ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

রাজধানীতে বাড়ছে প্রযুক্তি পণ্যের বেচাকেনা

শাওন সোলায়মান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৫৯ ঘণ্টা, মে ১৬, ২০২০
রাজধানীতে বাড়ছে প্রযুক্তি পণ্যের বেচাকেনা ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান ছাড়া সব বিপণিবিতান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। ঈদের আগে বিপণিবিতানগুলোর কার্যক্রম আবারও চালুর সুযোগ দেওয়া হয়। এরইমধ্যে দেশের প্রযুক্তি পণ্যের বাজারে ক্রেতাদের সমাগম ও বেচাকেনা বাড়ছে।

১০ মে থেকে ফের কার্যক্রম শুরু করেছে রাজধানীর প্রযুক্তি পণ্য বিক্রির বড় দুই বাজার এলিফ্যান্ট রোডের মাল্টিপ্ল্যান কম্পিউটার সিটি সেন্টার এবং আগারগাঁও এর বিসিএস কম্পিউটার সিটি। প্রতিদিনই এসব শপিং সেন্টারে আসা ক্রেতার সংখ্যা এবং প্রযুক্তি পণ্যের বেচাকেনা বাড়ছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

বিসিএস কম্পিউটার সিটির ইউনিভার্সাল কম্পিউটার শপের ব্যবস্থাপক আব্দুল করিম বলেন, ‘প্রথম দিন তেমন গ্রাহক ছিল না। তবে দিনদিন গ্রাহক বাড়ছে। স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বেচাকেনা অনেক কম। কিন্তু দিনের সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে সেটি একটি ভালো দিক। ঈদ আসতে আসতে হয়তো আরও বাড়বে। ’

কী ধরনের গ্রাহক বেশি আসছেন এবং তারা কী ধরনের পণ্য কিনছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ক্রেতাদের বেশিরভাগই তরুণ। অনেকে আছেন বিভিন্ন অফিসের করপোরেট ক্লায়েন্ট। গ্রাহকরা মোটামুটি সব ধরনের পণ্যই কিনছেন যেমন পুরো ডেস্কটপ সেটআপ বা ল্যাপটপ। তবে বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রাংশই বেশি বিক্রি হচ্ছে; যেমন মাউস, কিবোর্ড, র‍্যাম, রাউটার, গ্রাফিক্স কার্ড ইত্যাদি। ’

মিরপুর থেকে আগারগাঁওয়ে প্রযুক্তি পণ্য কিনতে আসা ইমরান উদ্দিন বলেন, ‘কিছুদিন আগে কিবোর্ড নষ্ট হয়ে যায়। এরথেকে বাসার কম্পিউটার ব্যবহার করতে পারছি না। মার্কেট খোলার অপেক্ষায় ছিলাম। আজ কিনতে এলাম। ’

এদিকে শপিং সেন্টার চালু হওয়ার প্রথম দিনই মাল্টিপ্ল্যান কম্পিউটার সিটি সেন্টারে গ্রাহকদের উপচে পড়া ভিড় ছিল বলে জানান ঢাকা মহানগর দোকান মালিক সমিতি এবং মাল্টিপ্ল্যান কম্পিউটার সিটি সেন্টারের সভাপতি তৌফিক এহেসান।

বাংলানিউজকে তিনি বলেন, ‘প্রথম দিনই গ্রাহকদের উপচে পড়া ভিড় ছিল। আমাদের নিজস্ব নিরাপত্তা কর্মী এবং আনসার বাহিনীকেও ভিড় সামলাতে হিমশিম খেতে হয়। আসলে তথ্য প্রযুক্তির বিভিন্ন যন্ত্রপাতির মেরামত বা পুরনো ডিভাইস নষ্ট হলে নতুন প্রয়োজন হয়। এমনও সামান্য কিছু যন্ত্রাংশ আছে, যার জন্য পুরো সিস্টেম ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে যেতে পারে। যেমন ডেস্কটপ কম্পিউটারের সামান্য একটি মাউস বা কিবোর্ড নষ্ট হলেই আর সেটি ব্যবহার করা যায় না। এদিকে ঈদের পর বন্ধ হলে আবার কবে মার্কেট খুলবে তার নিশ্চয়তা নেই। তাই সব মিলিয়ে এখন মার্কেট খোলা থাকায় গ্রাহকদের একটা চাপ আছে। আবার বিভিন্ন সময়ের অভিজ্ঞতা থেকে আমরা দেখেছি, ঈদের সময় অনেকেই ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ বা একটু উচ্চমূল্যের ডিভাইস কেনেন। বিশেষ করে কিশোর ও তরুণ ক্রেতারা। ’

গ্রাহকদের ভিড় থাকলেও শপিং সেন্টারে পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে বলেও দাবি করেন এ ব্যবসায়ী নেতা। তৌফিক এহেসান বলেন, ‘মার্কেটে ঢুকতেই জীবাণুনাশক বুথের ভেতর হয়ে যেতে হবে। এরপর দোকানেও শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। আমরা জায়গা নির্ধারণ করে দিয়েছি। যে দোকানে ১০ জন গ্রাহক প্রবেশ করতে পারে, সেখানে ৫ জন প্রবেশ করতে দিচ্ছি। আবার যেখানে ১০ জন সেলসম্যান একসঙ্গে কাজ করতে পারে, সেখানে ৫ জন সেলসম্যানের কাজ করতে হচ্ছে। ’

এদিকে প্রযুক্তি পণ্যের কেনাবেচাকে বেশ ইতিবাচকভাবে দেখছে বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির সভাপতি শাহিদ উল মুনির। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, ‘এখন যেসব কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে তার বেশিরভাগই তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর। তাই এ খাত ইতোমধ্যে জরুরি সেবা হিসেবে নিজের স্থান অর্জন করেছে। এসময় এ ধরনের শপিং সেন্টার খোলা এবং সেখানে বেচাকেনা হওয়া খুবই ইতিবাচক। এতে ব্যবসায়ীরা একটা ভরসা পেলেন। আমরাও যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে বেচাকেনার পরিবেশ নিশ্চিত করছি। এ সময় প্রযুক্তির বড় একটি অবদান রয়েছে। এ জন্য প্রযুক্তি পণ্যের বাজারের কার্যক্রম চালু রাখতে হবে। ’

বাংলাদেশ সময়: ০৮৫৯ ঘণ্টা, মে ১৬, ২০২০
এসএইচএস/এফএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।