গাড়ি চলছে। ফাঁকা রাস্তায় হৈ হৈ করে বাড়ছে গতিবেগ।
অথচ মোটেই এমন ছিলেন না ঈশিকা। আগের তিনি বেশ শক্ত মনের বাস্তববাদী মেয়ে। বাবা মারা যাওয়ার পর বড্ড আদুরে হয়ে গেছেন। সারাক্ষণ আদর পেতে ইচ্ছে করে; ভালো ব্যবহার, যত্ন-আত্তি, মাথার ওপর আস্থার একটা হাত- খুব করে চান তিনি। বাইরে উদাসী চোখ রেখেই বললেন, ‘মাথার ওপর থেকে ছায়া সরে গেছে তো। খুব কান্না পায়। বাবাই ছিলেন আমার অনেক কিছু। ’
টিভি নাটকে ঈশিকা খান এখন নিয়মিত মুখ। শিহাব শাহিনের ‘ভালোবাসার চতুষ্কোণ’, রুবায়েত মাহমুদ পরিচালিত ‘সাইন আপ’সহ চারটি ধারাবাহিকে অভিনয় করছেন। আছে এককের ব্যস্ততাও। আরটিভির সঙ্গীত বিষয়ক অনুষ্ঠান ‘মিউজিক স্টেশন’ উপস্থাপনা করছেন। বেশ ব্যস্ত তিনি।
ঈশিকা শোনালেন প্রথম দিন ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানোর গল্প। এ ঘটনা মনে পড়লে এখন প্রচুর হাসি পায় তার। বছর দু’য়েক আগের কথা। ইমরাউল রাফাতের একটি নাটকে অভিনয় করবেন। সেটে গেলেন। আগের রাত থেকেই বুক ধুকধুক উত্তেজনা। সেটে গিয়ে ভয় আরও তীব্র হয়েছে। কাঁচুমাচু করে ক্যামেরার সামনে দাঁড়ালেন ঠিকই। কিন্তু কী যন্ত্রণা! সংলাপই বের হচ্ছে না মুখ দিয়ে! ঘণ্টা দুয়েক চেষ্টা করেও ঈশিকার কাছ থেকে অভিনয় বের করতে পুরোপুরি ব্যর্থ পরিচালক। হাসতে হাসতে বললেন, ‘শেষ পর্যন্ত আমি বাদই পড়েছিলাম। তবে ভালো লাগে, এখন তারাই আমার অভিনয়ের প্রশংসা করেন। তাদের নাটকে অভিনয়ের প্রস্তাব দেন। ’
২০১২ সালের সেপ্টেম্বর ঈশিকার জন্য খুবই স্মরণীয়। ওই মাসে শহীদ-উন-নবীর ‘প্রেমবাজ’ নাটকে অভিনয় করেছিলেন। এটাই টিভিতে প্রচারিত তার প্রথম নাটক। অর্থাৎ গুণে গুণে দু’বছর! ঈশিকার অভিনয় ক্যারিয়ার এখনও শৈশবে।
গাড়ি চলছে। রাস্তার দু’পাশের শহুরে পরিবেশ বদলে যাচ্ছে ক্রমে। সেখানে এখন বিস্তীর্ণ ফাঁকা মাঠ, ধানক্ষেত; ওপাশে নুয়ে পড়েছে খোলা আকাশ। মুহূর্তেই ভালো হয়ে গেলো ঈশিকার মন। আর একটু পরেই গাড়ি তাকে পৌঁছে দেবে গন্তব্যে। শেষ হয়ে যাবে যাত্রা। কিন্তু অভিনয়ের যে যাত্রা তিনি শুরু করেছেন, সেটি শেষ হবে না। চলবে, চলতেই থাকবে।
বাংলাদেশ সময় : ২১০০ ঘন্টা, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৪