সামনে এগিয়ে জানা গেলো এটি ভরতখালী পশু হাট, তবে রাস্তার উপর বসেছে।
সঙ্গত কারণেই মঙ্গলবারের (১৫ আগস্ট) হাট রাস্তার উপর।
হাটে গবাদি পশু নিয়ে আসা লোকজনের কাছ থেকে জানা যায়, সপ্তাহের শনি ও মঙ্গলবার বসে ভরতখালী পশুর হাট। সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলে এ হাট। সড়কের উপরেই বসে? এমন প্রশ্নে তারা জানালেন, না, উল্টোদিকে বসে। তবে সেখানে সোমবার বন্যার পানি প্রবেশ করার বাধ্য হয়ে রাস্তার উপর হাট বসেছে।
তিনটি গরু নিয়ে হাটে এসেছেন গেরস্থ আয়েন। এর মধ্যে একটি গাভী। দাম হাঁকছেন ৫৫ হাজার টাকা। তার মতো এরকম কয়েকশ’ গেরস্থ হাটে গবাদি পশু নিয়ে লাইন ধরে দাঁড়িয়েছেন। মাত্রই হাট শুরু হয়েছে। এখনও ক্রেতা আসেনি। তবে গেরস্থরা হাজির হয়েছেন। তাদের পদচারণায় গমগম করছে পুরো হাট এলাকা।
একটু সামনে এগিয়ে যেতেই দুইমণ মাংস হবে দাবি করে এমন একটি গরুর দাম ৩৮ হাজার টাকা চাইছেন বিক্রেতা বাশার মিয়া। তিনিও তিনটি গরুর এনেছেন। সঙ্গে রয়েছে বকনা বাছুর।
তবে মূল আর্কষণটা নজরে এলো খানিক বাদে। সবেমাত্র গরু নিয়ে বিক্রেতার লাইনে দাঁড়িয়েছেন পরশুরাম। শারিরীক গড়ন দেখেই নজরে এলো সাদা-মইষা রংয়ের সংমিশ্রণের গরুটা। দড়ি দিয়ে বাঁধা গরুটাকে দুইপাশ থেকে দু’জন ধরে রেখেছেন যেনো, গুঁতে দিয়ে কারো ক্ষতি না করতে পারে।
গেরস্থ পরশুরামের কাছে দাম জানতে তিনি এক লাখ ১০ হাজার টাকা হাঁকিয়ে বসেন। গরুর বয়স কতো জানতে চাইলে বলেন, দুই দাঁত, মানে দুই বছর বয়স। তবে কত কেজি মাংস হবে এ বিষয়ে কোনো উত্তর ছিলোনা তার।
এর খাবারের বিষয়ে জানতে চাইলে পরশুরাম বলেন, দিনে তিন বেলা সয়ম ধরে খড়, ভূষি, খৈল খাওয়ানো হয়। সঙ্গে ঘাসসহ ভাতের মাড় দেওয়া হয়।
প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে এ হাটে গরু ছাড়াও খাসি, ভেড়া পাওয়া যায়। ১০ কেজি মাংস হবে দাবি করে বিক্রেতা মামুন একটি খাসির দাম চাইছেন সাড়ে ৬ হাজার টাকা।
জানা যায়, প্রতি বছর এ হাট ইজারা নেওয়া হয়। এ বছর ইজারা নেওয়া হয়েছে কোটি টাকার বেশি মূল্যে। হাটে স্থানীয়রা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে বেপারি আসেন। আসন্ন কোরবানি ঈদ ঘিরে ভরতখালী হাটে লোকজনের বেশ ভিড় দেখা গেলো।
হাটে গরু প্রতি ক্রেতাকে (গেরস্থ হলে) ৫শ’ টাকা দিতে হয়, আর বেপারির জন্য এ হার সাড়ে ৪শ’ টাকা। খাসি প্রতি ক্রেতাকে ২শ’ টাকা, বিক্রেতাকে ৫০ টাকা ইজারা দেওয়ার নিয়ম রয়েছে ভরতখালী পশুর হাটে।
এদিকে এ হাট ঘিরে জমে ওঠেছে অন্যান্য ব্যবসা। বিশেষ করে ভ্রাম্যমাণ হোটেলে চলে রমরমা ব্যবসা। এতে খাবারের মান নিম্ন হলেও পাওয়া যায় না বসার স্থান। মূলত হাটে আসা লোকজনই এর প্রধান ক্রেতা।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১১ ঘণ্টা, আগস্ট ১৬, ২০১৭
জেডএস/এসএইচ