শিক্ষার্থীদের জন্য সহজভাবে অনলাইনে কোর্স রেজিস্ট্রেশন এবং যেসব ক্ষেত্রে থিসিস জমা হয়েছে, সেসব ক্ষেত্রে অনলাইন ডিফেন্স গ্রহণের বিষয় নিয়েও চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। করোনা পরিস্থিতিতে অনলাইন একাডেমিক কার্যক্রম চালু করতে বিদ্যমান একাডেমিক অর্ডিনেন্সে কোনো পরিবর্তন, পরিমার্জন, সংশোধন বা সংযোজনের প্রয়োজন হলে তা একাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি সভা আহ্বান করে সেখানে উপস্থাপন করা হবে।
একাডেমিক ও প্রশাসনিক সংক্রান্ত এমন আরও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক প্রধানরা একমত হয়ে বর্তমান করোনা মহামারি পরিস্থিতে একাডেমিক কার্যক্রম অনেকটা সচল রেখে শিক্ষায় ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া এবং শিক্ষার্থীদের জীবনের মূল্যবান সময় কাজে লাগানোর জন্য তাদের অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমে উৎসাহিত করার এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে আগ্রহী শিক্ষকদের বিনা সুদে ল্যাপটপ ক্রয়ে ঋণ সুবিধা ঘোষণার জন্য উপাচার্যকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। অনলাইনে একাডেমিক কার্যক্রম চালু করতে উদ্ভূত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় শিক্ষকরা প্রস্তুত বলেও সভায় প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়। সভায় অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালু করতে শিক্ষকদের জন্য স্বল্পমেয়াদী প্রশিক্ষণের বিষয়টিও গুরুত্ব পায়।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামানের সভাপতিত্বে বুধবার (১ জুলাই) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় প্রধানদের সঙ্গে প্রায় দু’ঘণ্টাব্যাপী ভিডিও কনফারেন্সে বর্তমান করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে একাডেমিক কার্যক্রমের পরিপূরক হিসেবে ভার্চ্যুয়াল ক্লাস চালুর লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সক্ষমতা ও বিভিন্ন সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
উপাচার্য সভার শুরুতে করোনা মহামারিতে এবং এসময়ের মধ্যে যারা মৃত্যুবরণ করেছেন বিশেষ করে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মো. আব্দুল্লাহ, সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হকের স্ত্রী, জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়ার স্ত্রী, জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, প্রবীণ সাংবাদিক কামাল লোহানীসহ সবার এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য প্রফেসর ড. এম আবদুল কাদির ভূঁইয়া, সিন্ডিকেটের প্রাক্তন সদস্য প্রফেসর মুহম্মদ কায়কোবাদ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউআরপি ডিসিপ্লিনের শিক্ষক প্রফেসর ড. শামীম মাহবুবুল হকের ইন্তেকালে গভীর শোক প্রকাশ করে তাদের রূহের মাগফিরাত কামনা করেন যা সভায় শোক প্রস্তাব হিসেবে গৃহীত হয়।
উপাচার্য বলেন, ‘বর্তমান করোনা ভাইরাস মহামারি পরিস্থিতিতে শিক্ষাখাত স্থবির হয়ে পড়েছে। শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা মানসিকভাবেও উৎকণ্ঠায় রয়েছে। সরকার এবং ইউজিসি উদ্ভূত সমস্যা সমাধানে নানাভাবে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। শিগগিরই কিছু নির্দেশনা পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে স্ব-প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগ এখানে সবিশেষ গুরুত্ব রাখে। সে বিবেচনায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইনে ক্লাস চালুর ব্যাপারে ইতোমধ্যে গত দুই মাস ধরে বিভিন্ন জরিপ ও সুবিধা অসুবিধা নিরূপণের চেষ্টা করা হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের ইন্টারনেট, বিদ্যুৎ সুবিধার বিষয়ে প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহের কাজ প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। এসব বিষয়ে দুইটি কমিটি কাজ করছে এবং তাদের কাছ থেকেও বেশ কিছু তথ্য আসছে, সুপারিশও পাওয়া যাবে। আমরা শিক্ষার্থীদের সুবিধা-অসুবিধাকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়ে তা সমাধানের চেষ্টা করছি। একইসঙ্গে তারা যাতে অনলাইনে হলেও শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারে সেটাই আমাদের এখন মুখ্য চিন্তা। শিক্ষার্থীদের অনলাইন ক্লাসে অংশগ্রহণে উৎসাহিত করতে সার্বিক সুবিধার দিক নিয়েও কাজ চলছে। ’
ভিডিও কনফারেন্সে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর সাধন রঞ্জন ঘোষ, বিভিন্ন স্কুলের ডিন, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত), ডিসিপ্লিন প্রধান, ছাত্রবিষয়ক পরিচালক, প্রভোস্ট, সিইটিএলের পরিচালক, আইকিউএসির পরিচালক, আইসিটিসেলের পরিচালক, শিক্ষক সমিতির সভাপতি, জনসংযোগ ও প্রকাশনা বিভাগের পরিচালকসহ (ভারপ্রাপ্ত) সংশ্লিষ্ট মোট ৪০ জনের বেশি সংযুক্ত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩১ ঘণ্টা, জুলাই ০১, ২০২০
এমআরএম/এফএম
