মামলা বাতিলে সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার আমিনুল হকের করা আবেদনের রুল খারিজ করে সোমবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) এ রায় দেন বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
আদালতে মামলার বাদী দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
পরে খুরশীদ আলম খান বলেন, মামলা বাতিলে ব্যারিস্টার আমিনুল হকের আবেদন খারিজ হয়ে গেছে। এখন নিম্ন আদালতে এ মামলা চলতে বাধা নেই। এছাড়া এ মামলা ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আমিন উদ্দিন মানিক জানান, দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি থেকে কয়লা উত্তোলন, ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণে ঠিকাদার নিয়োগে অনিয়ম এবং রাষ্ট্রের ১৫৮ কোটি ৭১ লাখ টাকা ক্ষতি ও আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের সহকারী পরিচালক মো. নাজমুল আলম ২০০৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি শাহবাগ থানায় এই মামলা দায়ের করেন। ওই বছরের ৫ অক্টোবর ১৬ আসামির বিরুদ্ধে দুদকের উপ-পরিচালক মো. আবুল কাসেম ফকির দণ্ডবিধি আইনের ৪০৯/১০৯ তৎসহ ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় অভিযোগপত্র দাখিল করেন ।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ছাড়াও মামলার অন্য আসামিরা হলেন— সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমান (মৃত), সাবেক স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী আবদুল মান্নান ভূঁইয়া (মৃত), সাবেক শিল্পমন্ত্রী মতিউর রহমান নিজামী (মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর), সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ (মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর), সাবেক মন্ত্রী এম কে আনোয়ার (মৃত), এম শামসুল ইসলাম (মৃত), ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, ব্যারিস্টার আমিনুল হক, এ কে এম মোশাররফ হোসেন, জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব নজরুল ইসলাম, পেট্রোবাংলার সাবেক চেয়ারম্যান এস আর ওসমানী, পেট্রোবাংলার সাবেক পরিচালক মঈনুল আহসান, বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম ও খনির কাজ পাওয়া কোম্পানির স্থানীয় এজেন্ট হোসাফ গ্রুপের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন।
আমিন উদ্দিন মানিক আরও জানান, বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য ২৬ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য আছে। গত ৩১ জানুয়ারি বকশিবাজারে অবস্থিত ঢাকার ২ নম্বর বিশেষ জজ আদালত এই তারিখ ধার্য করেন। এই মামলায় দীর্ঘ দিন ব্যারিস্টার আমিনুল হকের পক্ষে মামলার কার্যক্রম হাইকোর্টে স্থগিত ছিল বিধায় বিচারিক আদালতে মামলার চার্জ গঠন করা সম্ভব হয়নি। ২০০৯ সালের ৮ সেপ্টেম্বর মামলাটি বাতিলের জন্য ফৌজদারি বিবিধ মামলা দায়ের হলে ১৩ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট এই মামলায় রুল ও স্থগিতাদেশ দিয়েছিলেন। আজকের রায়ের ফলে এখন মামলাটির কার্যক্রম চলতে আর কোনো বাধা রইলো না।
এর আগে এ মামলার বৈধতা নিয়ে খালেদা জিয়ার করা রিট ২০১৫ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর খারিজ করে দেন বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান ও বিচারপতি আবদুর রবের হাইকোর্ট বেঞ্চ। পরে তা আপিল বিভাগেও খারিজ হয়ে যায়।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০১৯
ইএস/এইচএ/