ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

সেই পাখিদের স্থায়ী অভয়াশ্রমে প্রয়োজন ২ কোটি ১৩ লাখ টাকা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৫৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০১৯
সেই পাখিদের স্থায়ী অভয়াশ্রমে প্রয়োজন ২ কোটি ১৩ লাখ টাকা

ঢাকা: রাজশাহীর বাঘা উপজেলার খোর্দ্দ বাউসা গ্রামের আমবাগানে থাকা পাখির অভয়াশ্রম রক্ষায় কৃষি এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।

বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে এ বক্তব্য জানাতে বলা হয়েছে।

ওইদিন দিন ধার্য করা হয়েছে পরবর্তী আদেশের জন্য।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার।
 
একটি জাতীয় দৈনিকে ‘পাখিদের বাসা ছাড়তে সময় দেওয়া হলো ১৫ দিন’ শীর্ষক প্রকাশিত প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী প্রজ্ঞা পারুমিতা রায়। এরপর গত ৩০ অক্টোবর রাজশাহীর বাঘা উপজেলার খোর্দ্দ বাউসা গ্রামের আমবাগান নিয়ে হাইকোর্ট বলেছেন- কখনই পাখির বাসা ভাঙা যাবে না।

রাজশাহীর বাঘা উপজেলার খোর্দ্দ বাউসা গ্রামের আমবাগানে কয়েক হাজার শামুকখোল পাখিকে ১৫ দিনের মধ্যে তাড়িয়ে দেওয়া সংক্রান্ত এক পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন নজরে আনার পর আদালত ওইদিন এ মন্তব্য করেছিলেন। একইসঙ্গে রুলে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার খোর্দ্দ বাউসা গ্রামকে কেন অভয়ারণ্য ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি অভয়ারণ্য ঘোষণা করলে ওই আম বাগান ইজারাদারদের কী পরিমাণ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে তা ৪০ দিনের মধ্যে জানাতে রাজশাহীর জেলা প্রশাসক ও বাঘা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এসময় আদালত বলেন, কখনই পাখির বাসা ভাঙা যাবে না।
 
এ নির্দেশের পর রাজশাহীর জেলা প্রশাসক মো. হামিদুল হক লিখিতভাবে হাইকোর্টকে জানিয়েছেন, পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট গঠিত কমিটি পাখির অভয়াশ্রম এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করে জমির মালিক/ইজারাদারদের যৌক্তিক ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করে ক্ষতিপূরণ বাৎসরিক ৩ লাখ ১৩ হাজার টাকা নির্ধারণ করেন। এছাড়া স্থায়ীভাবে অভয়াশ্রম করতে আমগাছসহ জমি সরকারের অনুকূলে স্থায়ী বন্দোবস্ত নিতে লাগবে ২ কোটি ১২ লাখ ৮৫ হাজার নয়শ ছয় টাকা। এ অর্থ নির্ধারণ করে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পত্র পাঠানো হয়েছে।
 
গত চারবছর থেকে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার খোর্দ্দ বাউসা গ্রামের আমবাগানে শামুকখোল পাখিরা বাসা বেঁধে রয়েছে। তারা বর্ষা শেষে এই বাগানে গিয়ে বাচ্চা ফোটায়। শীতের শুরুতে বাচ্চারা উড়তে শিখলে তাদের নিয়ে চলে যায়। এবার পাখিরা বাসা বেঁধে বাচ্চা ফুটিয়েছে। তবে বাচ্চারা এখনও উড়তে শেখেনি। কিন্তু এবছর ইজারাদার আম উৎপাদনের জন্য বাগানের পরিচর্যা করতে চান।  

গত ২৯ অক্টোবর তিনি বাসা ভেঙে আমগাছ খালি করতে শুরু করেন। একটি গাছে থাকা কিছু বাসা ভেঙেও দেন। তবে স্থানীয় কিছু পাখিপ্রেমী তাকে বাসা ভাঙতে বাধা দেন। পরে তাদের কারণে আমবাগান ইজারাদার আতাউর রহমান পাখিদের বাসা ছাড়ার জন্য ১৫ দিন সময় বেঁধে দেন।  

এ সংক্রান্ত খবর গণমাধ্যমে প্রকাশের পর পাখির আবাসস্থল রক্ষার উদ্যোগ নেয় রাজশাহী জেলা প্রশাসন। একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল গত ৩০ অক্টোবর বাঘার খোর্দ্দ বাউসা গ্রামের ওই আমবাগান পরিদর্শনে যান। তারা পাখিদের বাসা ভাঙা যাবে না বলে জানান।

এছাড়া মহাপরিচালকের নির্দেশে একই দিন ঘটনাস্থলে যান র‌্যাব-৫ এর অধিনায়ক মাহফুজুর রহমান।  

বাংলাদেশ সময়: ২০১৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০১৯
ইএস/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।