নিজের ইচ্ছেমতো নায়ক শাকিব খান তার স্ত্রী অপু বিশ্বাসকে ছেড়েও দিতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন তারা।
সোমবার (১০ এপ্রিল) বিকেলে একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে ঢাকাই চলচ্চিত্রের এক সময়কার হার্টথ্রুব নায়িকা অপু বিশ্বাস নিজের সন্তান কোলে নিয়ে আসেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তানিয়া হক বাংলানিউজকে বলেন, শাকিব খানের এ অপরাধ অন্যদের মতো নয়। কারণ সে চলচ্চিত্র অভিনেতা এবং তাকে অনেকেই অনুসরণ করেন।
গণমাধ্যমে সবাইকে জানিয়ে শাকিব খান স্ত্রীকে গ্রহণ না করার ঘোষণাকে উদ্বত্য বলে মনে করেন তানিয়া। তিনি বলেন, 'এটা একজন নারীর জন্য কতটা অসম্মানজনক!'
তিনি বলেন, কোনো সর্ম্পকই গোপন হওয়া উচিত নয়। মুক্ত হওয়াটা ভালো। গোপন সর্ম্পকের মধ্যেই ঠকানো এবং এ ধরনের প্রতারণা থাকে।
তানিয়া বলেন, চলচ্চিত্র যেহেতু একটি প্রতিষ্ঠান, সেখান থেকেই শাকিবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রতিবাদ জানাতে হবে।
অপু সবকিছু সরাসরি বলে দেওয়ায়, ‘পেছনের জায়গাটি সামনে চলে আসছে এবং সাকিব এড়িয়ে যাচ্ছে,’ উল্লেখ করে তানিয়া হক বলেন, তবে সে (শাকিব খান) এটি এড়িয়ে যেতে পারে না।
শাকিবের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সামাজিকভাবে ছেলেটা এ কাজ করতে পারে না। তা একটা ছেলেও মেয়ের সঙ্গে করতে পারে না। মেয়েও ছেলের সঙ্গে করতে পারে না। তবে সামাজিকভাবে যেহেতু আমরা পিতৃতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায় থাকি আমাদের মেয়েদের সন্তানের বাবার নাম প্রয়োজন হয়। সেক্ষেত্রে উনি যদি স্বীকার করেন এটি তার সন্তান এবং এ মেয়েরই সন্তান সেক্ষেত্রে সে অপু বিশ্বাসকে অবজ্ঞা করে কোন প্রেক্ষাপটে!’
‘এটা আইনিভাবে, সামাজিকভাবে বা ধর্মীয়ভাবে, কোনোভাবেই শাকিব এটাকে বাদ দিতে পারে না। ’
তিনি বলেন, ‘এ সম্পর্কটা যদি শাকিব কখনো গ্রহণও করে মেয়েটার জায়গা থেকে চিন্তা করলে, শাকিবতো ওপেনলি বলেছে সে মেয়েটাকে গ্রহণ করবে না। তার মানে অপুর প্রতি তার ডিমান্ড শেষ। বাচ্চা তার, কিন্তু অপু না!’
এই সহযোগী অধ্যাপক বলেন, ‘এই যে ঠাস করে একটা মেয়েকে ছুঁড়ে দেওয়া। এই যে তোমাকে নেবো না, ওকে নেবো। এটা ধর্ষণ করার চেয়েও বেশি। যারা ধর্ষণ করে তাদের আমরা ধর্ষণকারী বলি। এদেরকে কি বলবেন! এরা আরো খারাপ। এদের কোনো নাম নেই সমাজে। ’
তিনি বলেন, শাকিব এক্ষেত্রে উদাহরণ কারণ সে ফিল্ম স্টার। তবে সমাজের সবক্ষেত্রে, বিভিন্ন পর্যায়ে এ ধরনের শাকিব খানেরা রয়েছে। যারা প্রয়োজন ফুরিয়ে গেলেই নারীকে অস্বীকার করতে চায়। সন্তানকে নিয়ে যেতে চায়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এ সহযোগী অধ্যাপক বলেন, 'ভেবে দেখুন এখন অপু কতটা অসহায় অবস্থায় রয়েছেন। তার কাছে সন্তান অথচ স্বামী বলছেন দ্বায়িত্ব নেবেন না। এক্ষেত্রে শাকিব খান একজন রেপিস্টের চেয়েও খারাপ কাজ করেছে। '
তিনি বলেন, এক্ষেত্রে অপু আইনি অভিযোগ করতে পারেন। কারণ এ পিতৃতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় তার সন্তানের বাবার পরিচয়টি প্রয়োজন হয়। শাকিব কোন সাহসে সেটি অস্বীকার করেন!
এর আগে বিকেলে ওই টেলিভিশন চ্যানেলে চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস দাবি করেন, চিত্রনায়ক শাকিব খানের সঙ্গে ২০০৮ সালের ১৮ এপ্রিল তার বিয়ে হয়েছে। তাদের এক পুত্রসন্তানও আছে। নাম আব্রাহাম খান জয়। শাকিব খানের চাপেই এতোদিন বিয়ের খবর গোপন করেছিলেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০১৭/আপডেট: ১৭৩৭ ঘণ্টা
এমএন/জেডএস