ক্যারিবিয়ান সাগরের দ্বীপরাষ্ট্র কিউবায় তাণ্ডবের পর রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় সকাল ৭টার দিকে ‘ইরমা’র আইওয়াল আঘাত করে ফ্লোরিডার দ্বীপাঞ্চলে। এসময় বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ২০৯ কিলোমিটার।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, হারিকেনের তীব্রতা বিবেচনায় নিয়ে ফ্লোরিডার প্রায় ৬৩ লাখ লোককে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে বলা হয়েছে। লাখো ফ্লোরিডাবাসী সরেও গেছে নিরাপদে।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ‘ইরমা’র গতিপথে কেউ থাকলে তাকে প্রাণভয়েই থাকতে হবে, একপ্রকার আত্মহত্যার শামিল হতে পারে সেটা। সেজন্য অবশ্য শনিবারই (৯ সেপ্টেম্বর) রাজ্যের গভর্নর রিক স্কট নাগরিকদের তাৎক্ষণিকভাবে নিরাপদে সরে যাওয়ার নির্দেশনা দেন।
ফ্লোরিডার আবহাওয়া অফিসের বরাত দিয়ে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, ‘ইরমা’র চোখের চারপাশের প্রচণ্ড বাতাস আগামী বেশ কয়েক ঘণ্টা ফ্লোরিডার নিম্নাঞ্চলে বইতে থাকবে। এই বাতাসে কাঁপতে হতে পারে পশ্চিমাঞ্চলকেও।
ন্যাপলস, ফোর্ট মায়ারস অঞ্চল কাঁপিয়ে এটি যাবে টাম্পার দিকে। আর গতিপথ বিবেচনায় আলবামা ও জর্জিয়া রাজ্যকেও সতর্ক করা হয়েছে।
সংবাদমাধ্যম আরও বলছে, ফ্লোরিডার নিম্নভূমির অনেক অঞ্চল সমুদ্রপৃষ্ট থেকে মাত্র কয়েক ফুট ওপরে হলেও হারিকেনটি পূর্ণশক্তিতে আঘাতকালে সর্বোচ্চ ১৫ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসও আঘাত হানতে পারে। সেজন্য ভূমিধস এবং ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় ফ্লোরিডার কর্তৃপক্ষ এরইমধ্যে রাজ্যে জরুরি অবস্থা জারি করেছে। বন্ধ করে দিয়েছে স্কুল-কলেজ। বাতিল করেছে দুই হাজারের বেশি ফ্লাইট। এখন পর্যন্ত বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে ৪ লাখ ৩০ হাজার বাড়িতে। কয়েকটি এলাকায় বাতাসে গাছপালা এবং বিদ্যুতের খুঁটি উপড়েও গেছে।
কিউবায় আঘাত হানার পর হারিকেনটি মেক্সিকো উপসাগর ও আটলান্টিক মহাসাগরের সংযোগস্থল ফ্লোরিডা প্রণালী হয়ে ফ্লোরিডায় এগিয়ে যায়। কিউবায় আঘাত হানার আগে এটি ছিল ৫ নম্বর ক্যাটাগরির শক্তিশালী হারিকেন। সেখানে তাণ্ডব চালিয়ে এটি শনিবার সকাল নাগাদ ৪ নম্বর ক্যাটাগরির হারিকেনে রূপ নেয়। কিন্তু ফ্লোরিডার দিকে এগোনোর সঙ্গে সঙ্গে হারিকেনটি ফের শক্তি সঞ্চয় করে।
কিউবান সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ঘণ্টায় ১৬০ কিলোমিটার বেগে আছড়ে পড়া ‘ইরমা’র আঘাতে কামাগাই দ্বীপপুঞ্জসহ অনেক এলাকায় ভূমিধস হয়েছে। সারাদেশে প্রাণ গেছে অন্তত ২৫ জনের।
‘প্রাণঘাতী’ ইরমা সর্বপ্রথম গত ৬ সেপ্টেম্বর বিকেলে ক্যারিবিয়ান উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় দ্বীপ বারবুডায় আঘাত হানে। এতে দ্বীপটির ৯০ শতাংশই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। উপড়ে যায় গাছপালা ও ঘরবাড়ির ছাদ, বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় বিদ্যুৎ সংযোগ।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১০, ২০১৭
এইচএ/