ঢাকা, শনিবার, ২৪ মাঘ ১৪৩১, ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় নিয়ে ক্ষুব্ধ মন্ত্রিসভা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১৪ ঘণ্টা, আগস্ট ৭, ২০১৭
ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় নিয়ে ক্ষুব্ধ মন্ত্রিসভা রায় নিয়ে দুই ঘণ্টা বিশেষ বৈঠক করেছে মন্ত্রিসভা। ছবি: পিঅইডির সৌজন্যে

ঢাকা: ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের দেওয়া রায়ের  পর্যবেক্ষণ নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে মন্ত্রিসভা। এ রায়ে আদালতের অযাচিত, অনির্ধারিত ও আপত্তিকর বক্তব্যের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলতে মন্ত্রীদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

একইসঙ্গে রায়ে উল্লেখিত অযাচিত, অবান্তর ও আপত্তিকর বক্তব্য এক্সপাঞ্জ করতে আদালতের কাছে আবেদনের সিদ্ধান্ত হয়েছে মন্ত্রিসভার বৈঠকে।
 
সোমবার (০৭ আগস্ট) সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে নিয়মিত বৈঠক শেষে রায় নিয়ে দুই ঘণ্টা বিশেষ বৈঠক করে মন্ত্রিপরিষদ।

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বিশেষ বৈঠকে রায়ের কপি নিয়ে এসে এর সারসংক্ষেপ সবাইকে পড়ে শোনান। এরপর ১৫ জন সিনিয়র মন্ত্রী রায় নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বক্তব্য দেন। প্রধানমন্ত্রী সবার বক্তব্য শোনেন।
 
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘এতোদিন আমাদের হাতে রায়ের কপি ছিলো না বলে আমরা এ নিয়ে কথা বলিনি। এখন রায়ের কপি যেহেতু হাতে এসেছে, তাই মূল বিষয়ের বাইরে অন্যান্য বিষয় নিয়ে যেসব আপত্তিকর কথা বলা হয়েছে, তা নিয়ে জনমত তুলে ধরতে হবে’।

সব মন্ত্রীদের এ নিয়ে জনগণের সঙ্গে কথা বলে জনমত গড়ে তোলার পরামর্শ দেন তিনি।
 
বৈঠকে উপস্থিত একাধিক মন্ত্রী বাংলানিউজকে বলেন, বৈঠকে উপস্থিত প্রায় সবাই রায়ে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। কারণ, এ রায়ে তো এমন কেউ নেই, যাকে আঘাত করা হয়নি। আদালতের বিচার্য বিষয় ছিলো সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদ। কিন্তু অযাচিতভাবে চতুর্থ সংশোধনী থেকে শুরু করে সব বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন আদালত।
 
শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু সাংবাদিকদের বলেন, ‘৯৬ অনুচ্ছেদ বিচার করতে গিয়ে ১১৬ অনুচ্ছেদ নিয়েও কথা বলেছেন আদালত। রায়ে আদালত জাতীয় সংসদকে ‘অপরিপক্ক’ হিসেবে মন্তব্য করেছেন। সংসদ যদি অপরিপক্ক হয়, তাহলে সংসদ সদস্যরাও অপরিপক্ক’।

‘সেই অপরিপক্ক সংসদ সদস্যরা যে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করেছেন, তিনিও অপরিপক্ক। তাহলে অপরিপক্ক রাষ্ট্রপতির দ্বারা নির্বাচিত প্রধান বিচারপতি ও বিচারপতিরা কি? সংসদ যদি বিতর্কিত হয়, তাহলে তারা কি বিতর্কের বাইরে?’
 
তিনি বলেন, ‘৫ম সংশোধনীর রায় বাতিল করেছিলেন বিচারপতি খায়রুল হক। সেই সংশোধনীতে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল বিষয়টি ছিলো। তার মানে ৫ম সংশোধনী বাতিলের মাধ্যমে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলও বাতিল হয়ে যায়। প্রধান বিচারপতি সেই বাতিল বিষয়টি ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ে কিভাবে আনলেন!’

অন্য এক মন্ত্রী বলেন, ‘সংসদ যদি কোনো আইন করে এবং সে আইন যদি সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হয়, তাহলে সুপ্রিম কোর্ট তা বাতিল করতে পারেন। তবে সংবিধান সংশোধন বা রি-স্টোরের কোনো অধিকার আদালতের নেই’।
 
আইনমন্ত্রী বৈঠককে জানিয়েছেন, বিচার্যের বাইরে গিয়ে আপত্তিকর  বক্তব্য দিয়েছেন আদালত।
 
তবে বৈঠকে একাধিক মন্ত্রী সিলেটে দেওয়া অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের বক্তব্যকে সমর্থন করেছেন। এবং শেষ পর্যন্ত আদালতের সঙ্গে সমঝোতা না হলে সরকার জাতীয় সংসদে নতুন করে এ বিষয়ে আইন করতে পারে বলেও অভিমত দিয়েছেন।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৫ ঘণ্টা, আগস্ট ০৭, ২০১৭
আরএম/ এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।