নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখার সুযোগ হয়েছে রহিজুলের। মাত্র ১৪ বছর বয়সে ২০১২ সালে বাবা বশির উদ্দিনকে হারিয়ে সংসারের হাল ধরতে হয় তার।
রহিজুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, আমার বয়স যখন ১৪ থেকে ১৫ হবে, তখন বাবাকে হারিয়েছি। পাঁচ বোন ও চার ভাইয়ের মধ্যে আমি তৃতীয়। বড় দুইভাই বিয়ে করে নিজেদের মতো করে সংসার করছেন। তাই আমার পড়ালেখার সুযোগ হয়ে ওঠেনি। সংসারের হাল ধরতে হয়েছে।
তিনি বলেন, রোজগার (ইনকাম) বাড়াতে চিন্তা করলাম কাজের পাশাপাশি মুরগি-কবুতরের খামার করবো। কিন্তু আমি ছোট মানুষ বলে কেউ ঋণ (ধার) না দেওয়ায় অর্থের অভাবে থেমে যায় সেই চিন্তা। এর পর ২০১৫ সালে পাশের বাড়িতে ‘আমার বাড়ি আমার খামার প্রকল্প ও পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের’ উঠান বৈঠক হচ্ছিলো। সেই বৈঠকে উপস্থিত যোগ দিলাম। সেখানে বালিয়া ইউনিয়নের ফিল্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট শাহাদাত হোসেন ভাই খামার করতে আমাকে উদ্বুদ্ধ করেন এবং প্রকল্পের আওতায় ঋণ দিয়ে সহযোগিতা করেন। এরপর সেখান থেকে ঋণ নিয়ে আমি ছোট পরিসরে মুরগি পালন শুরু করি। এভাবে ধীরে ধীরে মুরগির খামার, মুরগির খামার থেকে পুঁজি করে এখন আরেকটি কবুতরের খামার দিয়েছি।
এখন দুটো খামারের আয় দিয়ে আল্লাহ রহমতে ভালো আছি। আমার যে কবুতরের খামারটি রয়েছে তাতে বেশিভাগেই বিদেশি কবুতর। যার জোড়া বাজারে বিক্রি হয় ২ থেকে ৩ হাজার টাকা। মুরগি ও কবুতরের খামার থেকে গড়ে প্রতিমাসে আমার ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা আয় হয়।
তিনি আরও বলেন, যেহেতু আমি টাকার অভাবে পড়ালেখা করতে পারিনি। তাই সন্তানদের পড়ালেখা করিয়ে মানুষের মতো মানুষ করতে চাই।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আমার বাড়ি আমার খামার ও পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের উপজেলা সমন্বয়কারী আলাউল ইসলাম জানান, আমার বাড়ি আমার খামার ও পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক অসহায় দরিদ্র মানুষের জন্য। আমরা অসহায় দরিদ্রদের অল্প সুদে ঋণ দিয়ে খামার, সবজি চাষ, হাঁস-মুরগি-গাভী পালনসহ বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে ‘আমার বাড়ি আমার খামার প্রকল্প ও পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক বিভিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছে। রহিজুলের মতো অনেক বেকার যুবক এ প্রকল্পের আওতায় ঋণ নিয়ে নিজেকে স্বাবলম্বী করেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১০০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০২০
ওএইচ/