ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

তুরিন আফরোজের অপরাধ প্রমাণিত: আইনমন্ত্রী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১১, ২০১৯
তুরিন আফরোজের অপরাধ প্রমাণিত: আইনমন্ত্রী

ঢাকা: আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর পদ থেকে সদ্য অপসারিত ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ তথ্য প্রমাণের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

তিনি বলেন, তিনি (তুরিন আফরোজ) অপরাধীর সঙ্গে যে কথা বলেছেন তার রেকর্ড আমাদের কাছে আছে। সেখানে সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে তার গলা (কণ্ঠস্বর) প্রমাণিত হওয়ায় আমরা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

এটা তুরিন আফরোজ কেন করলেন আমরা বুঝতে পারছি না। আমি শুধু এটুকু বলবো এটা দুঃখজনক এবং কাজটা যে আমি খুশি হয়ে করেছি তা কিন্তু না।

সোমবার (১০ নভেম্বর) সচিবালয়ে আইনমন্ত্রীর নিজ দফতরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন।

আইনমন্ত্রী বলেন, তুরিন আফরোজের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল যে তিনি একজন আসামির সঙ্গে যে মামলা তিনি নিজে করছিলেন তার সঙ্গে আলাপ আলোচনা করতে গিয়েছিলেন। এবং এ মামলা আলাপ-আলোচনা করার সময় তিনি এও বলেছিলেন এ মামলার কোনো সারবত্তা নেই। সেই কথোপকথন কিন্তু রেকর্ড করা হয়।

তিনি বলেন, রেকর্ড করা কথোপকথন ও তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনানের চিফ প্রসিকিউটর আমাদের কাছে পাঠিয়েছেন। আমরা সেটা (রেকর্ড) নিয়ে যথেষ্ট সাক্ষীদের কাছে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। একইসঙ্গে তুরিন আফরোজের সঙ্গে যতটুকু কথাবলা প্রয়োজন মনে করেছি হয়েছে। কিন্তু যে সাক্ষ্যপ্রমাণ আছে তার সব ডকুমেন্টস আছে। সেজন্য আমরা এ সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে তাকে অব্যাহতি দিয়েছি।  

আনিসুল হক বলেন, তিনি আগের যে মামলা পরিচালনা করেছেন তাতে আমরা যথেষ্ট সন্তুষ্ট। তাকে যে কারণে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে তার আগ পর্যন্ত তিনি নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করেছেন। কিন্তু এ ব্যাপারে তার সেন্স অব জাজমেন্ট করে কাজ করেননি। তার দিক থেকে যে সব বক্তব্য ধারণ করা হয়েছে যেটা তার গলা (কণ্ঠস্বর) বলে প্রমাণিত হয়েছে। এটা তুরিন আফরোজ কেন করলেন আমরা বুঝতে পারছি না। আমি শুধু এটুকু বলবো এটা দুঃখজনক এবং কাজটা যে আমি খুশি হয়ে করেছি তা কিন্তু না। তবে তাকে অব্যাহতি দেওয়াটা আরও জরুরি হয়ে পড়ে কারণ হচ্ছে এ মামলা নিয়ে কথা হচ্ছে তা কিন্তু চার্জ গঠন হয়ে গেছে। সেই কারণে এ বিষয়ে আমার মনে হয় যে আরও নিষ্পত্তি টানা দরকার ছিল সেজন্য এটা করা হয়েছে।

তাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হয়ছিল কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, তার সঙ্গে কথা হয়েছে এবং যেই প্রমাণাদি সেটাকে যদি তিনি ডিফেন্স করতে চান করতে পারেন। কিন্তু ট্যাপ করা কথাবর্তা আমরা পেয়েছি তার বিরুদ্ধে নালিশ পেয়েছি।  এরপর আমরা সার্বিকভাবে আলোচনা করেই তাকে অব্যাহতি দিয়েছি।

বর্তমান সরকারে শুদ্ধি অভিযানের কোন অংশ কি-না যা দিয়ে আইনজীবীদের কোন মেসেস দিতে চাচ্ছে সরকার এমন প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, আমরা আশা করি যে আইনজীবীরা এ ধরনের কাজে নিয়োজিত আছেন তারা নিজেদের দায়িত্ব সম্বন্ধে অত্যন্ত সচেতন। তাদের এ বিষয়ে নতুন সংকেত দিতে হবে এটা আমি মনে করি না। তারা যথেষ্ট নিষ্ঠার সঙ্গে তার নিজেদের দায়িত্ব পালন করছেন বলে আমার বিশ্বাস।

এরআগে সোমবার শৃঙ্খলা ও পেশাগত আচরণভঙ্গ এবং গুরুতর অসদাচরণের দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর পদ থেকে ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজকে অপসারিত করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। সোমবার  থেকে এ আদেশ কার্যকর হবে বলেও জানানো হয় প্রজ্ঞাপনে।

২০১৩ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি তুরিন আফরোজকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিলো বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ১১, ২০১৯/আপডেট: ১৬৪০ ঘণ্টা
জিসিজি/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।