ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

চাঁদপুরে আখের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২৬ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০১৯
 চাঁদপুরে আখের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি আখক্ষেতে কাজ করছেন কৃষক। ছবি: বাংলানিউজ

চাঁদপুর: চাঁদপুর জেলায় এবার আখের বাম্পার ফলন হয়েছে। ভালো দাম পাওয়ার কারণে কৃষকদের মুখেও হাসি ফুটে উঠেছে। চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলা সবচেয়ে বেশি আখ আবাদ হয়েছে। ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে আখ খুচরা ও পাইকারি বিক্রি। আগামী এক মাসের মধ্যে অধিকাংশ জমির আখ বিক্রি হয়ে যাবে। এসব জমিতেই আবাদ হবে বোর ধান।

 

চাঁদপুর জেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার ৮ উপজেলার আট আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬৭৫ হেক্টর। আবাদ হয়েছে ৬৭০ হেক্টর জমিতে।

এর মধ্যে ফরিদগঞ্জ উপজেলায় আবাদ হয়েছে ৩৩৫ হেক্টর, মতলব উত্তর উপজেলায় ২১০ হেক্টর। মতলব উত্তর ও ফরিদগঞ্জ উপজেলা সেচ প্রকল্পের আওতায় হওয়ার কারণে জমিগুলো কৃষি উপযোগী থাকে বছরজুড়ে।

এছাড়াও সদর উপজেলায় আবাদ হয়েছে ৬৫ হেক্টর, মতলব দক্ষিণে ৫ হেক্টর, হাজীগঞ্জ উপজেলায় ৮ হেক্টর, শাহরাস্তি ৩৫ হেক্টর, কচুয়া ৫ হেক্টর ও হাইমচর উপজেলায় ৭ হেক্টর।

সোমবার (২২ জুলাই) ফরিদগঞ্জ উপজেলার গোবিন্দপুর ও বালিথুবা ইউনিয়নে গিয়ে দেখা গেছে প্রায় জমিতে আখের আবাদ। যেদিকে চোখ যায় শুধু আখ আর আখ। কৃষকরা জমিতে কাজ করছেন। কেউ আখ তুলছেন, কেউ আঁটি বাঁধছেন। আবার অন্য শ্রমিক এসব আখ সড়কে নিয়ে স্তূপ করে রাখছেন। আখক্ষেত, ছবি: বাংলানিউজফরিদগঞ্জ বালিথুবা মদনের গাঁও গ্রামের সেচ প্রকল্প এলাকার কৃষক মোখলেছুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, তিনি এ বছর ৪০ শতাংশ জমিতে আখ আবাদ করেছেন। খরচ বাদ দিয়ে তার কমপক্ষে ২০ হাজার টাকা লাভ হবে।  

লোহাগড়র গ্রামের এলাকার কৃষক জুয়েল পাটওয়ারী ও সুমন খান বলেন, তারা প্রায় ১৫ বছর আখের চাষ আবাদ করেন। সেচ প্রকল্প হওয়ার কারণে তাদের আখেল ফলন খুবই ভালো হয়েছে। এ বছর তাদের জমিতে ২০৮ নম্বর যা ‌'চাঁদপুর গ্যান্ডারি' নামে পরিচিত এটিই তারা আবাদ করেছেন। চাঁদপুর গ্যান্ডারি স্থানীয়ভাবে খুচরা এবং পাইকারি দুইভাবে বিক্রি হচ্ছে। কারণ এই আখ খুব সহজেই চিবিয়ে খাওয়া যায়।

মদনের গাঁও গ্রামের আরেক কৃষক বাবুল গাজী বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের এলাকায় মাত্র আখ বিক্রি শুরু হয়েছে। আগামী ১ মাসের মধ্যে সব আখ বিক্রি হয়ে যাবে। তবে কিছু উঁচু জমির আখ দেরিতে বিক্রি হয় এবং ওইসব কৃষক দামও ভালো পান। এখন পাইকাররা এসে পুরো জমির আখ একসঙ্গে ক্রয় করে নিচ্ছে।

আখের পাইকারি ব্যবসায়ী রমজান আলী মিজি বাংলানিউজকে বলেন, এ বছর আখের ফলন খুবই ভালো হয়েছে। এই এলাকায় চাঁদপুর গেণ্ডারি, রং বিলাস, ইশ্বরদী বিএসআরআই-(৩৪), ৪১ ও ৪২ আবাদ হয়। স্থানীয় জাতের আখের প্রতি মানুষের আগ্রহ বেশি। আমি এসব আখ ক্রয় করে ঢাকা এবং নোয়াখালীতে নিয়ে বিক্রি করি।

চাঁদপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা নোয়াখেরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, আবহওয়া ভালো থাকায় চাঁদপুরে আখার আবাদ খুবই ভালো হয়েছে। আখ লাভজনক হওয়ার কারণে কৃষকদেরও দিন দিন আখ আবাদের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে। চাঁদপুর গেণ্ডারি নামক আখ এখন স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় রপ্তানি হচ্ছে।  

বাংলাদেশ সময়: ০৮২১ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০১৯
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।