ঢাকা, শনিবার, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ইতালি যাওয়ার পথে না ফেরার দেশে ফরিদপুরের ৩ যুবক

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২০০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৯
ইতালি যাওয়ার পথে না ফেরার দেশে ফরিদপুরের ৩ যুবক

ফরিদপুর: মানবপাচার চক্রের প্রলোভনে পড়ে সমুদ্রপথে ইতালি যাওয়ার সময় ফরিদপুরের তিন যুবকের মৃত্যু হয়েছে। 

তারা হলেন- সদর উপজেলার ডোমরাকান্দির সায়েম মোল্লা, সালথা উপজেলার মাঝারদিয়া গ্রামের সেলিম উদ্দিন ও সানি মাতব্বর।

এদের মধ্যে সায়েম ও সেলিমের মরদেহ রোববার দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে দেশে নিয়ে আসা হয়েছে।

অপরদিকে সানির মরদেহ আগামী সপ্তাহে আসতে পারে বলে জানা গেছে।

চলতি বছরের ১০ মে তারা দালালের হাত ধরে বাংলাদেশ থেকে ইতালির উদ্দেশে রওনা হয়।

নিহতদের পরিবারের সদস্যরা জানায়, ফরিদপুর শহরের ডোমরাকান্দি এলাকার ইতালি প্রবাসী প্রতারক মফিজুর রহমান ফরিদপুরের সদর উপজেলার সায়েম ও সালথা উপজেলার সেলিম ও সানিকে ইতালির একটি ইলেক্ট্রনিক্স কোম্পানিতে ৮০ হাজার টাকা বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখায়। পরে তাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে সাত লাখ টাকা করে হাতিয়ে নেয় ওই দালাল। ইতালি নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশে ১০ মে তাদের বাংলাদেশ থেকে লিবিয়ায় নিয়ে যাওয়া হয়।

সায়েমের বাবা বিল্লাল মোল্লা বলেন, গত ৩ জুন ইতালির উদ্দেশে রওনা দিয়ে সায়েম তাদের ফোন করে জানায় একটি নৌকায় করে সমুদ্রপথে ইতালি নিয়ে যাওয়ার সময় সমুদ্রের মাঝখানে নৌকার তলা ফেটে গেছে, তাদের নৌকা ডুবে যাচ্ছে। তাদের নিশ্চিত মৃত্যু হতে যাচ্ছে বলে জানায়। এরপর ফোন কেটে যায় আর কোনো খবর পাওয়া যায়নি।

সায়েমের বাবা আরও বলেন, পরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে তাদের খোঁজ নিয়ে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হই। মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমেই দু’জনের মরদেহ ফেরত আনা হয়। আগামী সপ্তাহে সানির মরদেহ দেশে আসতে পারে।

এদিকে, সানির বাবা মফিজ মাতব্বর তার সন্তানের মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে এ ঘটনার বিচার দাবি করেছেন।

রোববার দুপুরে সায়েম মোল্লা ও সেলিমের মরদেহ বাড়িতে পৌঁছালে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। পরে তাদের মরদেহ দাফন করা হয়।
এ ঘটনায় পুলিশের কাছে কোনো তথ্য নেই বলে জানিয়েছেন কোতোয়ালি থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মো. এনায়েত হোসেন। তিনি বলেন, লোক মুখে জেনেছি বিদেশে মৃত্যু হওয়া দু’জনের মরদেহ দেশে এসেছে, পরিবার তাদের মরদেহ দাফন করেছে।

ফরিদপুর জনশক্তি কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ষষ্টী পদ রায় বলেন, মৃতরা জনশক্তি কার্যালয়ের মাধ্যমে যায়নি বিধায় তাদের বিষয়ে আমাদের অফিসে কোনো রেকর্ড নেই। ফলে তাদের মরদেহ দেশে আনার বিষয়েও আমাদের জানা নেই।

ফরিদপুর সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা বলেন, মরদেহ দেশে আসার পর প্রশাসনকে অবহিত করে দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে। এ ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি।

বাংলাদেশ সময়: ২১৫৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০১৯
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।