ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

রোহিঙ্গা ইস্যুতে নিবিড়ভাবে কাজ করবে বাংলাদেশ-তুরস্ক

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৫৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০১৭
রোহিঙ্গা ইস্যুতে নিবিড়ভাবে কাজ করবে বাংলাদেশ-তুরস্ক যৌথ বিবৃতি দেন দুই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (ডানে) ও বিনালি ইয়ালদিরিম। ছবি: পিআইডি

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে: রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বাংলাদেশ ও তুরস্ক নিবিড়ভাবে কাজ করে যাবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেলে প্রধানমন্ত্রী তার কার্যালয়ে সফররত তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী বিনালি ইয়ালদিরিমের সঙ্গে যৌথ বিবৃতি প্রদানকালে এ কথা জানান।  

এর আগে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শিমুল হলে একান্ত বৈঠকে বসেন শেখ হাসিনা ও ইয়ালদিরিম।

একান্ত বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের চামেলী হলে স্ব স্ব দেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে মিলিত হন তারা। এরপর দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে করবী হলে বাংলাদেশ ও তুরস্কের মধ্যে দু’টি সমঝোতা স্মারক সই হয়।

প্রধানমন্ত্রী তার বিবৃতিতে বলেন, বাংলাদেশ ও রোহিঙ্গাদের প্রতি তুরস্কের অব্যাহত সহযোগিতার জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট রজব তৈয়্যব এরদোগানকে ধন্যবাদ। তুরস্কের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট দ্বিপাক্ষিক ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।  

‘আলোচনায় মিয়ানমারের রোহিঙ্গা সংকটসহ দু’দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট দ্বিপাক্ষিক ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বিষয়ে নিবিড়ভাবে কাজ করতে এবং পরস্পরকে সহযোগিতা চালিয়ে যেতে আমাদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছি। ’

বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, প্রতিরক্ষা, শিক্ষা, পর্যটন, যোগাযোগসহ প্রধান প্রধান খাতে নিজেদের সহযোগিতা জোরদারের বিষয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। বিবৃতি দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (ডানে), করতালি দিচ্ছেন তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী বিনালি ইয়ালদিরিম।  ছবি: পিআইডিদুই প্রধানমন্ত্রীর যৌথ বিবৃতির আগে বাংলাদেশ ও তুরস্কের মধ্যে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই), শিল্প উৎপাদন, মান নির্ধারণ, সক্ষমতা বৃদ্ধি, অভিজ্ঞতা বিনিময় ও দক্ষতা উন্নয়নের বিষয়ে দু’টি সমঝোতা স্মারক সই হয়। প্রধানমন্ত্রী তার বক্তৃতায় এ দু’টি স্মারকের কথাও উল্লেখ করেন।

দু’দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও পারস্পরিক স্বার্থে একসঙ্গে কাজ করার বিষয়ে বাংলাদেশ ও তুরস্ক একমত জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা আশা করি, আমাদের উন্নয়ন যাত্রায় বাংলাদেশের পাশে থাকবে তুরস্ক।

শেখ হাসিনার পর বিবৃতি দেন তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী ইয়ালদিরিমও। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও এ অঞ্চলের সঙ্গে সম্পর্ককে আরও সংহত ও ভ্রাতৃত্বপূর্ণ করা তুরস্কের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তুরস্কে সেনা অভ্যুর্থানের ব্যর্থ চেষ্টার সময় গণতন্ত্র ও তুরস্ক সরকারের পাশে বাংলাদেশের অবস্থানের জন্য ধন্যবাদ জানাই।

নিজের সফর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও সামনে এগিয়ে নিতে এসেছি। সেই সঙ্গে রোহিঙ্গাদের দুর্ভোগ এবং তাদের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে এসেছি।

তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের প্রশংসা করে বলেন, বাংলাদেশের মতো অগ্রগতিশীল দেশ ২০২১ সালের লক্ষ্য অর্জনের দিকে এগোচ্ছে। ফলে বাংলাদেশের লক্ষ্যপূরণে তুরস্ক কিভাবে পাশে থেকে সহযোগিতা করতে পারে, তা দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় উঠে এসেছে।

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে ঢাকার পাশে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করে তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে আঙ্কারার সম্ভাব্য সহযোগিতা নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। এক্ষেত্রে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের তাৎক্ষণিক সহযোগিতা এবং কূটনৈতিকভাবে দীর্ঘমেয়াদী সমাধানের পদক্ষেপের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানাই।

রোহিঙ্গা সমস্যাটির রাজনৈতিক সমাধান না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশের ওপর যে ১০ লাখ মানুষের চাপ রয়েছে, তার কিছুটা ভাগীদার তুরস্ক হতে চায় জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের চাহিদা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করতে প্রস্তুত তুরস্ক।

তিনি জানান, রোহিঙ্গা সংকটসহ দ্বিপাক্ষিক ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বিষয়ে বাংলাদেশের প্রতি তুরস্কের সহযোগিতা থাকবে।  

রোহিঙ্গা সংকট সমাধান না হওয়া পর্যন্ত জাতিসংঘসহ বিশ্ব সম্প্রদায়কে বাংলাদেশের পাশে থাকারও আহ্বান জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০১৭
এমইউএম/এইচএ/

** শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে বিনালি ইয়ালদিরিম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।