ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ফিচার

নাট্যকর্মী নিশাতকে স্মরণ, আবৃত্তি কল্যাণ ট্রাস্ট ঘোষণা

ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৫৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০২০
নাট্যকর্মী নিশাতকে স্মরণ, আবৃত্তি কল্যাণ ট্রাস্ট ঘোষণা

ঢাকা: সদ্য প্রয়াত নাট্যকর্মী ইশরাত নিশাতকে স্মরণ করলেন তার প্রিয় মানুষেরা। কেউ নিশাতকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করলেন, কেউ তার উদ্দেশ্যে  আবৃত্তি করলেন কবিতা। একইসঙ্গে আবৃত্তি শিল্পীদের কল্যাণে ঘোষণা করা হলো আবৃত্তি কল্যাণ ট্রাস্ট।

শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে এই আয়োজন করে বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদ। এই আয়োজন থেকে আবৃত্তি কল্যাণ ট্রাস্টের ঘোষণা করা হয়।

এ সময় ট্রাস্ট থেকে অসুস্থ দুই আবৃত্তি শিল্পীর জন্য অনুদানও প্রদান করা হয়।

সন্ধ্যার এ আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সভাপতি ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আসাদুজ্জামান নূর, নাট্যজন নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু, অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফা, প্রজ্ঞা লাবনী, আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও আবৃত্তি শিল্পী আহকাম উল্লাহ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক ও আবৃত্তিশিল্পী হাসান আরিফ, বিশিষ্ট আবৃত্তি শিল্পী শিমুল মোস্তফা, শিমুল ইউসুফ প্রমুখ।

আয়োজনে আসাদুজ্জামান নূর বলেন, আমার সঙ্গে নিশাতের পিতা ও কন্যার মতো সম্পর্ক ছিল। নিশাতের সঙ্গে প্রথম যখন দেখা হয়েছিল তখন তার বয়স মাত্র চার বছর। ১৯৭১ সালে আমাদের পরিবার সীমান্ত অতিক্রম করার কয়েকদিন পর নিশাতের পরিবার সীমান্ত অতিক্রম করে, তখন দেখা। এরপর আবার অনেক বছর পর নিশাতের সঙ্গে দেখা হলো। ততদিনে নিশাত নাটকের সঙ্গে যুক্ত হতে শুরু করেছে। পরে সে এতই নাটকের সঙ্গে জড়িয়ে পড়লো, তার জীবনে নাটক ছাড়া আর কিছুই রইল না।

তিনি বলেন, নিশাত ও নাটক দু’টিকে আলাদা করা যেত না। নিশাত সব সময় নিজের জগতে বসবাস করতো, সেটা ছিল দ্রোহের জগত, প্রতিবাদের জগত। তবে নিশাত আজকে নেই, এটা যেমন সত্য, নিশাত আছে, এটাও সমান ভাবে সত্য।

নাসির উদ্দিন ইউসুফ বলেন, নাট্যজন নিশাত মানুষকে ভালোবাসতে জানতো। সে নাটক ও জীবনকে একীভূত করেছিল। সে ছিল আমার কন্যার মতো নয়, সে আমার কন্যা। ওর মা-ও মারা গিয়েছিল এমন গভীর রাতে। ওকে আগলে রাখতে চেষ্টা করেছি, কিন্তু এমন উচ্ছল প্রাণের মানুষকে কি আর আগলে রাখা যায়! আপনারা সকলে মঞ্চের মানুষ হারিয়েছেন, আমি ঘরের মানুষ এবং মঞ্চের মানুষ, দু’জনকেই হারিয়েছি।

আবৃত্তি শিল্পী শিমুল মোস্তফা বলেন, নিশাত আমার একেবারে স্কুল জীবনের বন্ধু। নিশাত আর আমি সমবয়সী। কিন্তু সেই ছোট বেলা থেকে নিশাত আমার বড় ছিল। সে আমাকে তুই করে বলতো, আমি বলতাম আপনি করে।

তিনি বলেন, নিশাত ছিল খুব আবেগী আর নরম মনের মানুষ। নিশাত মায়া দিতে জানতো, মায়া নিতে জানতো। নিশাত নাটকের জন্য কি করছে, কবিতার জন্য কি করেছে জানার দরকার নেই, তা আসলে জানিয়ে বোঝানো যায় না। নিশাতের মতো মানুষ হয় না, আমরা কি হারিয়েছি আমরা জানি।

এর আগে গত ১৯ জানুয়ারি নাট্যজন ইশরাত নিশাত হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তিনি প্রয়াত অভিনেত্রী নাজমা আনোয়ারের কন্যা। ইশরাত নিশাত ‘দেশ নাটক’ নাট্যদলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। মঞ্চে একাধারে অভিনেত্রী, নির্দেশক ও আবৃত্তিশিল্পী হিসেবে খ্যাতি ছিল তার।

বাংলাদেশ সময়: ০৫৫৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০২০
এইচএমএস/জেআইএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।