম্বরবিহীন সিএনজি অটোরিকশা আটক করেন যেসব অটোরিকশা ব্যবহৃত হয়েছিল ছিনতাইয়ে।
এসব নম্বরবিহীন গ্রাম সিএনজি অটোরিকশা ও ব্যাটারি চালিত রিকশা বন্ধের নির্দেশ দেওয়ার পর বেশ কয়েকদিন বন্ধ থাকে। পরে ফের নগরের বিভিন্ন সড়কে দেখা যায়।
অভিযোগ রয়েছে, সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করে নগরে চলে এসব গ্রাম সিএনজি অটোরিকশা ও ব্যাটারিচালিত রিকশা। এসব সিএনজি অটোরিকশা ও ব্যাটারি রিকশাকে এলাকা নির্দিষ্ট করেও দেওয়া হয়। ওই নির্দিষ্ট এলাকার ভেতর দাপটের সঙ্গেই চলাচল করে।
কয়েকদিন ধরে ঘুরে দেখা যায়, নগরের চান্দগাঁও, বায়েজিদ, খুলশী, কোতোয়ালী, পাহাড়তলী, আকবরশাহ থানাসহ বিভিন্ন এলাকায় চলছে এসব ব্যাটারিচালিত রিকশা। পলিটেকনিক মোড়, টেক্সটাইল মোড়, শেরশাহ মোড়, বহদ্দারহাট খাজা রোডসহ কয়েকটি এলাকায় দেখা যায় গ্রাম সিএনজি অটোরিকশা।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সকালেও নগরের বহদ্দারহাট, রাহাত্তারপুল, চকবাজার ও দেওয়ানবাজার এলাকায় অবৈধ গ্রাম সিএনজি অটোরিকশা ও ব্যাটারিচালিত রিকশা চলতে দেখা গেছে। সোমবার রাতেও নগরের জামালখান থেকে চকবাজার এলাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা চলতে দেখা গেছে।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) নগরে গ্রাম সিএনজি অটোরিকশা, ব্যাটারি রিকশা চলাচল বন্ধে সভা করে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ। সভায় অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) এসএম মোস্তাক আহমদ খানসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও পরিবহন সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগেও অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) যোগদানের পর নগরে অবৈধ এসব গ্রাম সিএনজি অটোরিকশা বন্ধে নির্দেশনা দিয়েছিলেন। তার নির্দেশের পর সপ্তাহখানেক উধাও হয়ে গিয়েছিল এসব সিএনজি অটোরিকশা। পরে ফের আগের মতো এসব সিএনজি অটোরিকশা চলাচল করতে দেখা যায়।
সিএনজি অটোরিকশা চালকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নগরে চলাচল বন্ধের নির্দেশনার আগে মাসে ২ হাজার ৫০০ টাকা দিয়ে টোকেন নিলেও নির্দেশনার পর তা ৩ হাজার ৫০০ টাকা হয়ে যায়।
দেওযানবাজার এলাকায় চলাচল করা ব্যাটারি রিকশার চালকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অবৈধ এসব ব্যাটারি রিকশা চালানোর জন্য প্রতিদিন পুলিশকে ১৫০ টাকা করে দিতে হয়। মো. রমজান নামে লাইনম্যান রিকশা চালকদের কাছ থেকে সংগ্রহ করে এসব টাকা পুলিশকে দেন। চালকদের কাছ থেকে আদায় করা ১৫০ টাকা কোতোয়ালী, বাকলিয়া ও চকবাজার থানা পুলিশের পকেটে যায়।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) এসএম মোস্তাক আহমদ খান বাংলানিউজকে বলেন, অবৈধ গ্রাম সিএনজি অটোরিকশা ও ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের চেষ্টা করছি। সংশ্লিষ্টদের এ বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
টোকেন ও মাসোহারার মাধ্যমে গ্রাম সিএনজি অটোরিকশা ও ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচলের বিষয়ে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২০
এসকে/টিসি