অভিজাত হোটেলের সীমানার মধ্যে কেউ কেউ করেছেন ইফতার মেলা ও ইফতার বাজার। এবার খুলনা সিটি করপোরেশন ফুটপাতে ইফতার সামগ্রী নিয়ে কাউকে বসতে না দেওয়ায় এসব হোটেল, রেস্তোরাঁ ও ইফতার মেলায় ভিড় করছেন সব শ্রেণীর মানুষ।
মঙ্গলবার (৭ এপ্রিল) প্রথম রমজানের দিন শহরের অভিজাত হোটেল ঘুরে এমন দৃশ্য দেখা গেছে।
মৌসুমি ব্যবসায়ীদের রমজানে ফুটপাতে বসতে না দেওয়ায় কিছুটা বেশি দামে হোটেল-রেস্টুরেন্ট থেকে ইফতারি কিনতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন শহরের সাত রাস্তার মোড়ে ইফতারি কিনতে আসা গোবরচাকা এলাকার বাসিন্দা মুজাহিদ।
তিনি বলেন, হোটেল-রেস্টুরেন্টগুলোতে এবার ইফতার সামগ্রীর দাম কম নেওয়া উচিত। ফুটপাতে বিক্রেতা না থাকায় এদের তো ক্রেতা বেড়েছে। তাতে তো একটু দাম কমাতে পারতো। কিন্তু তা না করে আরো বেশি দাম নিচ্ছে।
হোটেল ক্যাসল সালামে চার ধরনের ইফতারের প্যাকেজ রয়েছে। এরমধ্যে মোগল প্ল্যাটারে রয়েছে শরবত (লেমন মিন্ট), ক্যাসিউনাট খেজুর, ফ্রুটস সাসলিক, শশা, কাঁচা ছোলা, ছোলা ভুনা, পেয়াজু, বেগুনি, মরিচা, মুড়ি, জিলাপি, মাটন হালিম/ফালুদা, এরাবিক মিষ্টি, মিনারেল ওয়াটার (৫০০ মি. লি.)। ১৪ আইটেমের প্রতিপ্লেট ৩৫০ টাকা। এরাবিক প্ল্যাটারে রয়েছে শরবত (লেমন মিন্ট), ক্যাসিউনাট খেজুর, ফুটস সাসলিক, হামুস, লেবানিজ রাইস, ল্যাম্ব কোফতা কাবাব, মরোক্কান চিকেন কাবাব, পিটা ব্রেড, এরাবিক মিষ্টি, ফালুদা, মিনারেল ওয়াটার (৫০০ মি. লি.)। ১০ আইটেমের প্রতিপ্লেট ৩৭৫ টাকা।
চিকেন বিরিয়ানি প্ল্যাটারে রয়েছে শরবত (লেমন মিন্ট), ক্যাসিউনাট খেজুর, ফুটস সাসলিক, শশা, কাঁচা ছোলা, জিলাপি, মাটন হালিম/ফালুদা, চিকেন বিরিয়ানি, এরাবিক মিষ্টি, মিনারেল ওয়াটার (৫০০ মি. লি.)। ১০টি আইটেমের প্রতিপ্লেট ৪৫০ টাকা।
শাহী মোগল প্ল্যাটারে রয়েছে শরবত (লেমন মিন্ট), ক্যাসিউনাট খেজুর, ফুটস সাসলিক, শশা, কাঁচা ছোলা, ছোলা ভুনা, পেয়াজু, বেগুনি, মরিচা, মুড়ি, জিলাপি, চিকেন, বিরিয়ানি, ফালুদা, এরাবিক মিষ্টি, মিনারেল ওয়াটার (৫০০ মি. লি.)। ১৫টি আইটেমের প্রতিপ্লেট ৫৯৫ টাকা।
এ হোটেলের ইফতার মেলার মেনুতে ৫০ এর অধিক মেনুর ইফতারি রয়েছে। এরমধ্যে ডেজার্টে রয়েছে ফুটস ১৪৫/৩৫০ টাকা, ফালুদা ৬৫ টাকা, পাটিসাপটা পিঠা ৩৫ টাকা, চিজ কুনাফা ২৫ টাকা, কুনাফা আশাটা ২৫ টাকা, কাটায়েট আশাটা ২৫ টাকা, কাটায়েট ফিবি ২৫ টাকা, লায়েলা লেবনান ৫০ টাকা, উমালী ১৫০ টাকা, আইস ই সাড়াইয়া ২৫ টাকা, বসবোসা ২৫ টাকা, লুকমা-তি-কাদী ২৫ টাকা, জয়নাব ফিংগারস ২৫ টাকা, বালাইল সাম ২৫ টাকা, বাকলাভা ২৫ টাকা, চকলেট ডেট ৩০ টাকা।
হোটেল ক্যাসল সালামে ছাড়া খুলনার আর কোথাও ইফতার সামগ্রীতে এরাবিক কর্নারের স্পিলিট গ্রিল চিকেন (হোল) ৫৫০ টাকা, রোস্টেড মাটন লেগ (৪০০ টাকা) ও স্কচ অ্যাগ (৬৫ টাকা) পণ্য পাওয়া যাবে না বলে দাবি করেন হোটেলের অপারেশনস ম্যানেজার আজম মালিক। তিনি বলেন, প্রথম দিনেই আমরা ক্রেতাদের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি।
হোটেল র্যায়েলের ইফতার বাজারে প্রায় ৪১ ধরনের ইফতার সামগ্রী রয়েছে। এছাড়া রয়েছে ইফতারি রেডি প্লেট। যারমধ্যে রয়েছে এক গ্লাস শরবত, দুই পিস খেজুর, এক টুকরা করে মালটা, আপেল ও পেয়ারা, ৫০ গ্রাম ছোলা, ৩০ গ্রাম মুড়ি, এক পিস পেয়াজু, এক পিস বেগুনি, এক পিস আলুর চপ, এক পিস চিকেন ফ্রাই, এক পিস পাটিসাপটা পিঠা, এক পিস শাহী জিলাপি, পরিমাণ মতো কাঁচা ছোলা ও শশা, এক কাপ হালিম বা ফালুদা, ৫০০ মিলির এক বোতল পানি, এক পিস পাপড়। যার মূল্য ৪৭০ টাকা। তবে ১৫ শতাংশ ভ্যাট + পাঁচ শতাংশ সার্ভিস চার্জ, ২০ শতাংশ ডিসকাউন্টের পরে প্যাকেজ মূল্য ৪৩০ টাকা। হোটেল র্যায়েলে ডিনার ও ইফতারি বক্সের ব্যবস্থা রয়েছে।
হোটেল র্যায়েল ইন্টারন্যাশনালের ম্যানেজার নাঈমুর রহমান হিরা বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিবারের মতো এবারো আমরা রকমারি ইকতারের আয়োজন করেছি। রেস্টুরেন্টের নিরিবিলি পরিবেশে ইফতারি সেট দ্বারা ইফতারি করার সু-ব্যবস্থা করা হয়েছে। যা বিভিন্ন প্রকার রকমারি, নির্ভেজাল ও হালাল খাদ্য সামগ্রীর সমাহারে প্রস্তুত।
এছাড়া ইফতারি পার্টির সু-ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি আমাদের ইফতারি বাজার থেকে বিভিন্ন প্রকার ইফতারি সামগ্রী পরিবারের জন্য কেনার ব্যবস্থা রয়েছে।
অনুরূপভাবে অভিজাত হোটেল সিটি ইনেও রকমারি ইফতারির আয়োজন করা হয়েছে। খুচরা ইফতার সামগ্রী কেনার পাশাপাশি প্যাকেজ ও ইফতার পার্টির ব্যবস্থা রয়েছে এখানে।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের কেওড়া ক্যাফে অ্যান্ড রেস্টুরেন্টেও স্পেশাল ইফতারের আয়োজন করা হয়েছে। এখানের রেডি প্লেটের ইফতারির চাহিদা বেশি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরাই এখানকার প্রধান ক্রেতা বলে জানান রেস্টুরেন্টের মালিক শরিফুল ইসলাম হিরণ।
এছাড়া শহরের সাত রাস্তার মোড়ে বনফুলসহ বেশ কয়েকটি রেস্টুরেন্টে ইফতার সামগ্রীর পসরা বসানো হয়েছে। স্বল্পমূল্যে প্যাকেজের ব্যবস্থাও রয়েছে এসব জায়গায়।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৭ ঘণ্টা, মে ০৭, ২০১৯
এমআরএম/আরবি/