ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

স্বীকারোক্তি: সারওয়ার আলীর বাসায় হামলা ডাকাতির উদ্দেশ্যে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৫৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০২০
স্বীকারোক্তি: সারওয়ার আলীর বাসায় হামলা ডাকাতির উদ্দেশ্যে

ঢাকা: অর্থ লুণ্ঠনের উদ্দেশ্যেই সারওয়ার আলীর বাসায় সন্ত্রাসী হামলা হয়েছিল বলে ফরহাদ (১৮) নামে এক আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারাফুজ্জামান আনছারী মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। 

মঙ্গলবার সকালে এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক সুকান্ত সাহা ফরহাদের জবানবন্দি রেকর্ডের আবেদন করেন।  সোমবার (১৩ জানুয়ারি) সকালে ফরহাদকে গ্রেফতার করে পিবিআই।



মহানগর পুলিশের অপরাধ, তথ্য ও প্রসিকিউশন বিভাগ থেকে জানা যায়, আসামি ফরহাদ স্বীকারোক্তিতে বলেছেন এটি কোনো জঙ্গি হামলা ছিল না। বরং সারওয়ার আলীর বাসায় ডাকাতি ও অর্থ লুণ্ঠনের উদ্দেশ্যেই তারা হানা দিয়েছিলেন।  

এই মামলায় গত ৭ জানুয়ারি সারওয়ার আলীর বাড়ির দারোয়ান ‌মো. হাসান ও গা‌ড়িচালক হা‌ফিজুল ইসলামকে দুই দিনের রিমান্ডে পাঠান আদালত। গত ১০ জানুয়ারি তারা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হাবিবুর রহমানের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।  

সারওয়ার আলী প্রাথমিকভাবে জঙ্গি হামলার আশঙ্কার কথা জানান। তবে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সুকান্ত সাহা জানান, এখনো তদন্তে জঙ্গি হামলার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।  

গত ৫ জানুয়ারি রাতে তার উত্তরার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। এসময় সারওয়ার আলীর স্ত্রী কমিউনিটি ক্লিনিকের সাবেক প্রকল্প পরিচালক মাখদুমা নার্গিস, তাদের মেয়ে সায়মা আলী, জামাতা হুমায়ুন কবিরকেও হত্যার চেষ্টা চালায়। তাদের বাঁচাতে এগিয়ে আসা দুই প্রতিবেশীকেও ছুরিকাঘাত করে দুর্বৃত্তরা।

এ ঘটনায় ৬ জানুয়ারি দু’জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত পরিচয় চার–পাঁচজনকে আসামি করে রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মামলা করেন সারওয়ার আলী। মামলায় বাড়ির দারোয়ান মো. হাসান, সাবেক গাড়িচালক নাজমুলসহ অজ্ঞাতনামা চার-পাঁচজনকে আসামি করা হয়।

গত ৭ জানুয়ারি রাতে অজ্ঞাতপরিচয় দুই দুর্বৃত্ত উত্তরার ৭ নম্বর সেক্টরে ডা. সারওয়ার আলীর বাড়িতে ঢোকেন। তারা ওই বাড়ির তৃতীয় তলায় গিয়ে তার মেয়ে সায়মা আলীর বাসার দরজায় ধাক্কা দেন। দরজা খুলে দেওয়া হলে দুর্বৃত্তরা ভেতরে গিয়ে সারওয়ার আলীর মেয়ে ও জামাতাকে ছুরিকাঘাত করে হত্যার চেষ্টা চালান।  

পরে বাড়ির চতুর্থ তলায় গিয়ে সারওয়ার আলী ও তার স্ত্রীকে হত্যার চেষ্টা করেন। এসময় তাদের চিৎকারে ওই ভবনের এক বাসিন্দা ও প্রতিবেশীরা এগিয়ে গেলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যান। এসময় প্রতিবেশীদের ওপরও ঝাপিয়ে পড়ে তারা।  

সারওয়ার আলী সেদিন বলেন, দরজা খুলতেই ছুরি হাতে দুর্বৃত্তরা আমাকে হত্যার চেষ্টা চালায়। আমার স্ত্রী এগিয়ে এলে তাকেও ছুরিকাঘাত করে হত্যার চেষ্টা চালায় তারা। তখন তিনতলা থেকে আমার মেয়ে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯–এ ফোন করে। এরই মধ্যে দোতলার ভাড়াটে শাহাবুদ্দিন চাকলাদার ও তার ছেলে মোবাশ্বের চাকলাদার এগিয়ে আসেন। এরপর দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়।

উত্তরা পশ্চিম থানার ওসি তপন চন্দ্র সাহা সেদিন জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় পুলিশ। এরপর তল্লাশি চালিয়ে ওই বাড়ির পার্কিংস্থল থেকে একটি স্ক্রু ড্রাইভার, ব্যাগে থাকা সাতটি চাপাতি, বৈদ্যুতিক শক দেওয়ার যন্ত্র, টিভি ক্যামেরার স্ট্যান্ড, সিনথেটিক দড়ি ও একটি কেমিক্যাল স্প্রে উদ্ধার করা হয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ২০৫২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০২০
‌কেআই/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।