রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিবির যুগ্ম কমিশনার আব্দুল বাতেন এ দাবি করেন।
শনিবার (১০ জানুয়ারি) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগে আটক ১৪ জনের বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
আটকরা হলেন- রাহাত ইসলাম, সালাহউদ্দিন, সুজন, জাহিদ হোসেন, সুফল রায়, আলামিন, সাইদুল ইসলাম, আবির ইসলাম নোমান, আমান উল্লাহ, বরকত উল্লাহ, আহসান উল্লাহ, শাহাদাত হোসেন, ফাহিম ইসলাম ও তাহসিব রহমান। এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি ল্যাপটপ, ২৩টি মোবাইল ও ২ লাখ ২৪শ টাকা উদ্ধার করা হয়।
আব্দুল বাতেন বলেন, প্রশ্নপত্র সিলগালা থেকে শুরু করে কেন্দ্র পর্যন্ত সাধারণত ফাঁসের কোনো সুযোগ নেই। কেন্দ্রে যাওয়ার পর পরীক্ষা শুরু হওয়ার ৩০-৪০ মিনিট আগে কেন্দ্র সংশ্লিষ্টদের সহায়তায় প্রশ্নফাঁস হয়। তারা মোবাইলে ছবি তুলে বাইরে পাঠান।
'আমি শিওর, এই প্রশ্ন ফাঁসের পর যদি কেউ কেন্দ্র থেকে শিক্ষার্থীকে সহায়তা না করে তাহলে ওই শিক্ষার্থীর বেনিফিট পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। কারণ তখন শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার হলেই থাকে। দাবি করেন আব্দুল বাতেন।
যেভাবে প্রচার হয় এবং রিউমার ছড়ানো হয় সে তুলনায় প্রশ্নফাঁসের ব্যাপকতা অনেক কম বলেও দাবি করেন তিনি।
আসলে কার মাধ্যমে প্রশ্নফাঁস হচ্ছে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কেন্দ্রের শিক্ষক থেকে ক্লার্ক পর্যন্ত যে কারো মাধ্যমে এটা হতে পারে। এ বিষয়ে আমরা এখনো নিশ্চিত নই।
আটকদের বিষয়ে তিনি বলেন, এরা সাধারণত 'প্রশ্নফাঁস করবোই' এমন ঘোষণা দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন গ্রুপ চালু করে। এমনকি বিভিন্ন সাবজেক্টভিত্তিক গ্রুপ চালু রয়েছে। তারপর প্রতি গ্রুপে হাজার হাজার পরীক্ষার্থীকে যুক্ত করা হয়।
‘পরীক্ষার দু-একদিন আগে থেকে এসব গ্রুপে বিভিন্ন ভুয়া প্রশ্নপত্র ছাড়া হয়। এসব দেখিয়ে গ্রুপে রিউমার ছড়িয়ে আর্থিক লেনদেন করে। কিন্তু কেন্দ্র থেকে পরীক্ষা শুরু হওয়ার ৩০-৪০ মিনিট আগে আসল প্রশ্নপত্র ফাঁস করা হয়। হাজার হাজার কেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে কোন কেন্দ্র থেকে এ ঘটনা ঘটে তা শনাক্ত করা কঠিন। একেক সময় একেক জায়গা থেকে ফাঁসের ঘটনা ঘটে। তাই মূল হোতাদের গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। তবে তাদের খুঁজে পেতে চেষ্টা চলছে ‘
পরীক্ষা শুরুর অনেক আগেই হুবহু প্রশ্ন পাওয়া যাচ্ছে। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ডিবির এই কর্মকর্তা বলেন, আমরা যা পেয়েছি, তার সঙ্গে প্রকৃত প্রশ্নের মিল খুবই কম। তারপরেও আমরা চেক করে দেখবো।
ডিবির তদন্তে এখনো শিক্ষা মন্ত্রণালয় কিংবা শিক্ষা বোর্ডের কারো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি দাবি করে তিনি বলেন, যতটুকু জানি শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। সেই কমিটি যখন প্রতিবেদন দেবে তখন বিষয়টি বোঝা যাবে।
বিকাশে লেনদেন ও কললিস্টের সূত্র ধরে প্রায় ৩শ ফোন নম্বর পাওয়া গেছে। এগুলো তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
ডিবির তদন্ত অনুযায়ী কেন্দ্রের সংশ্লিষ্ট সবার মোবাইল ব্যবহার নিষিদ্ধ করা সম্ভব হলে প্রশ্নফাঁস অনেকাংশে রোধ করা সম্ভব হবে বলে মনে করেন আব্দুল বাতেন।
নওগাঁয় প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের ৭ সদস্য আটক
বাংলাদেশ সময়: ১২৫০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০১৮/আপ: ১৪৩০ ঘণ্টা
পিএম/এএ