একই বছরের জুনে পিরোজপুরের কাউখালীতে উপবৃত্তির টাকা তুলতে গেলে অভিভাবকদের কাছ থেকে শতকরা ১৫-২০ টাকা হারে কেটে রাখে শিওরক্যাশ এজেন্টরা।
এধরনের অভিযোগের শেষ নেই প্রাথমিক শিক্ষায় উপবৃত্তি বিতরণের দায়িত্বে নিয়োজিত মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান শিওরক্যাশের বিরুদ্ধে।
এসব অনিয়ম তদন্তে কমিটি গঠন করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তর। শিওরক্যাশকে অনিয়মের ব্যাখা দিতেও বলেছিল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
জানা গেছে, নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে উপবৃত্তি বিতরণে ২ দশমিক ৫ শতাংশ কমিশনে শিওরক্যাশকে কাজ দিয়েছিল প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের উপবৃত্তি প্রকল্প। গতবছরের জুনে চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়েছে।
ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের অনেক পদক্ষেপের মত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মায়েদের মোবাইলে সরাসরি বৃত্তির টাকা বিতরণ শুরু হয় ২০১৬ সালে। তৃতীয় পর্যায়ের উপবৃত্তি বিতরণে আনুষ্ঠানিকভাবে দরপত্র আহবান না করলেও নতুন চুক্তি করার আগে বিভিন্ন ব্যাংক এবং মোবাইলে আর্থিক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রস্তাব পেশ করতে বলে মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়ের আহবানে ১ শতাংশ কমিশন এবং কোনো ক্যাশ আউট চার্জ ছাড়া উপবৃত্তি বিতরণে ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে একটি প্রস্তাব পেশ করে অগ্রণী ব্যাংক। প্রস্তাব পাঠানোর পর সাত মাসের বেশি অতিবাহিত হয়ে গেলেও এ বিষয়ে কোনো মতামত দেয়নি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তরের উপবৃত্তি প্রকল্প। অনুসন্ধানে জানা গেছে, আগের মতই শিওর ক্যাশকেই উচ্চ কমিশনে কাজ দিতে আগ্রহী একটি মহল।
দেশের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের উপবৃত্তি বিতরণে নিয়োজিত অগ্রণী ব্যাংক মোবাইলে আর্থিক সেবাদানকারী বিকাশকে সঙ্গে নিয়ে মাত্র ১ শতাংশ হারে কমিশন রেখে উপবৃত্তি বিতরণের প্রস্তাব দেয়। উক্ত কমিশন ব্যতিরেকে কোনো প্রকার “ক্যাশ-ইন” ও “ক্যাশ-আউট” চার্জসহ অন্যান্য চার্জ না নেওয়ারও প্রস্তাব দেয় অগ্রণী ব্যাংক। ২০১৮-২০১৯ এবং ২০১৯-২০২০ (ডিসেম্বর ২০১৯) পর্যন্ত হবে এই প্রকল্পের মেয়াদ। অগ্রণী ব্যাংককে বিতরণের দায়িত্ব দিতে গড়িমসি করতে শুরু করে শিক্ষা অধিদপ্তর।
এবিষয়ে চলতি বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি তাদের প্রস্তাব সম্পর্কে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মতামত জানতে আবারো চিঠি দেয় অগ্রণী ব্যাংক। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প পরিচালকের কাছে পাঠানো চিঠিতে বলা হয় “আমাদের জানা মতে অগ্রণী ব্যাংকের প্রস্তাবিত কমিশনের হারসহ উপবৃত্তি বিতরণের খরচের হার সর্বনিম্ন ছিল এবং বিকাশের সঙ্গে কাজ করলে কোনো ক্যাশ আউট চার্জ নেয়া হবে না বলেও উল্লেখ ছিল। সেক্ষেত্রে সঠিক তথ্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট উপস্থাপিত হয়ে থাকলে প্রকল্পের উপবৃত্তি বিতরণের কাজ পাওয়ার জন্য অত্র ব্যাংকই দাবিদার।
শিওর ক্যাশের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাথমিক শিক্ষা উপবৃত্তি প্রকল্প পরিচালক ড. মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা তৃতীয় পর্যায়ে উপবৃত্তি বিতরণে মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করার ক্ষেত্রে আগের অভিজ্ঞতাকে গুরুত্ব দেব। তবে শিওর ক্যাশকে দেওয়ার বিষয়টি এখনো নিশ্চিত হয়নি।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১০ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০১৮
এসই/জেএম