পুলিশ বলছে, তদন্ত প্রক্রিয়া চলছে, শেষ হলেই প্রতিবেদন দেওয়া হবে। অপরদিকে তদন্ত প্রক্রিয়া জিইয়ে রেখে সাধারণ ছাত্রদের হয়রানির আশঙ্কা করছেন কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতারা।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় ২০১৮ সালের ৮ এপ্রিল রাত ১টার দিকে মুখোশধারী একদল দুর্বৃত্ত ঢাবি ভিসির বাসভবনের মূলগেট ভেঙে ফেলে এবং দেয়ালের তারকাঁটা ভেঙে বাসায় ঢুকে পড়ে। তারা বাসভবনের আশপাশে একাধিক মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এর দু'দিন পর ১০ এপ্রিল হামলার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় একটি মামলা করেন। এছাড়া একই ঘটনায় আরও তিনটি মামলা করে পুলিশ।
তবে কোনো মামলাতেই আসামির নাম উল্লেখ করা হয়নি। দুই বছর ধরে ১৭ বার তদন্তের সময় বাড়ানো হলেও এখনেও প্রতিবেদন দাখিল হয়নি। সবশেষ গত ২৪ মার্চ এসব মামলার প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য ছিল। তবে দায়িত্বপ্রাপ্ত তদন্ত কর্মকর্তারা এসব মামলার প্রতিবেদন দাখিল না করায় ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারাফুজ্জামান আনছারী আগামী ১০ মে প্রতিবেদন দাখিলের পরবর্তী দিন ধার্য করেছেন।
জানতে চাইলে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান বাংলানিউজকে বলেন, মামলাগুলো তদন্তাধীন। এখন গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) এসব মামলার তদন্ত করছে। তদন্ত শেষ হলেই প্রতিবেদন দেওয়া হবে। তবে, তদন্তে অগ্রগতির বিষয়ে সুনির্দিষ্টভাবে তিনি কিছু জানাতে পারেননি।
যে আন্দোলনের সময় এ হামলা হয়েছে সেই কোটা সংস্কারের সময় গড়ে ওঠা ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতারা মনে করেন তদন্ত বিলম্বিত হওয়ার ক্ষেত্রে ভিন্ন উদ্দেশ্য আছে।
ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সহসভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নূর বাংলানিউজকে বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একটি সুরক্ষিত এলাকা। এখানে বিভিন্ন আবাসিক ও একাডেমিক বিল্ডিংয়ে সিসি ক্যামেরা আছে। তাই সদিচ্ছা থাকলে এ ঘটনার তদন্ত সাতদিনের মধ্যে শেষ করা সম্ভব।
কেন তদন্ত প্রক্রিয়া বিলম্বিত হচ্ছে, জানতে চাইলে ভিপি নূর বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলন জাতীয়ভাবে একটি গুরুত্বপূর্ণ ও অর্থবহ আন্দোলন। এ আন্দোলনের মাধ্যমে গড়ে ওঠা ছাত্র অধিকার পরিষদ পরবর্তীতে ডাকসু নির্বাচনেও বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদে জয়লাভ করেছে, যা দেশের ইতিহাসে কোনো ছাত্রসংগঠনের ক্ষেত্রে দেখা যায়নি। সারা দেশেই সংগঠনের অসংখ্য নেতাকর্মী আছে। যেহেতু অজ্ঞাতনামা আসামিদের নামে মামলা হয়েছে। তাই এ আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্তদের ভবিষ্যতেও এসব মামলায় হয়রানির আশঙ্কা আছে। আমরা মনে করি, সাধারণ ছাত্রদের ওপর ভয়ের খড়গ ঝুলিয়ে রাখতেই মামলাগুলোর তদন্ত শেষ করা হচ্ছে না।
মামলার তদন্তের বিষয়ে শাহবাগ থানা পুলিশ বা গোয়েন্দা পুলিশ দুই বছরের মধ্যে তাদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করেননি বলে জানান ডাকসু ভিপি।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৪০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৮, ২০২০
কেআই/ওএইচ/