ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ইফতারি বিক্রিতেও করোনার প্রভাব

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৯, ২০২০
ইফতারি বিক্রিতেও করোনার প্রভাব ইফতারি কিনছে ক্রেতারা। ছবি: জি এম মুজিবুর

ঢাকা: করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে রাজধানীর নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ও ওষুধের দোকান ছাড়া বাকি সব ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো ৩৩ দিন যাবত বন্ধ। তবে রমজানে নিরাপদ শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে হোটেল-রেস্তোরাঁ গুলোতে ইফতার সামগ্রী বিক্রির অনুমতি দেওয়া হলেও করোনার প্রভাবে প্রায় ক্রেতা শূন্য দেখা গেছে। 

এদিকে বিক্রেতা বলেছেন, করোনা ভাইরাসের প্রভাবে ইফতারি কিনতে আসছে না ক্রেতারা।  

বুধবার (২৯ এপ্রিল) রাজধানীর হোটেল-রেস্টুরেন্টের ইফতারির দোকান ঘুরে এমন এ দৃশ্য দেখা গেছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, রাজধানীর ভাটারার নতুন বাজার এলাকায় কোথাও ইফতারির পসরা সাজিয়ে বসতে দেখা যায়নি। তবে আশপাশে দুই-একটি রেস্টুরেন্টে ইফতার বিক্রি করতে দেখা গেলেও চোখে পড়ার মতো কোনো ভিড় ছিল না। এদিকে মিরপুর ১২ ও ১১ নম্বর ও মিরপুর ইসিবি চত্বরে ছিল একই দৃশ্য। মিরপুর ২ ও ১০ নম্বর বাসস্ট্যান্ডে দু’টি ইফতারের দোকান দেখা গেলেও ছিল না ক্রেতাদের ভিড়। পাড়া-মহল্লায় ইফতারির কোনো দোকান খোলা থাকতে দেখা যায়নি।

এ বিষয়ে মিরপুর ১০ নম্বরের মেজবান বিরিয়ানি ঘরের মালিক মিজানুর রহমান বলেন, বুধবার প্রথম ইফতার সামগ্রীর দোকান চালু করলাম। তেমন কোনো ক্রেতা পাইনি। মাঝেমধ্যে দুই-একজন ইফতার কিনেছেন।

ইফতারি কিনছে ক্রেতারা।  ছবি: জি এম মুজিবুরতিনি বলেন, দু’জন কারিগর নিয়ে ইফতারির দোকান চালু করেছি। তারা তৈরি করেছেন নয়টি আইটেম। এগুলো হলো নিমকি, ছোলা ভুনা, ভেজিটেবল রোল, বেগুনি, পেঁয়াজু, বুরিনদা, ডিম চপ, আলুর চপ ও পাকুরা।  

ইফতার কিনতে ক্রেতারা কেমন আসছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ৩৩ দিন পর ইফতারের দোকান খোলার সুযোগ পেয়েছি। হঠাৎ করে এ ঘোষণা আসায় অনেক হোটেল ও রেস্টুরেন্টের মালিকরা প্রস্তুত ছিলেন না। এ কারণে কম দোকান বসেছে। ক্রেতারা অনেকেই নতুন ঘোষণার খবর হয়তো জানেন না। আর করোনা ভাইরাসের কারণে অনেকেই ইফতার কিনতে ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। বাইরের খাবার ও অনেকে খেতে চাচ্ছেন না। আর যারা বাইরের খাবার খায় তারা অনেকেই সরকারি সাধারণ ছুটিতে দেশের বাড়িতে চলে গেছেন। তাই ক্রেতাও কম আসছেন।  

এ দোকান ক্রেতা পোশাক শ্রমিক আসমা আক্তার বলেন, আমার গার্মেন্টস ছুটি হয়েছে সাড়ে চারটায়। রোজা রেখেছি। বাসায় গিয়ে ইফতার করবো। ইফতার তৈরি করার সময় নেই। তাই সামর্থ্য অনুয়াযী দোকান থেকে ইফতার কিনে নিলাম।

মিরপুর ২ নম্বরের পূর্ণিমা বিরিয়ানী হাউসের ইফতার বিক্রেতা ইব্রাহীম বলেন, বিকেল তিনটা থেকে দোকান সাজানো শুরু করেছি। করোনা ভাইরাসের আতঙ্কে মানুষজন ঘর থেকে বাইরে বের না হওয়ায় ইফতারি বিক্রি কম। আগে তো ইফতারের সময় দোকান খুললে বিকেল থেকেই ভিড় হতো। আর এখন রাস্তায় মানুষই দেখা যায় না করনোর কারণে।  

ইফতারির জন্য কি আইটেম তৈরি করেছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, জিলাপি, হালিম, জালি কাবাব, ছোলা ভুনা, পেঁয়াজু , বেগুনি, বুরিন্দা ও হালিম।

হালিম কিনতে আসা মিরপুর ২ নম্বরের মসজিদ মার্কেট এলাকার বাসিন্দা মো. বাহার বলেন, আমি হালিম কিনতে এসেছি। ইফতারে হালিম খেতে খুবই ভালো লাগে। হালিম টা আমার ও পরিবারের সবারই খুবই পছন্দ। এ করোনা ভাইরাসের আতঙ্কের মধ্যে শুধুমাত্র হালিম কিনতে এসেছি। গত বছর যখন এখান থেকে ইফতার কিনতাম বিকেল বেলায় ইফতারের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হতো। আর এখন মানুষজনের ভিড় নেই শুধুমাত্র করোনার আতঙ্কে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে সোমবার (২৭ এপ্রিল) নির্দেশনায় বলা হয়, ঢাকা মহানগরীর প্রতিষ্ঠিত হোটেল-রেস্তোরাঁ ও রেস্টুরেন্টগুলো মঙ্গলবার (২৮ এপ্রিল) থেকে ইফতারি বিক্রি করতে পারবে। তবে সেখানে বসে ইফতার খাওয়া যাবে না। ইফতারি বিক্রেতা এবং ক্রেতার অবশ্যই স্বাস্থ্য বিধি অনুসরণ করে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। এছাড়া কেউ ফুটপাতে ইফতারের পসরা সাজিয়ে ক্রয়-বিক্রয় করতে পারবে না।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৯, ২০২০
এমএমআই/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।