রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় (বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টা) সারাদেশে একযোগে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে চলে সন্ধ্যা ৬টা (বাংলাদেশ সময় রাত ১০টা) পর্যন্ত।
এবারের নির্বাচনে মোট ৬৫টি দল অংশ নিয়েছে।
নিয়ম অনুযায়ী, প্রতিজন ভোটার দু’টি করে ভোট দিয়েছেন। একটি সংসদীয় আসনের প্রার্থীকে, অপরটি দলকে। জার্মানিতে কোনো দল মোট ভোটের ৫ শতাংশ না পেলে সেই দল সংসদে (বুন্দেসতাগ) প্রতিনিধিত্ব করতে পারে না। বুন্দেসতাগের মোট ৫৯৮ আসনের মধ্যে ২৯৯টি আসনে রোববার সরাসরি নির্বাচন হয়েছে। বাকি ২৯৯ আসনে দলীয় ভোটপ্রাপ্তির শতাংশের হিসাব অনুযায়ী বিভিন্ন দলের প্রার্থী তালিকা থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।
নির্বাচনী ফলাফলে মেরকেলের দল প্রায় ৩৩ শতাংশ ভোট পেয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানানো হয়েছে। ক্ষমতাসীনদের প্রতিদ্বন্দ্বী এসপিডি পেয়েছে ২০-২২ শতাংশ ভোট।
অন্যদিকে দেশটির তৃতীয় বৃহৎ রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে অল্টানেটিভ ফর ডয়েচল্যান্ড (এএফডি) সাড়ে ১৩ শতাংশ ভোট পেয়ে সংসদে প্রতিনিধিত্ব করবেন। অন্য দলগুলোর প্রধানত অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় দৃষ্টিভঙ্গি পৃথক থাকলেওে এএফডি নামে দলটি মুসলিম, অভিবাসী ও শরণার্থী-বিদ্বেষী।
এক নজরে ইউরোপের নেত্রী মেরকেল
একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞানে শিক্ষক মেরকেলের রাজনীতিতে পদার্পণ ৩৪ বছর বয়সে। ১৯৮৯ সালে বার্লিন প্রাচীর পতনের সময় পূর্ব জার্মানির প্রধানমন্ত্রী লোথার ডে-মেসিয়ারের রাজনৈতিক সচিব হিসেবে রাজনীতির মঞ্চে আসেন মেরকেল। এরপর তিনি বৃহত্তর জার্মানির প্রথম নির্বাচনে বুন্দেসতাগের সদস্য নির্বাচিত হলে তাকে মন্ত্রী করে নেন তৎকালীন চ্যান্সেলর হেলমুট কোল। ১৯৯৮ সালের নির্বাচনে কোলের নেতৃত্বে সিডিইউ’র ভরাডুবি হলে নেতৃত্বে আসেন ৪৪ বছর বয়সী মেরকেল।
দলকে গুছিয়ে নেওয়ার পর ২০০৫ সালে প্রথম জার্মানির চ্যান্সেলর নির্বাচিত হন মেরকেল। তারপর থেকে কেবল জার্মানিই নয়, পুরো ইউরোপকেই যেন নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি। জার্মানির ‘ইউরো-সংশয়বাদী’দের তিনি যেমন সন্তুষ্ট করেছেন বলিষ্ঠ অর্থনৈতিক সংস্কারের মাধ্যমে, তেমনি ‘ইউরোপ-বান্ধব’দেরও খুশি করেছেন দলের অভ্যন্তরে প্রতিরোধ সত্ত্বেও সংস্কার উদ্যোগ বাস্তবায়ন করে।
ইউরোপ অভিমুখে অভিবাসী-শরণার্থী স্রোত, ইউরোপের অর্থনৈতিক সংকট, জার্মানির রাজনৈতিক নেতৃত্বের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা নজরদারিসহ নানা ইস্যুতে মেরকেল মাঝেমধ্যে বেকায়দায় পড়লেও ধীরে-সুস্থে জনগণের মন-মর্জি বুঝে পদক্ষেপ নিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন পূর্ণোদ্যমে। গ্রিস, ইতালি, ফ্রান্স এমনকি যুক্তরাজ্যের মতো দেশগুলো অর্থনৈতিকভাবে ক্রান্তিকাল অতিক্রম করলেও মেরকেলের দৃঢ় ও সময়োপযোগী পদক্ষেপের কারণেই জার্মানিকে পড়তে হয়নি তেমন কোনো সংকটে।
**জার্মানিতে চলছে ভোট: ফের চ্যান্সেলর হওয়ার পথে মেরকেল
বাংলাদেশ সময়: ১০৫৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০১৭
এসএইচ