তাপমাত্রা জানানোর ম্যাধ্যমগুলোতে যেনো শীতের বিদায়ী বারতা। বলছে, দিনাজপুর জেলাজুড়ে ২২ ডিগ্রি।
‘ফাগুনের নবীন আনন্দে
গানখানি গাঁথিলাম ছন্দে॥
দিল তারে বনবীথি কোকিলের কলগীতি,
ভরি দিল বকুলের গন্ধে...’
দূর কোনো তরুশাখায় কি বিরহী কোকিল দেখা যায়? কিংবা বকুল বিছানো মাতালগন্ধী পথ? দেখা না গেলেও কে বলবে এ মাঝ বৈশাখের রূদ্ররূপ! যখন নটরাজের প্রলয় নাচন হওয়ার কথা, সেখানে শ্যামের বাঁশরী বাজানো প্রেমের আবহ!
আকাশ ছুঁতে চাওয়া উত্তরবঙ্গের ভুট্টা গাছগুলোর পেছন দিকে উঁকি দেয় সূর্য। এর আগেই পুবের আকাশ লাল করে জানান দিচ্ছিল তার আগমন।
দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জের এ গ্রামের নাম দামাইক্ষেত্র হাবলুঘাট। ভোর এখানে বেশ শীতল। পুরোটাই গত রাতের বৃষ্টির কথা বলা যায় না কারণ, শিম গাছের লতাতেও কানের দুলের মতো ফুল দুলছে।
ভুট্টা গাছের দীর্ঘ পাতার শীর্ষে জমে রয়েছে শিশিরের বিন্দু। স্টপওয়াচের মতো সময় ধরে এক মিনিট অন্তর ঝরছে সেই শিশির। সেই পাতাতেই নিজেকে টিকিয়ে রাখতে সংগ্রাম করছে রঙ-বেরঙের বন্য পোকাগুলো।
কচুপাতার উপর টলটল করছে জমে থাকা পানি। সকালের মৃদু ঠাণ্ডা বাতাসে সেই জল নড়ে উঠলেও সহজে পড়ে যায় না। জংলা গাছগুলোতে নিজেদের জাল বুনে বাতাসে দোল খাচ্ছে মাকড়সা।
রাতের বৃষ্টির পানিকে ধারণ করা ঘাসের উপর হাত বুলালে ভিজে ওঠে। সেই ঘাসে এরই মধ্যে নেমে গিয়েছে গৃহপালিত মোরগের দল। কর্কশ ডাকে সকালের আহ্বান জানাচ্ছে তারা।
বৃষ্টিস্নাত এ সকাল অনেক শান্ত আর কোমল। ঠাণ্ডা বাতাসে যেনো পুরো প্রকৃতি চাঁদর মুড়িয়ে রয়েছে। দিনাজপুর-ঠাকুরগাঁও সড়কের পশ্চিম পার্শ্বে খড়ের ঘরগুলো থেকে গরু বের করে আনছে গৃহবধূরা। গ্রামের মেঠোপথ যেনো ভুট্টা ক্ষেতের মাঝ দিয়ে বয়ে গিয়েছে বহুদূর। সেই পথে খেলা করে শালিকের জোড়া।
খুব বেশি সময় নেয় না সূর্য। দেখতে দেখতেই আলোকিত করে তোলে হাবলুঘাটকে। বৃষ্টিভেজা মাঠ-ঘাটে ছড়িয়ে পড়া সে রোদকে বড় মিঠে লাগে।
বাংলাদেশ সময়: ০৭০২ ঘণ্টা, মে ০২, ২০১৭
এমএন/এসএনএস