খবর পেয়ে রোববার (২৬ আগস্ট) দুপুর দেড়টার দিকে উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের কর্ণপুর গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে ওই স্কুলছাত্রের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
ওই গ্রামের বাসিন্দা খোরশেদ আলীর ছেলে নিহত পিয়াস চল্লিশ কাহনিয়া হাফিজ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণিতে পড়তেন।
পিয়াসের চাচা আব্দুল হাতিম বাংলানিউজকে জানান, শনিবার (২৫ আগস্ট) রাত ৮টার দিকে স্থানীয় ফকিরের বাজার সংলগ্ন কান্দাপাড়া গ্রামের ফজলুর রহমানের ছেলে রুবেল মিয়া পিয়াসকে ডেকে নিয়ে যান। ওই সময় রুবেলের ছোট বোনের গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান চলছিলো।
‘এক পর্যায়ে রাত সাড়ে ১২টার দিকে কর্ণপুরের পঙ্কজ মজুমদার ফকিরের বাজারে পিয়াসকে অচেতন হয়ে পড়ে থাকতে দেখেন। বিষয়টি আশপাশের লোকজনকে জানানো হলে তাকে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক জিল্লুর রহমানের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে স্যালাইন দেওয়া হয়। ’
পিয়াসের আরেক চাচা ফজলুর রহমান বলেন, জিল্লুর অজ্ঞান অবস্থায় পিয়াসকে স্যালাইন পুশ করলে কোনো উন্নতি চোখে পড়েনি। পরে তাকে তাৎক্ষণিক নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
কিন্তু পিয়াসের অবস্থা অবনতি দেখে সেখানকার চিকিৎসকরা ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। সেখানে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা পিয়াসকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে ঘটনার পরপরই সন্দেহভাজন ঘাতক রুবেল মিয়া, তার ভাই নজরুল ইসলাম এবং জুয়েল বাড়ি ছেড়ে আত্মগোপন করেছেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, সন্দেহভাজন ঘাতক নজরুল, রুবেল ও তার পরিবারের সদস্যরা গ্রামের খেটে খাওয়া মানুষকে মারধর করার অভিযোগ রয়েছে। তারা মূলত এলাকায় সাধারণ মানুষের কাছে সুদে টাকা দেন। টাকা ফেরত দিতে দেরি কিংবা সুদ কম দিতে চাইলে মানুষকে মারধর করেন নজরুল ও তার ভাইয়েরা।
এদিকে নজরুল-রুবেলদের বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। বিয়ে বাড়িতে বেড়াতে আসা রুবেলের আত্মীয় নিপা আক্তার ও বোনের স্বামী মুজিবুর রহমান বাংলানিউজে বলেন, ‘বিয়ে বাড়িতে জেনারেটরের তারে জড়িয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে পিয়াসের মৃত্যু হয়েছে। ’
নেত্রকোনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) এসএম আশরাফুল আলম বাংলানিউজকে বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। পোস্ট মর্টেম রিপোর্ট পাওয়ার পর এ বিষয়ে নিশ্চিত করে বলা যাবে।
মরদেহ দেখতে আসা স্থানীয় ৭ নং রায়পুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান রাজু জানান, তাকে সন্দেহভাজন ঘাতক নজরুল তার মোবাইল ফোনে এসএমএস পাঠিয়ে বিষয়টির মীমাংসা করে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন। এক্ষেত্রে তিনি নিহতের পরিবারকে ১০ লাখ টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দেন।
বারহাট্টা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ বাংলানিউজকে জানান, পিয়াসের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৫০২ ঘণ্টা, আগস্ট ২৬, ২০১৮
এনটি/