মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রী ও এনইসি চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এনইসি বৈঠকে এ খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়।
বর্তমানে দেশের মানুষের বার্ষিক মাথাপিছু আয় (২০১৮-২০১৯ অর্থবছর) এক হাজার ৯০৯ ডলার।
দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০ বছর পর বার্ষিক মাথাপিছু আয় হবে ১২ হাজার ৫০০ ডলার। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রতি ডলার ৮৫ টাকা ধরে ১০ লাখ ৬২ হাজার ৫০০ টাকা প্রায়।
এছাড়া পরিকল্পনায় ২০ বছর পর মানুষের প্রত্যাশিত গড় আয়ু বেড়ে ৮০ বছরে দাঁড়াবে বলে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। অবশ্য ২০১৮ সালের হিসেবে বর্তমানে মানুষের গড় আয়ু ৭২ দশমিক ৩ বছর। যা আবার ২০৩১ সালে বেড়ে ৭৫ বছর হবে।
একইসঙ্গে প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি ও দারিদ্র্য নিরসনকে গুরুত্ব দিয়ে দেশের দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। উন্নত দেশে যেতে ২০ বছর মেয়াদী পরিকল্পনটি তৈরি করেছে সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি)।
এতে ২০৪১ সালে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরা হয়েছে নয় দশমিক নয় শতাংশ। যদিও বর্তমানে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৮ দশমিক ১৩ শতাংশ। এছাড়া এতে চরম দারিদ্র্য ধরা হয়েছে ০ দশমিক ৭ শতাংশ।
এ বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন, নানা স্বপ্ন সামনে রেখে প্রেক্ষিত পরিকল্পনার খসড়া অনুমোদন পেয়েছে। ২২৯ পাতার এই পরিকল্পনায় উন্নয়নের একটা আলোর ছাপ দেখা গেছে। এ অনুযায়ী কাজ করে উন্নত বাংলাদেশ গড়ব আমরা।
সভা সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রীর সুদক্ষ অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা ও বলিষ্ঠ রাজনৈতিক নেতৃত্বের কারণে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) কাতার থেকে রেবিয়ে আসার জন্য প্রয়োজনীয় সব মানদণ্ড পূরণ করতে পেরেছে। এরইমধ্যে ২০১৫ সালে নিম্ন আয়ের দেশ থেকে নিম্ন-মধ্য আয়ের দেশের শ্রেণিভুক্ত হয়েছে এবং দশকব্যাপী সাত শতাংশ হারে গড় জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনও সম্ভবপর হয়েছে।
সাফল্যের এই ধারায় উজ্জীবিত হয়ে বর্তমান সরকার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দীর্ঘ লালিত স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়নের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এ হিসেবে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ একটি উন্নত সমৃদ্ধ দেশ। যার মাথাপিছু আয় দাঁড়াবে বর্তমান বাজার মূল্যে ১২ হাজার ৫০০ ডলার। জিডিপির প্রবৃদ্ধি হবে নয় দশমিক নয় শতাংশ। একইসঙ্গে চরম দারিদ্র্য নেমে আসবে দশমিক ৭ শতাংশে এবং দারিদ্র্য হার হবে পাঁচ শতাংশের নিচে।
নতুন প্রেক্ষিত পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, চরম দারিদ্র্যের হার ২০২০ সালে নয় দশমিক ৩৮ শতাংশ থেকে কমে ২০৩১ সালে পৌঁছাবে দুই দশমিক ৫৫ শতাংশে। আবার সেটি পরিকল্পনার শেষ বছর ২০৪১ সালে কমে দাঁড়াবে শূন্য দশমিক ৬৮ শতাংশে। অন্যদিকে মাঝারি দারিদ্র্য বর্তমান বছরের ১৮ দশমিক ৮২ শতাংশ থেকে কমে ২০৩১ সালে দাঁড়াবে ৭ দশমিক শূন্য শতাংশে। আর পরিকল্পনার বাস্তবায়ন শেষে ২০৪১ সালে এ হার হবে তিন শতাংশের নিচে।
পরিকল্পনায় যেসব বিষয়ে বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে, সেগুলো হলো: দেশে বৈষম্য হ্রাস, ধারাবাহিক জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন, দারিদ্র্য নিরসন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, রপ্তানি বহুমুখীকরণ, বিনিময় হার ব্যবস্থাপনা, লেনদেনের ভারসাম্য রক্ষা, পুষ্টি ও খাদ্য নিরাপত্তা, টেকসই বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, টেকসই প্রবৃদ্ধির জন্য পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন ব্যবস্থাপনা এবং এলডিসি উত্তরণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার প্রস্তুতি।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২০
এমআইএস/টিএ