সকালে ট্রেন ধরার তাড়ায় খাওয়ার জন্য সঙ্গে কিছুই নেওয়া হয়নি কারোই, এমনকি পানিও। জানালা গলিয়ে সকালের নির্মল বাতাস কখন যেনো চোখ বুজে দিলো।
হঠাৎ কানে আওয়াজ এলো, ‘লুচির সঙ্গে ভাজি ফ্রি’। বাঙালির কাছে সবচেয়ে আকৃষ্ট করা ‘ফ্রি’ শব্দটির বিষয় বুঝতে ও ক্ষুধা নিবৃত করতে ট্রেন থেকে নেমে পড়া। এরইমধ্যে দলের আরেকজনও ওই শব্দে আকৃষ্ট হয় নেমে পড়লেন।
আব্দুলপুর স্টেশনে যাত্রীদের জন্য দোকানদাররা সকালের নাস্তার যে আয়োজন রেখেছেন তারমধ্যে লুচি একটি। দোকানগুলোর সামনেই সাজিয়ে রাখা হচ্ছে গরম গরম লুচি। কখনো কখনো যাত্রীর সামনেই ভেজে দেওয়া হয় লুচি। আর ১০ টাকায় দুই লুচির সঙ্গে ফ্রি হিসেবে যে ভাজি দেওয়া হচ্ছে তা হলো ঘরের কারো হাতে পরম যত্নে চিকন করে কাটা আলু, সঙ্গে দেওয়া কাঁচামরিচের ফালি।
তিতুমীর এক্সপ্রেস আব্দুলপুর স্টেশনে ২০ মিনিটের মতো বিরতি দেয়। এ সুযোগে স্টেশনেই অধিকাংশ যাত্রী সকালের নাস্তা সেরে নেন। মূলত তিতুমীর ও চিলাহাটি থেকে রাজশাহী গন্তব্যের বরেন্দ্র এক্সপ্রেস যাত্রীদের ঘিরে আব্দুলপুর স্টেশনের এ লুচির দোকানদারদের ব্যবসা।
সব দোকানে একই অফার থাকলেও বয়সে খানিকটা তরুণ মামুনের দোকান থেকে লুফে নেওয়া হলো ফ্রি অফার। ভাজি ফ্রি দেওয়ার কোনো কারণ জানাতে পারলেন না মামুন। তবে বোঝা গেলো ক্রেতা টানতে এটি তাদের ব্যবসার একটি কৌশল।
প্রায় এক যুগ ধরে স্টেশনে এ ব্যবসা করছেন মামুন। বিক্রি ভালোই। দিনে ৪ থেকে ৫শ’ টাকা বিক্রি হয়। সকাল সাড়ে ৭টায় তিতুমীর ও বেলা সাড়ে ১১টায় বরেন্দ্র এক্সপ্রেসের যাত্রীরা এ ফ্রি অফারের সুবিধা পান। কারণ ট্রেন দু’টি এ স্টেশনে ইঞ্জিন ঘোরানোর জন্য কিছুটা সময় বিরতি নেয়। যাওয়া ও ফেরার পথে দিনে মোট চারবার ট্রেন দু’টি এ স্টেশনের যাত্রীদের জন্য ‘লুচির সঙ্গে ভাজি ফ্রি’র ব্যবস্থা রাখে।
তবে রোববার সাপ্তাহিক বন্ধ থাকায় মামুনের মনটা খানিক বেজার দেখা গেলো। কারণ এতে আজ তার ব্যবসা অর্ধেক হবে। আব্দুলপুর স্টেশনে মামুনের দোকানের মতো এ রকম আরো ১০-১২টি দোকান রয়েছে। যারা সবাই লুচির সঙ্গে ভাজি ফ্রি দিচ্ছেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৫৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০১৭
জেডএস