জানা যায়, আগামী ৩০ নভেম্বর একাদশ সমাবর্তনে সভাপতিত্ব করবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ। সমাবর্তনে অংশ নেওয়ার জন্য গ্র্যাজুয়েটদের গত ৫ সেপ্টেম্বর থেকে ১৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তিন হাজার ৫৭০টাকা দিয়ে অনলাইনে নিবন্ধন সম্পন্ন করতে হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক এম এ বারী বাংলানিউজকে জানান, ২০১৫ ও ২০১৬ সালে পিএইচডি, এমফিল, স্নাতকোত্তর, এমবিবিএস, বিডিএস ও ডিভিএম ডিগ্রি অর্জনকারীরা গ্র্যাজুয়েটের সংখ্যা ৮ হাজার ৮১৪জন। এর মধ্যে কলা অনুষদে ১ হাজার ৪০২ জন, আইন অনুষদে ১৬১ জন, বিজ্ঞান অনুষদে ৬৮৫ জন, বিজনেজ স্টাডিজ অনুষদে ৭৭৬ জন, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদে ৬২২ জন, জীব ও ভূ-বিজ্ঞান অনুষদে ৬১০ জন, কৃষি অনুষদে ১১৫ জন, প্রকৌশল অনুষদে ২৪৬ জন। এছাড়া চিকিৎসা অনুষদসহ পিএইচডি, এমফিল, স্নাতকোত্তর, এমবিবিএস, বিডিএস ও ডিভিএম ডিগ্রি অর্জন করেছেন মোট ৩ হাজার ৫৯৭ জন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতরের প্রশাসক অধ্যাপক প্রভাষ কুমার কর্মকার বাংলানিউজকে জানান, এবারের সমাবর্তনে তিন হাজার ৪৩৮ জন গ্র্যাজুয়েট নিবন্ধন করেছেন। শিক্ষকরা অনলাইন ও অফলাইনে নিবন্ধন করায় তাদের মোট নিবন্ধন সংখ্যা এখনো হিসাব করা হয়নি।
গ্র্যাজুয়েটদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অতিরিক্ত নিবন্ধন ফি হওয়ার কারণে সমাবর্তনে অংশ নিতে পারছেন না বেশিরভাগ গ্র্যাজুয়েট। তবে ব্যক্তিগত সমস্যা ও নিবন্ধনের সময় কম হওয়ায়ও অনেকে অংশ নিচ্ছেন না।
গ্র্যাজুয়েটরা বলছেন, সমাবর্তনে নিবন্ধনের জন্য স্নাতকোত্তর ক্যাটাগরিতে ৩ হাজার ৫৭০ টাকা ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। যা অযৌক্তিক এবং অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় অনেক বেশি। অংশগ্রহণে ইচ্ছুক অনেক শিক্ষার্থী এখনো বেকার, পরিবার থেকে টাকা নিয়ে চাকরির জন্য লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে তাদের নিবন্ধন ফি, রাজশাহীতে যাওয়া-আসা, থাকা-খাওয়ার খরচ জোগাড় করে কাঙ্ক্ষিত সমাবর্তনে অংশ নেওয়া সম্ভব নয়।
২০১৬ সালে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগে স্নাতকত্তোর পাশ করেছেন সৌরভ জোয়াদ্দার। সমাবর্তনের নিবন্ধন করেননি তিনি। কেন নিবন্ধন করেননি জানতে চাইলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘এখনো চাকরিতে যোগদান করার সুযোগ হয়নি। বাড়ি থেকে টাকা চাইতেও আর ভালো লাগে না। এর মধ্যে সমাবর্তনের নিবন্ধন ফি বেশি হওয়ায় তাতে অংশ নেওয়া সম্ভব হয়নি। নিবন্ধন ফি ২ হাজার টাকা হলে হয়তো নিবন্ধন করতে পারতাম। ’
২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী রোকনুজ্জামান রোকন বাংলানিউজকে বলেন, ‘ব্যস্ততার কারণে সমাবর্তনের নিবন্ধন করতে পারিনি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি এখন নিবন্ধনের সময় বাড়ায়, তাহলে সমাবর্তনে অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবো। ’
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা বাংলানিউজকে বলেন, ‘সমাবর্তনে অংশগ্রহণের অনিচ্ছা প্রকাশের কারণ হিসেবে আমি মনে করি তাদের বেকারত্ব। এর আগেরবার কয়েক বছর পর সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হওয়ায় অনেক গ্র্যাজুয়েট নিবন্ধন করেছিল। কিন্তু এবার ২০১৫ থেকে ১৬ সালের গ্র্যাজুয়েটদের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। যাদের অধিকাংশই হয়তো এখনো চাকরি পায়নি। ’
নিবন্ধন ফি’র বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এবার নিবন্ধন ফি আরও বাড়ানোর কথা ছিল। পরবর্তীতে উপাচার্যকে না বাড়ানোর করার প্রস্তাব দিলে তিনি তা গ্রহণ করেন। এজন্য পূর্বের সমাবর্তনের ন্যায় নিবন্ধন ফি অপরিবর্তিত রয়েছে। ’
বাংলাদেশ সময়: ০৭৪৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৯
এইচএমএস/এসএ