দীর্ঘদিন ধরে জেলা শহরের বালাঘাটায় অবস্থিত সরকারি মহিলা কলেজে গেস্ট লেকচারার হিসেবে শিক্ষার্থীদের বাংলা বিষয়ে পড়াচ্ছেন ওই কলেজের অনার্স চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ইসরাত আরফান। অনার্স মাস্টার্স শেষ না করে এইচএসসি পাস খণ্ডকালীন শিক্ষক দিয়ে সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীদের পাঠদান করানোয় মহিলা কলেজের পড়াশোনার মান নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কলেজে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের অভিবাবকরা।
জানা যায়, বান্দরবান সরকারি মহিলা কলেজের খণ্ডকালীন শিক্ষক ইসরাত আরফান বান্দরবান সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের একজন নিয়মিত শিক্ষার্থী। সম্প্রতি থার্ড ইয়ার শেষ করে ফোর্থ ইয়ারে উঠেছেন তিনি। অনার্স থার্ড ইয়ারে থাকা অবস্থায় তিনি মহিলা কলেজের গেস্ট লেকচারার হিসেবে যোগদান করেন। নূন্যতম অনার্স পাস ছাড়া সরকারি কলেজে খণ্ডকালীন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীদের অভিবাবকরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন অভিবাবক বাংলানিউজকে বলেন, এমনিতেই মহিলা কলেজের পাসের হার কম তার উপর এইচএসসি পাস করা শিক্ষক দিয়ে মেয়েদের পড়ালে তাদের পাসের হার আরও কমে যাবে। অনার্স মাস্টার্স পাস করে অভিজ্ঞতার কারণে অনেকে চাকরি পায়না। সেখানে অনার্স চতুর্থ বর্ষের একজন ছাত্রীকে কলেজের গেস্ট লেকচারার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এতে কলেজের পড়াশোনার মান আরও কমে যাবে।
এ বিষয়ে মহিলা কলেজ শিক্ষক পর্ষদের সভাপতি ইতিহাস বিভাগের প্রভাষক বখতিয়ার উদ্দীন বাংলানিউজকে বলেন, গেস্ট লেকচারার হিসেবে তাকে লিখিতভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার কোনো এখতিয়ার কলেজের নেই। সামান্য সম্মানীর বিনিময়ে তিনি শিক্ষার্থীদের বাংলা বিষয়ে পাঠদান করেন। যেকোনো সময় চাইলে কলেজ কর্তৃপক্ষ তার ক্লাস নেওয়া বন্ধ করে দিতে পারে। আর কোনো শিক্ষক না পাওয়ায় তাকে দিয়ে বাংলা ক্লাসগুলো নেওয়া হচ্ছে যাতে মেয়েদের পড়া বন্ধ না হয়।
এদিকে অনার্স মাস্টার্স শেষ না করে এইচএসসি পাসে কেউ সরকারি কলেজে ক্লাস নিতে পারে কি না জানতে চাইলে ওই কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম বাংলানিউজকে বলেন, এটা প্রশ্নই আসে না, খণ্ডকালীন শিক্ষক বা এমনি শিক্ষক যেই হোক না কেন কলেজে ক্লাস নিতে হলে যে বিষয়ে ক্লাস নেবে সে বিষয়ে সর্ব্বোচ্চ ডিগ্রি থাকতে হবে।
বান্দরবান সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রদীপ বড়ুয়া বাংলানিউজকে বলেন, বাংলা বিষয়ের কোনো শিক্ষক না থাকায় ইসরাত আরফান বাংলা বিষয়ের ক্লাসগুলো নেন। ওনাকে লিখিতভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। খণ্ডকালীন শিক্ষকদের দেওয়ার মতো টাকাও আমাদের কলেজে নেই। ওনার স্বামী বাউবির বাংলা বিষয়ে ক্লাস নেন। আমাদের কলেজে উনিও বাংলা বিষয়ের ছাত্রী হওয়ায় সুবাদে আমাদের কলেজের মেয়েদের বাংলা বিষয়টা তিনি দেখেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৪, ২০১৯
এনটি