মাগুরা থেকে আশা সুমন দাস নামে এক দর্শনার্থী বলেন, সংগ্রহশালা হলেও ভিতরে কিছুই নেই। কবির পুরনো ঘরেই সব কিছু রাখা হয়েছে, সেই আগের মতোই।
সংগ্রহশালায় প্রশাসনিক ভবন, মিউজিয়াম, লাইব্রেরিসহ রির্চাজ সেন্টার, ডরমেটরি ও উন্মুক্ত মঞ্চ থাকার কথা ছিল। ভবন নির্মাণ হয়েছে। এর সবই রয়েছে। কিন্তু ভেতরে কোন সংগ্রহ নেই। দীর্ঘদিন এভাবে পড়ে থাকায় আগামী দিনেও ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে সংগ্রহশালাটি।
মো. নয়ন মিয়া নামে এক দর্শনার্থী বলেন, সরকার ভাল উদ্যোগ নিয়ে কোটি টাকার ভবন করলো। কিন্তু পরিপূর্ণভাবে চালু না করায় তার কোন মূল্যায়নই হচ্ছে না।
স্থানীয় বাসিন্দা আবু বক্কর জানান, কোটি কোটি টাকা খরচ করে বিল্ডিং বানিয়ে রেখেছে, তা কোনো কাজে আসছে না। যদি এর ভিতের সুযোগ সুবিধাই চালু না হয় তবে মানুষ আসবে কেনো?
তবে কবির পারিবারিক সমস্যার জন্যও নাকি সংগ্রহশালা চালু করা যাচ্ছে না বলে দাবি করেন তিনি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরেক স্থানীয় জানান, কবির ছেলে জামাল আনোয়ার চান না তার বাবার স্মৃতিচিহ্ন সংগ্রহশালায় যাক। যে কারণেই নাকি এই অবস্থা।
তবে সমস্যা যাই থাক, ফরিদপুরবাসীসহ কবি ভক্তদের দাবি, যত দ্রুত সম্ভব কবির স্মৃতিচিহ্নগুলো জাদুঘরে নিয়ে এসে চালু করতে হবে। মিউজিয়ামটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার পাশাপশি দূর দূরান্ত থেকে আসা ভক্ত ও দর্শনার্থীদের বিশ্রামের ব্যবস্থা হলেই কবির বাড়ি জেলার অন্যতম দর্শনীয় স্থানে রূপ নেবে।
ঢেকে ফেলা হয়েছে ভিত্তিপ্রস্তর ফলক!
২০১১ সালে বর্তমান সরকারের উদ্যোগে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের অর্থায়নে এবং গণপূর্ত অধিদপ্তরের অধীনে ৪ একর জমিতে ১১ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে সংগ্রহশালা নির্মাণ কাজ শুরু হয়।
২০১১ সালের ২১ জানুয়ারি এক উৎসবমুখর অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে তৎকালীন তথ্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ, শ্রম ও কর্মসংস্থান (বর্তমান এলজিআরডি) মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন এমপি, কবি জামাতা প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহি চৌধুরী এই কাজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন।
সেসময় সেখানে সংস্কৃতি বিষয়ক সচিব সুরাইয়া বেগম ও বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক প্রকাশ চন্দ্র দাস, জসিম ফাউন্ডেশন সভাপতি ও ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক হেলালুদ্দীন আহমদ, কবি পুত্র জামাল আনোয়ারসহ আরো অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
দু:খজনক হলেও সত্য, কবি পরিবারেরই কে বা কারা সেই ভিত্তিপ্রস্তর ফলকটি কবির পারিবারিক পরিচিতির একটি ব্যানার দিয়ে ঢেকে দিয়েছেন।
ঢাকা থেকে এটুআই প্রোগামের এক প্রশিক্ষক ফরিদপুরে কাজে এসে জসিম উদ্দীনের বাড়ি দেখতে আসেন। বিষয়টি দেখে ওই কর্মকর্তা ওলিউর রহমান দু:খ প্রকাশ করে বলেন, এতোজন গুণি মানুষের উদ্বোধন করা ফলকটি এভাবে ঢেকে দেওয়া অসম্মানজনক। আশা করি যথাযথ কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৭, ২০১৭
জেডএম/