ঢাকা, সোমবার, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

নিম্নমুখী সবজি-বাজার, বাড়তি চাল-ডাল-ভোজ্যতেল

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০০৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩, ২০২০
নিম্নমুখী সবজি-বাজার, বাড়তি চাল-ডাল-ভোজ্যতেল বাজারদর

ঢাকা: সপ্তাহের ব্যবধানে দাম কমেছে শাক-সবজির। সবজিভেদে পাঁচ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত দাম কমেছে বিভিন্ন সবজির। মুরগি ও মাছের দাম অপরিবর্তিত থাকলেও কমেছে ডিমের দাম। অন্যদিকে কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে গরু ও খাসির মাংসের দাম।

এছাড়া আগের চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে চাল, ডাল, ভোজ্যতেলের বাজার। আগের দামে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ, রসুন, আদা, কাঁচা মরিচ, ধনিয়া পাতা।

তবে সাধ্যের বাইরে চলে গেছে লেবুর দাম। বর্তমানে প্রতি হালি লেবু বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৭০ টাকায়।

এদিকে পণ্যের দাম সন্তোষজনক নয় বলে দাবি ক্রেতাদের।

তাদের মতে, বাজারে ক্রেতা নেই, এ অবস্থায় পণ্যের আরও কম হওয়া উচিত। আর বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে ক্রেতা যেমন নেই, একইসঙ্গে পাইকারি বাজারে পণ্যেরও সংকট। এরপরও কম দামেই বিক্রি হচ্ছে সবজি।

শুক্রবার (৩ এপ্রিল) পুরান ঢাকার সুত্রাপুর, রায়সাহেব বাজার, নারিন্দা বাজার, পুকুর লেন, বংশাল, বাবু বাজার, ডালপট্টি বাজার, কালভার্ট রোড, ফকিরাপুল বাজার ঘুরে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

এসব বাজারে সপ্তাহের ব্যবধানে সবজিভেদে কেজিপ্রতি পাঁচ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। এসব বাজারে প্রকারভেদে প্রতিকেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩৫ টাকা, শিম ৩০ থেকে ৪০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৬০ থেকে ৮০ টাকা, প্রতিকেজি টমেটো বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকা, করলা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, উস্তা ৬০ থেকে ১০০ টাকা, বেগুন (প্রকারভেদে) ৪০ থেকে ৮০ টাকা, গাজর বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৫০ টাকা, পেঁপে ২৫ থেকে ৩০ টাকা, কচুরলতি ৫০ থেকে ৮০ টাকা, বড় কচু ৫০ থেকে ৬০ টাকা, বিট ৪০ থেকে ৬০ টাকা, শসা ৩০ থেকে ৬০ টাকা, শিমের বিচি ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজিদরে বিক্রি হচ্ছে।

অপরিবর্তিত আছে লাউ, কপির দাম। বাজারে প্রতি পিস লাউ বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা, প্রতি পিস বাঁধাকপি-ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৫০ টাকা,  ব্রোকলি ৬০ থেকে ৮০ টাকা।

দাম কমেছে শাকের বাজারেও। বাজারে প্রতি আঁটি (মোড়া) কচুশাক ৮ থেকে ১০ টাকা, লালশাক ১০ টাকা, মূলাশাক ১৫ টাকা, পালংশাক ১০ টাকা থেকে ১২, লাউ ও কুমড়ার শাক ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। তবে বাড়তি রয়েছে পাট শাকে। বাজারে প্রতি মোড়া পাট শাক বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকায়। সাধ্যের বাইরে চলে গেছে লেবুর দাম। বর্তমানে প্রতি হালি লেবু বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৭০ টাকায়।

দাম বেড়েছে গরু ও খাসির মাংসের। প্রতিকেজি ২০ থেকে ৩০ টাকা বেড়ে বর্তমানে গরু বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকা, মহিশের মাংস ৬০০ টাকা, খাসির মাংস ৮০০ টাকা কেজি দরে।

অপরিবর্তিত আছে মুরগি ও মাছের বাজার। বর্তমানে প্রতিকেজি বয়লার ১২০ টাকা, বাজারভেদে লেয়ার ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, সাদা লেয়ার ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা, সোনালি ২৫০ থেকে ২৬০ টাকা কেজিদরে। কমেছে ডিমের দাম। পাঁচ টাকা কমে বাজারে লাল ডিম প্রতি ডর্জন ৯৫ থেকে ১০০ টাকা, ১০ টাকা কমে দেশি মুরগি ১৫০ টাকা, সোনালি ১৩০, হাঁস ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা, কোয়েল প্রতি ১০০ পিস ২০০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।

এসব বাজারে বর্তমানে প্রতি এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১০৫০ থেকে ১১০০ টাকা, ৭৫০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৬৫০ টাকা থেকে ৭০০, ছোট ইলিশ আকারভেদে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি দরে। এছাড়া প্রতিকেজি কাঁচকি ৩০০ টাকা কেজি, মলা ৩৫০০ টাকা, ছোট পুঁটি (তাজা) ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা, শিং ৩৫০ থেকে ৬৫০ টাকা, পাবদা ৪০০ থেকে ৫৫০ টাকা, চিংড়ি (গলদা) ৪০০ থেকে ৮৫০ টাকা, বাগদা ৪৫০ থেকে ১০০০ টাকা, দেশি চিংড়ি ৩৫০ থেজে ৫০০ টাকা, রুই (আকারভেদে) ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা, মৃগেল ২২০ থেকে ৩৫০ টাকা, পাঙাস ১৪০ থেকে ১৮০ টাকা, তেলাপিয়া ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা, কৈ ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, কাতল ২২০ থেকে ৩০০ টাকা কেজিদরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।

এসব বাজারে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে (মানভেদে) ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজিদরে, প্রতিকেজি রসুন দেশি (মানভেদে) ৭০ থেকে ১০০ টাকা, চায়না ও বার্মা রসুন ১৩০ থেকে ১৫০, তিন কোয়া রসুন ১৮০, আদা ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা কেজিদরে।

আগের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে খোলা সয়াবিন। খোলা সয়াবিন (লাল) বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১০৫ টাকা লিটার, খোলা সাদা সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ৯৫ থেকে ১০০ টাকা লিটার। অপরিবর্তিত আছে সরিষার তেল। খোলা সরিষার তেল বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা লিটার।

আগের চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে চালের বাজার। এসব বাজারে প্রতিকেজি মিনিকেট (নতুন) চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৬ থেকে ৫৮ টাকা কেজি, মিনিকেট পুরান ৬২ টাকা, বাসমতী ৬৫ থেকে ৬৬ টাকা, প্রতিকেজি  আটাশ চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৬ টাকা, সেদ্ধ চাল বিক্রি হচ্ছে ৪২ টাকা, পাইজাম ৪২ টাকা, প্রতিকেজি পোলাও বিক্রি হচ্ছে ৯৫ থেকে ১০০ টাকা কেজিদরে।

বাজারে প্রতিকেজি ডাবলী বিক্রি হচ্ছে ৪৬ টাকা, এংকর ৪৬ টাকা, প্রতিকেজি দেশি মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা, মসুর (মোটা) ৮০ টাকা কেজিদরে।

আগের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন মসলা। এসব বাজারে প্রতিকেজি এলাচ বিক্রি হচ্ছে ৪৬০০ থেকে ৫৫০০ টাকা কেজি দরে, জয়ত্রী বিক্রি হচ্চে ৩৫০০ থেকে ৩৬০০ টাকা কেজি দরে। জায়ফল বর্তমান বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকা কেজি দরে।

দাম কমলেও তা সন্তোষজনক নয় বলে দাবি ক্রেতাদের।

শিখা দেবনাথ নামে রায়সাহেব বাজারের এক ক্রেতা বাংলানিউজকে বলেন, সবজির দাম কমেছে বটে তবে তা তুলনামূলক বেশি। বাজারে ক্রেতার উপস্থিতি নেই সে তুলনায় আরও দাম কমা উচিত।

একই বাজারের বিক্রেতা শফিউল্লাহ বলেন, বাজারে যেমন ক্রেতা নেই একইভাবে পাইকারি বাজারে মালামালও কম আসছে। মালের তুলনায় অনেক কমেছে পণ্যের দাম। তবে গরমে লেবুর চাহিদা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সরবে কম হওয়ায় সেটার দাম বাড়তি।

বাংলাদেশ সময়: ১০০৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৩, ২০২০
ইএআর/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।