হঠাৎ চোখ আটকালো পেটমোটা একটি পাত্রে এক কারিগরের চামচ দিয়ে দুধ নাড়ানোর দৃশ্য দেখে। হয়তো মিষ্টি বানানোর জন্য এ ‘কসরত’ ভেবে চোখ সরাতেই দোকানের কাঁচের ভেতরে সাদা রঙা গোলাকৃতির একটি খাবার মনোযোগ কাড়লো।
৪৭ বছর বয়সী আবুল হোসেন জানান, ২৫-২৬ বছর ধরে তিনি এ ছানার সন্দেশ তৈরি করছেন। প্রতিদিন গড়ে সাড়ে তিন থেকে চার কেজি সন্দেশ তৈরি করেন। যা প্রতিদিনেই ক্রেতার চাহিদা পূরণ করছে।
ছানার সন্দেশ তৈরির প্রক্রিয়ার বিষয়ে তিনি জানান, দুধ গরম করার পর তা চামচ দিয়ে নেড়ে তাপমাত্রা সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসা হয়। আর সহনীয়তার মাত্রাটা পাত্রে আঙুল দিয়ে কারিগরই পরখ করে নেন। আরেকপাত্রে পানি ও ফিটকিরির মাধ্যমে তৈরি করা মিশ্রণ দুধের সঙ্গে মিশিয়ে ছানা তৈরি করা হয়। এরপর দুধের সঙ্গে সমপরিমাণ চিনি মিশিয়ে হাতের ছোঁয়ায় তৈরি হয় ‘রসালো’ ছানার সন্দেশ।
সন্দেশের মূল উপকরণ দুধ স্থানীয় বাজার থেকেই সংগ্রহ করা হয়, ৪০ টাকা কেজি দরে। প্রতিদিন ১৬ থেকে ১৭ লিটার দুধ কেনা হয় সন্দেশ তৈরির জন্য, যা থেকে পাওয়া যায় সাড়ে থেকে চার কেজি সন্দেশ। প্রতিকেজি ছানার সন্দেশ বিক্রি করা হয় তিনশ’ টাকায়। তবে খুচরাভাবে পিস হিসেবেও বিক্রির ব্যবস্থা রয়েছে।
এক সময় প্রতিপিস সন্দেশ ২ টাকা বিক্রি করা হতো। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চাহিদার সঙ্গে বেড়েছে দুধসহ প্রয়োজনীয় উপকরণের দাম। বর্তমানে প্রতিপিস সন্দেশ বিক্রি করা হচ্ছে ৫ টাকায়।
এরইমধ্যে চালকের হুইসেল, গাড়িতে চেপে বসার তাগিদ দিচ্ছেন তিনি। গল্পের ফাঁকে ৫ টাকায় এক পিস সন্দেশ কিনে গাড়ির দিকে ছুট! আসনে বসে সাদা সন্দেশ মুখে দিতেই নিমিষেই মিলিয়ে গেলো; যে কথা কারিগর আগেই বলেছিলেন, একবার খেয়েই দেখুন না!
বাংলাদেশ সময়: ০৩২৯ ঘণ্টা, আগস্ট ১৫, ২০১৭
জেডএস/এইচএ/