ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বাইরে কারখানা বন্ধের নোটিশ, ভেতরে চলছে উৎপাদন!

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৩৩ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০১৯
বাইরে কারখানা বন্ধের নোটিশ, ভেতরে চলছে উৎপাদন! পানি উৎপাদনের কারখানা। ভিতরে-বাইরে দুরকম চিত্র

ঢাকা: কারখানার বাইরে প্রধান ফটকে তখনও সাঁটানো বিএসটিআইর নির্দেশনা মোতাবেক কারখানা বন্ধ রাখার জন্য নোটিশ। কিন্তু ভেতরে চলছে ‘বিশুদ্ধ পানি’ উৎপাদন ও জারে ভরে বাজারজাত করার প্রক্রিয়া।

মঙ্গলবার (১৪ মে) রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর ধলপুরে পানি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান রিদম পিওর ড্রিংকিং ওয়াটার কারখানায় গিয়ে দেখা যায় এমন দৃশ্য।

 কারখানায় ঢুকতেই প্রধান ফটকে বিএসটিআর নোটিশ।

যেখানে লেখা ‘...নির্দেশ মোতাবেক কারখানায় পানি উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। কারখানার উন্নয়ন কাজ সমাপ্ত হলে বিএসটিআইর নির্দেশনা মোতাবেক কারখানা পুনরায় চালু করা হবে। ’

বাইরে নোটিশ ও ভেতরে পানি উৎপাদনের এমন দৃশ্য দেখে খটকা লাগে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাজার মনিটরিং টিম ও সঙ্গে উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীদের। আশপাশের কয়েকজনকে জিজ্ঞেস করতেই পরিষ্কার হয় বিষয়টি।

কারখানার আশপাশের প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মাসখানেক আগে বিএসটিআই এসে প্রতিষ্ঠানটির লাইসেন্স সাময়িক স্থগিত করে কারখানার লোকজনদের দিয়েই এ নোটিশটি টাঙায়। কিন্তু তারপরেও ব্যবসা পরিচালনা করে যাচ্ছে জনৈক আইরিন নাহার পারভিনের মালিকানাধীন এ প্রতিষ্ঠানটি।  

প্রতিষ্ঠানটির কাগজপত্র থেকে জানা যায়, গতবছরের জুনে মেয়াদ শেষ হয় বিএসটিআইর লাইসেন্সের। তবুও থেমে নেই তাদের কার্যক্রম। এছাড়াও পানি বিশুদ্ধকরণের জন্য ব্যবহৃত সিলভার নাইট্রেট নামে একটি রাসায়নিক পদার্থ পায় মনিটরিং টিম। তবে সেটির গায়ে উৎপাদনের তারিখ বা মেয়াদ সম্পর্কিত কোনো লেবেল পাওয়া যায়নি।  

এরপর কারখানার টেকনিশিয়ানকে বাজারজাতকরণের জন্য রাখা পানিভর্তি একটি জার আনতে বলেন মনিটরিং টিমের প্রধান ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মাসুম আরেফিন। নির্দেশনা থাকে যে, ঠিক যেভাবে জার বাজারে পাঠানো হয় ঠিক সেভাবেই যেন জারটি নিয়ে আসা হয়। টেকনিশিয়ানের নিয়ে আসা জারে ছিল না কোনো ধরনের উৎপাদনের তারিখ ও মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ সম্বলিত লেবেল।  

এসব অনিয়মের কারণে প্রতিষ্ঠানটিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে মনিটরিং টিম। এ বিষয়ে মাসুম আরেফিন বলেন, কারখানাটি পরিচালনা করার কোনো সুযোগ নেই। কারণ বিএসটিআই সে আদেশ দিয়ে গেছে। এছাড়াও তাদের লাইসেন্সের মেয়াদ নেই। যেসব জারে পানি বাজারজাত করা হয় সেগুলোতে কোনোলেবেল নেই। এসব কিছুর পরেও আমরা একটি রাসায়নিক পদার্থ পেয়েছি, এটা দিয়ে পানি বিশুদ্ধ করা হয় বলে দাবি করছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সেটির গায়েও কোনোলেবেল নেই। শুধু লেখা এটা ভারতে উৎপাদিত হয়েছে। কবে তৈরি হয়েছে আর কবেই বা তার মেয়াদ শেষ হবে, সেসব কিছুই লেখা নেই। তাই এভাবে তৈরি করা পানি মানবদেহের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৮ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০১৯
এসএইচএস/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।