বুধবার (৩০ জানুয়ারি) দুপুর ৩টায় ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. মঞ্জুরুল ঈমাম আসামি রনির উপস্থিতিতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ ৫০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দেন। জরিমানার টাকা অনাদায়ে আরো ৬ মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
গত ১৫ জানুয়ারি রাষ্ট্র ও আসামি পক্ষের যুক্তি উস্থাপন শেষে ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মঞ্জুরুল ঈমাম রায় ঘোষণার জন্য বুধবার (৩০ জানুয়ারি) দিন ধার্য করেন। এ নিয়ে মামলার রায় ঘোষণার জন্য তৃতীয়বারের মতো দিন ধার্য করা হয়।
আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, আসামি বখতিয়ার আলম রনি ঘটনার সময় মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন। তার মেয়ে হাসপাতালে থাকায় তিনি বিষণ্নতায় ছিলেন। তিনি (রনি) ওই সময় মদপানে নেশাগ্রস্ত ছিলেন। তিনি লাইসেন্সবিহীন পিস্তল দিয়ে মামলার ভিক্টিমদের গুলি করেন। তিনি জানতেন গুলি করলে তারা মারা যাবেন।
এ ঘটনায় তার (রনি) মৃত্যুদণ্ড শাস্তি হয়, কিন্তু তার (রনি) শারীরিক ও মানসিক অবস্থা বিবেচনায় করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হলো। একই সঙ্গে ৫০ হাজার জরিমানা ও অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
২০১৫ সালের ১৩ এপ্রিল রাত পৌনে ২টার দিকে রাজধানীর নিউ ইস্কাটনে একটি কালো রঙের প্রাডো গাড়ি থেকে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়লে তাতে অটোরিকশাচালক ইয়াকুব আলী ও রিকশাচালক আবদুল হাকিম আহত হন। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তারা মারা যান।
ওই ঘটনায় নিহত হাকিমের মা মনোয়ারা বেগম ১৫ এপ্রিল অজ্ঞাত পরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে রমনা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
২০১৫ সালের ২১ জুলাই ডিবি পুলিশ রনির বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
মামলাটিতে বখতিয়ার আলম রনিকে তিনদফা দশ দিনের রিমান্ড শেষে ২০১৫ সালের ২ জুলাই আদালতে তাকে কারাগারে পাঠান। এরপর থেকে তিনি কারাগারেই রয়েছেন।
গত ২০১৬ সালের ৬ মার্চ মামলাটিতে আসামি রনির অব্যাহতির আবেদন নাকচ করে আদালত চার্জগঠন করেন।
মহানগর দায়রা আদালতে ৩৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ২০১৮ সালে ১৮ অক্টোবর সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়। এরপর ওই বছর ২৯ অক্টোবর আসামি রনি আত্মপক্ষ শুনানিতে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন।
আসামি পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট নজীবুল্লাহ হীরু অপরদিকে রাষ্ট্র পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর মো. জাহিদ সরদার।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩০, ২০১৯
এমএআর/এমজেএফ