শুক্রবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাত ১১টা ৫ মিনিটে রাজধানীর ইবনে সিনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ‘সোনালী কাবিন’ খ্যাত আল মাহমুদ। তার বয়স হয়েছিল ৮২ বছর।
আল মাহমুদের প্রকৃত নাম মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদ। ১৯৩৬ সালের ১১ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মোড়াইল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। দুই ভাই ও তিন বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন বড়। স্থানীয়দের কাছে আল মাহমুদ পরিচিত ছিলেন পিয়ারু মিয়া নামে।
তার ছোট ভাই মীর ফরহাদ হোসেন মারা গেছেন আরও আগে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কবি আল মাহমুদের পৈতৃক ভিটা আছে, কিন্তু নিজের কোনো ঘর নেই। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যখন আসতেন, প্রয়াত ছোট ভাইয়ের বাসায়ই উঠতেন।
কবির মৃত্যুর খবরে শোক নেমে আসে তার জন্মজেলা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়ও। আল মাহমুদের স্মৃতিচারণ করে তার বাল্যবন্ধু ভাষাসৈনিক মুহাম্মদ মুসা বাংলানিউজকে বলেন, ‘ছোটবেলায় খেলার প্রতি তেমন আগ্রহ ছিল না আল মাহমুদের। তবে বই পড়ার প্রতি খুব আগ্রহ ছিল তার। যেখানেই যেতো শুধু বই পড়তো। আল মাহমুদ ব্রাহ্মণবাড়িয়া এলে যেখানে যেতো আমাকেও সঙ্গে নিয়ে যেতো। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যতো কালচারাল অনুষ্ঠান হতো, আমরা একসঙ্গে করেছি। ’
বন্ধুর মৃত্যুতে শোকাহত মুসা বলেন, রবীন্দ্রনাথের পর বাংলা সাহিত্যে এমন কবি আর জন্ম নেবে না। অনেকেই আল মাহমুদের বইয়ের ওপর ডক্টরেট ডিগ্রিও নিয়েছেন।
কথা হয় আল মাহমুদের ভাতিজা মীর আকরামের সঙ্গে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘কাকা মাঝে মাঝে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নিতে আসতেন, কিন্তু পৈতৃক ভিটায় থাকেননি প্রায় এক যুগের বেশি সময়। অসুস্থতার জন্য প্রায় আট বছর তিনি বাড়িতে আসতে পারেননি। ’
মীর আকরাম জানান, আল মাহমুদের পৈতৃক ভিটায় আগের দিনের একটি চৌচালা ঘর ছিল। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গেলে ওই ঘরে থাকতেন।
মীর আকরাম বলেন, ‘সেই ঘরটি ভেঙে ভবন করা হয়। এতে মনে অনেক কষ্ট পেয়েছেন তিনি। এরপর থেকেই তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া আসা কমিয়ে দিয়েছিলেন। ’
আল মাহমুদের ভাতিজা আরও বলেন, ‘স্থানীয়রা তাকে পিয়ারু মিয়া বলে ডাকতেন। নিজ বাড়িতে যখন আসতেন তখন তার ভক্ত ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের ভিড় লেগেই থাকতো। তিনি সবার সঙ্গে গল্প করতেন। দিনের বেশির ভাগ সময় বসে থাকতেন বাড়ির সামনের পুকুর ঘাটে। অনেক সময় বড়শি দিয়ে মাছও শিকার করতেন তিনি। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১৯
আরএ/এইচএ/