স্বতন্ত্র শৃঙ্খলা বিধি প্রসঙ্গে ইসি কর্মকর্তারা জানান, নির্বাচন কমিশনের নিয়োগ, পদোন্নতি, বদলি কমিশনের আইন দ্বারা পরিচালিত হলেও এর শৃঙ্খলা নিশ্চিত করা হয় সরকারি কর্মচারি (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা অনুযায়ী। কিন্তু কমিশন যেহেতু স্বাধীন একটি সংস্থা এবং নির্দিষ্ট আইন দ্বারা পরিচালিত, সে ক্ষেত্রে এর শৃঙ্খলার জন্যও পৃথক বিধিমালা তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
ইতোমধ্যেই এ বিধিমালা প্রণয়নের জন্য ৯ সদ্যসের একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছে ইসি। প্রশাসন ও অর্থ শাখার যুগ্ম সচিবকে আহ্বায়ক এবং শৃঙ্খলা ও আপিল শাখার উপ-সচিবকে সদস্য সচিব করে গঠিত কমিটিতে জাতীয় পরিচয় (এনআইডি) নিবন্ধন শাখার পরিচালক, নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার যুগ্ম সচিব, সিস্টেম ম্যানেজার, আইন শাখার উপ-সচিব, জনবল শাখার উপ-সচিব, সংস্থাপন শাখার উপ-সচিব ও সংস্থাপন শাখার সিনিয়র সহকারী সচিবকে রাখা হয়েছে।
এ কমিটিকে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য স্বতন্ত্র শৃঙ্খলা বিধি প্রণয়নের বিষয়ে যথোপযুক্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষাপূর্বক একটি খসড়া প্রস্তুত করে ইসি সচিব মো. আলমগীরের কাছে দাখিল করতে বলা হয়েছে। তবে এ জন্য কোনো সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়নি।
এ বিষয়ে ইসির সংস্থাপন শাখা-১-এর সিনিয়র সহকারী সচিব মুহাম্মদ আমিনুর রহমান মিঞা বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের নিজস্ব কোনো শৃঙ্খলা বিধি নেই। এতোদিন ধরে সরকারি কর্মচারী শৃঙ্খলা বিধি অনুযায়ীই সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ অবস্থা কাটাতেই নিজেদের শৃঙ্খলা বিধি প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে এটি এখনও খুব প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে।
সূত্র জানায়, এ সংক্রান্ত কমিটি প্রথমে একটি খসড়া তৈরি করবে। এরপর এটি আরও যাচাই-বাছাই হবে। পরবর্তী সময়ে তা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে যাবে।
সরকারি কর্মচারী শৃঙ্খলা ও আপিল বিধি অনুযায়ী, লঘু ও গুরু দু ধরনের শাস্তির বিধান করা হয়। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার আদেশ অমান্য, কর্তব্যে অবহেলা, সরকারের আদেশের অবজ্ঞা, সহকর্মীর বিরুদ্ধে তুচ্ছ/অহেতুক অভিযোগ আনাজনিত অসদাচরণ, দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকা, কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতীত কর্মস্থলে অনুপস্থিত ও নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত বা সম্পৃক্ত ব্যক্তির সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে শৃঙ্খলা বিধিতে শাস্তি নিশ্চিত করা হয়।
এ বিধিমালায় লঘুদণ্ডের ক্ষেত্রে-তিরস্কার করা, বেতন বৃদ্ধি বা পদোন্নতি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য স্থগিত রাখা, সরকারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া ও নিম্ন গ্রেডে অবনমিত করার বিধান রয়েছে। অন্যদিকে গুরুদণ্ডের মধ্যে নিম্ন পদ বা নিম্ন বেতন গ্রেডে অবনমিতকরণ, বাধ্যতামূলক অবসর, চাকরি থেকে অপসারণ ও বরখাস্ত করার বিধান রয়েছে।
অতীতে ইসি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অনুযায়ী লঘুদণ্ড দেওয়ার নজির রয়েছে। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দণ্ড হিসেবে দেওয়া হয়েছে ‘তিরস্কার’।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৩ ঘণ্টা, জুন ২৫, ২০২০
ইইউডি/এইচজে