বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৫টা থেকে জেলা শহরের সকল প্রকার ওষুধের দোকান বন্ধ করে ধর্মঘট শুরু করেন ব্যবসায়ীরা।
জানা যায়, গাইবান্ধা সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তানজিমুল ইসলামসহ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ এনে ধর্মঘটের সিন্ধান্ত নেয় ওষুধ ব্যবসায়ীরা।
এদিকে, রাত পৌনে ৯টা পর্যন্ত ধর্মঘট চলমান থাকায় ওষুধ না পেয়ে জরুরী রোগীসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা সাধারণ মানুষ ভোগন্তিতে পড়েছেন।
আর কে মেডিকেল ট্রেডিংয়ের স্বত্বাধিকারী রুহুল আমিন বাংলানিউজকে জানান, দুপুরে আটোরিকশা করে আসা এক নারী দোকানের সামনে অটোচালককে গালমন্দ করছিলেন। তাকে গালমন্দ করতে নিষেধ করলে তর্কবিতর্ক হয়। পরে ওই নারী ফোন করে কয়েকজন ছেলেকে ডেকে আনেন। এসময় তারা দোকানে হামলার চেষ্টা করলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে উভয়পক্ষকে থানায় ডাকে। পরে বিকেলে ওষুধ ব্যবসায়ীদের নিয়ে তিনি থানায় যাওয়ার পথে জেলা পরিষদ মোড়ে তানজিমুলের নেতৃত্বে কয়েকজন যুবক তাদের ওপর হামলা করে। এতে জেলা ওষুধ ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম আহত হন। আহত সাইফুল ইসলামকে গাইবান্ধা আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ওষুধ ব্যবসায়ীদের ওপর হামলা ও ওই নারীর কাছ থেকে এক লাখ টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার মিথ্যা অভিযোগের প্রতিবাদ ও জড়িতদের গ্রেফতারে দাবিতে ধর্মঘট পালন করেছেন ব্যবসায়ীরা। এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে সদর থানায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে।
গাইবান্ধা জেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক আবদুল লতিফ আকন্দ বাংলানিউজকে বলেন, দোকানের সামনে অটোরিকশা থেকে নামায় মালিক রুহুল আমিন ছাত্রলীগ নেতা তানজিমুলের বোনকে লাঞ্ছিত করেন। খবর পেয়ে তানজিমুল ওষুধের দোকানে গিয়ে ঘটনা জানতে চাইলে রুহুল আমিন তাকেও লাঞ্ছিত করেন। এ ঘটনায় ব্যবসায়ীর ওপর ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। মূলত লাঞ্ছিতের ঘটনা ভিন্নখাতে নিতে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে হামলা ও চাঁদা দাবির মিথ্যা অভিযোগ তুলেছেন ব্যবসায়ীরা।
এদিকে, ছাত্রলীগ নেতা তানজিমুল ও তার বোনকে লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে সন্ধ্যা ৭টার দিকে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। মিছিলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ছাড়াও আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেয়।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খাঁন মো. শাহরিয়ার বাংলানিউজকে জানান, দোকানের সামনে নামাকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগ নেতাসহ তার বোন লাঞ্ছিতের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় উভয়পক্ষকে থানায় ডাকা হয়েছিলো। তবে হামলা ও আহতের বিষয়টি তার জানা নেই। রাত পৌনে ৮টা পর্যন্ত কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। এছাড়া এ ঘটনায় ব্যবসায়ী ধর্মঘট ও ছাত্রলীগের বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। শহরে যেকোন অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ টহল জোরদার করা হয়েছে।
গাইবান্ধা ওষুধ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আবদুর রশিদ বাংলানিউজকে বলেন, ঘটনার প্রতিবাদ ও দোষীদের বিচার দাবিতে ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আসামিদের গ্রেফতার করা না হলে বৃহত্তর কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২১২৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০১, ২০১৮
এনটি
