ছোটবেলায় পড়েছিলাম দেশের সবচেয়ে উষ্ণতম স্থান লালপুর। আর লালপুর তো নাটোর জেলারই একটি উপজেলা।
এই বুকফাঁটা-কাঠফাঁটা গরমই যেন জানান দিচ্ছে কেন নাটোর দেশের সবচেয়ে উষ্ণ জেলা।
সকাল থেকে এ পর্যন্ত কয়েক বোতল ঠাণ্ডা পানি সাবার করেছি। সামনেই ভ্যানে করে ডাব বিক্রি করছেন একজন। কচি কচি ডাবগুলো ড্যাব ড্যাব করে যেন চেয়ে রয়েছে। নাহ আর টেকা গেল না । একটা ডাব কিনে খেলাম। কিন্তু তৃষ্ণা যেন আর মেটেই না!
চামড়াপট্টির কাজ শেষ করে এগুতে শুরু করলাম রেলগেটের দিকে। হঠাৎ যেন স্বস্তির পরশ বুলিয়ে গা ছুঁয়ে গেলো এক ঝলক শীতল হাওয়া।
আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখলাম পশ্চিম আকাশে জমতে শুরু করেছে মেঘ। কিছুক্ষণের মধ্যেই আকাশ ভরে গেল কালো মেঘে।
ঠাণ্ডা হাওয়াও বইতে শুরু করলো জোরছে। থোকায় থোকায় ঝুলতে থাকা রাস্তার পাশের গাছের আমগুলো বাতাসে বাড়ি খেতে লাগলো একটি আরেকটির সাথে।
কিছুক্ষণ একটানা দমকা হাওয়ার সাথে হঠাৎই শুরু হলো বৃষ্টি। একটি দুটি করে বৃষ্টির ফোঁটা পড়তে শুরু করলো মাথায়। দৌড়ে গিয়ে আশ্রয় নিলাম একটি দোকানের বারান্দায়।
এর মধ্যেই অঝোরে ঝরা শুরু হলো বারিধারা। ধরণী হলো সুশীতল। ঠাণ্ডা হাওয়ার পরশে সারা শরীর মুহূর্তেই হয়ে উঠলো চনমনে। টিনের চাল গড়িয়ে পড়া বৃষ্টির পানির সরু ধারাকে মনে হলো অপরুপ শিল্পকর্ম। নিজের অজান্তেই যেন মুখ দিয়ে বেরিয়ে এলো আহ বৃষ্টি, আহ স্বস্তি।
এই বৃষ্টির পর যেন স্বস্তি ফিরে পেলো নাটোরবাসী। বৃষ্টির পরে কমে গেল ভ্যাপসা গরমের তীব্রতাও। হালকা হালকা ঠাণ্ডা বাতাসের পরশে শহরের মানুষজনও যেন ফিরে পেলো তাদের স্বাভাবিক ছন্দ।
বাংলাদেশ সময়: ২২০১ ঘণ্টা, মে ২৬, ২০১৭