ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

রেলস্টেশনে ‘কেবলমাত্র খাওয়ার পানির’ অপচয়!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪১৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১০, ২০১৭
রেলস্টেশনে ‘কেবলমাত্র খাওয়ার পানির’ অপচয়! কেবল খাওয়ার পানি হলেও তাতে হাত-মুখ ধোয়ায় মগ্ন। ছবি: জনি সাহা

রাজশাহী অভিমুখী ধুমকেতু এক্সপ্রেস থেকে: ‘এই পানি কেবলমাত্র খাওয়ার জন্য’, চোখের সামনে বড় হরফে এমন নির্দেশনা থাকলেও তাতে কারো কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। কল খুলে রেখে রূপচর্চায় যে পানিটা নষ্ট করা হচ্ছে পানের জন্য বিশুদ্ধ সে পানিটাও অপ্রতুল দেশের শতকরা ১৩ জন মানুষের কাছে।

জানা যায়, রেলে যাত্রীদের জন্য খাবার পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ রেলওয়ের সঙ্গে মোবাইল ফোন অপারেটর রবি রাজধানীর বিমানবন্দর রেলস্টেশনে পানির প্লান্ট স্থাপন করে ২০১২ সালে। প্লান্টের পাঁচ হাজার লিটার ধারণক্ষমতার পানির ট্যাংকি ঘণ্টায় ৪ হাজার লিটার পানযোগ্য পানির যোগান দিতে সক্ষম।

বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) সকালে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রেলস্টেশনে স্থাপিত ওই প্লান্টের সামনে দেখা যায়, কেবলমাত্র পানের জন্য এ পানি দিয়ে অধিকাংশ লোকই হাত-মুখ ধোয়ার কাজ সারছেন। অনেকে কল খোলা রেখে নিজেকে ‘রিফ্রেশ’ করে নিচ্ছেন। অনেকে আবার যাত্রার আগে এ পানি দিয়েই চুল-দাড়িতে শেষ প্রলেপটা মেরে নিচ্ছেন।

পানি পান করছেন বিমানবন্দরের যাত্রী-পথচারীরা।  ছবি: জনি সাহা
শুধু তাই নয়, নজরে আসলো একজনকে দাঁত ব্রাশ করতে দেখে। বিষয়টি একটু ব্যতিক্রম ঠেকায় হয়তো আশপাশের কেউ হবেন ভেবে এগিয়ে গিয়ে জানা গেলো, যশোর থেকে এসেছেন। তাই স্টেশনের কাজটা সেরে নিলেন। যশোরের এ যাত্রী ছাড়াও ১০ মিনিটের অবস্থানে আরো একজনকে এ পন্থা অবলম্বন করতে দেখা গেলা। ব্যাগ থেকে টুথপেস্টের পাতা বের করতে দেখে মনে হলো, যেনো প্রস্তুতি নিয়েই এসেছিলেন!

প্লান্টের পানির ট্যাংকের সঙ্গে তিনভাগে মোট ১৩টি কলের সংযোগ দেওয়া রয়েছে। যার মাঝখানের ৬টি পুরুষদের, ডানপাশের ৪টি মহিলাদের, ১টি প্রতিবন্ধীদের ও ২টি ওযুর জন্য নির্ধারিত। এ বিষয়েও দেখা গেলো লোকজনের মধ্যে অনীহা। পুরুষদের জন্য নির্ধারিত স্থান ফাঁকা থাকলেও ভিড় করছেন মহিলাদের স্থানে। আর ওযুর জন্য নির্ধারিত স্থানে কেউ কেউ কলের মুখ খুলে ময়লা পা ধোয়ার কাজ সারছেন।

এর মাঝখানেই একজনকে তিনটি দেড় লিটার পানি ধারণক্ষমতা সম্পন্ন তিনটি বোতলে পানি নিতে দেখে এগিয়ে গিয়ে জানা গেলো, পাশেই থাকেন। পরিবারের সদস্যদের খাওয়ার জন্য এ পানি নিচ্ছেন। পানি খুবই ভালো অভিমত দিলেন তিনি।
পানি বোতলে ভরছেন কয়েকজন, পাশে নির্দেশিকা।  ছবি: জনি সাহাপানি পানের জন্য প্রতিটি কলের সঙ্গেই স্টিলের ছিকলের মাধ্যমে একটি স্টিলের গ্লাস বেঁধে দেওয়া হয়েছে। যাতে পানি পানে কারো কোনো অসুবিধা না হয়।

কথা হয় পাশেই এক দোকানদারের সঙ্গে। বিনামূল্যে বিশুদ্ধ পানির এ সুবিধার কারণে তাদের বোতলজাত পানি বিক্রিতে কোনো ভাটা পড়ছে কিনা? উত্তরে তিনি বলেন, কতোজন আর ব্যবহার করে। যে বোতলজাত পানি ব্যবহার করে সে এটাই করবে। আর বোতল সঙ্গে না আনলে ট্রেনে ব্যবহারের জন্য তো বোতলজাত পানিই ব্যবহার করতে হবে।

নিজের জন্য এ ব্যবসায়ী এমন যুক্তি খাটালেও যাদের জন্য এ সুবিধা তারা যেন এ পানির যথাযথ ব্যবহার করেন এমনটাই প্রত্যাশা সবার।
 
বাংলাদেশ সময়: ১০১০ ঘণ্টা, আগস্ট ১০, ২০১৭
জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।