তিনি বলেন, সন্ত্রাসবাদ, সহিংস উগ্রবাদ এবং সশস্ত্র সংঘাত বিশ্বে মানবাধিকার, শান্তি এবং স্থিতিশীলতার প্রতি হুমকি হিসেবে দেখা দিয়েছে।
রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর হোটেল রেডিসন ব্লু’তে ই-নাইন ফোরামের মন্ত্রী পর্যায়ের একদশতম সম্মেলন উদ্বোধনকালে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ সমস্যা ও এর সমাধানকে সামনে রেখে বাংলাদেশের শিক্ষাক্রম ও শিক্ষা উপকরণ সংস্কার করা হচ্ছে- জানান প্রধানমন্ত্রী। এ সময় তিনি সবাইকে এক গ্রহ নিয়ে চিন্তা করার এবং সবাইকে টেকসই উন্নয়নে সম্পৃক্ত করার তাগিদ দেন।
শিক্ষায় জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পারস্পারিক বোঝাপড়া, সহিষ্ণুতা এবং বন্ধুত্বকে এগিয়ে নিতে শিক্ষা সেতুবন্ধ হিসেবে কাজ করতে পারে। সমাজে সঠিক মূল্যবোধ, আকাঙ্ক্ষা এবং প্রয়োজনীয় যোগ্যতার ভিত গড়ে দিতেও শিক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
“সংস্কৃতি, ধর্ম, বর্ণ এবং ভাষার বিভিন্নতা সত্ত্বেও বর্তমানে আমরা এমন একটি বিশ্বে বসবাস করছি যেখানে সবাই একে অন্যের উপর নির্ভরশীল”।
শেখ হাসিনা বলেন, শিক্ষা সামাজিক অন্তর্ভুক্তি সমর্থন করে, নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা হ্রাস এবং তাদের ক্ষমতায়নে সাহায্য করে। বিদ্যালয়ে তথ্য প্রযুক্তি ভিত্তিক পঠন শিক্ষাকে সহজ করবে, শিক্ষার্থীদের দক্ষতা উন্নয়ন ঘটাবে এবং নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে তাদের খাপ খাওয়াতে সাহায্য করবে।
যোগ্য ব্যক্তিদের শিক্ষকতা পেশায় আকৃষ্ট করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই পেশার জন্য একটি দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার চ্যালেঞ্জ বিবেচনায় নিয়ে নীতিগত উপায় উদ্ভাবন এবং বিশেষ প্রণোদনার বিষয়ে চিন্তাভাবনা করা যেতে পারে, যোগ করেন তিনি।
ই-নাইন বৈঠক থেকে সময়োপযোগী এবং বাস্তবমুখী সুপারিশ আসবে- আশা করেন প্রধানমন্ত্রী।
স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নতুন দেশের জন্য সর্বজনীন শিক্ষাসহ বেশকিছু বলিষ্ঠ এবং দূরদর্শী উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তার ধারাবাহিকতায় ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং সমতাভিত্তিক মানসম্পন্ন শিক্ষা ও জীবনব্যাপী শিখনের লক্ষ্য অর্জনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত।
প্রধানমন্ত্রী প্রাথমিক ও মাধ্যমিক উভয় পর্যায়ে জেন্ডার সমতা অর্জন এবং প্রাথমিক পর্যায়ে প্রায় শতভাগ ভর্তি নিশ্চিতকরণ, দরিদ্র শিক্ষার্থীদের জন্য উপবৃত্তি কর্মসূচি, পিছিয়ে থাকা শিক্ষার্থীদের জন্য অতিরিক্ত সম্পদ বরাদ্দ ইত্যাদি সফলতার কথা তুলে ধরেন।
বক্তব্য রাখেন ইউনেস্কোর মহাপরিচালক ইরিনা বোকোভা প্রমুখ। সভাপতিত্ব করেন ই-নাইন নতুন সভাপতি ও বাংলাদেশের শিক্ষা মন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার।
অনুষ্ঠানে নতুন সভাপতির হাতে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন বিদায়ী সভাপতি বালিঘ উর রহমান।
ই-নাইন এর জন্ম ১৯৯৩ সালে। ভারত, চীন, মেক্সিকো, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, ব্রাজিল, মিশর, ইন্দোনেশিয়া, নাইজেরিয়া এই ৯টি দেশের শিক্ষাকে এগিয়ে নিতে সংস্থাটি কাজ করে যাচ্ছে। বিশ্বের ৫৩ শতাংশ জনসংখ্যা এই ৯টি দেশে বাস করে।
** ঢাকায় ই-নাইন ফোরামের সম্মেলন উদ্বোধন প্রধানমন্ত্রীর
** ‘সন্ত্রাস ও জঙ্গি দমনে দূরদর্শী নীতি প্রয়োজন’
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০১৭
এমইউএম/এটি