মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) সকাল থেকে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের ফলে নগরে যানজট কিছুটা কমলেও যাত্রীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বৈধ গাড়ির সংখ্যা বাড়লে এ সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে বলে জানিয়েছে ট্রাফিক বিভাগ।
বরিশাল মহানগর পুলিশের সূত্রে জানা গেছে, প্রথম ধাপে মঙ্গলবার থেকে নগরের জিলা স্কুল মোড় থেকে জেলখানা মোড়, কাকলীর মোড় থেকে সিটি করপোরেশনের মোড় হয়ে সেটেলমেন্ট অফিস মোড়, ডাচবাংলা ব্যাংকের মোড় থেকে গির্জামহল্লা হয়ে ফলপট্টির মোড়, ভাটারখাল ক্রসিং থেকে ডিসি অফিস গেট, সিটি করপোরেশনের মোড় ও ফলপট্টির মোড় হয়ে চকেরপুল পর্যন্ত উচ্চ আদালত দ্বারা নিষিদ্ধ ঘোষিত ব্যাটারিচালিত রিকশা ও হলুদ ইজিবাইক চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
এর ফলে নগরের বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ অন্য থ্রি-হুইলার বা গণপরিবহনখ্যাত প্যাডেল রিকশা, মাহিন্দ্রা ও সিএনজিতে করে সদর রোড, চক বাজার, ফলপট্টি, ফজলুল হক অ্যাভিনিউ, গির্জামহল্লা, আদালত পাড়া, জেলা প্রশাসন, জেলা পরিষদ ও নগর ভবনে আসছেন। তবে পরিবহনের কিছুটা সংকট থাকায় অনেকে হলুদ ইজিবাইকে করে জিলা স্কুলের মোড়, জেলখানার মোড়, নদীবন্দর সড়কসহ নিষেধাজ্ঞা এলাকা শুরু হওয়া পয়েন্টগুলোতে এসে নামছেন। এরপর হেঁটে গন্তব্যে যাচ্ছেন।
তবে প্রধান শহর অর্থাৎ সদর রোড এলাকায় হলুদ ইজিবাইক চলাচল বন্ধ হওয়ায় যানজট কমে যাওয়ায় খুশি হয়েছেন ব্যবসায়ীসহ স্থানীয় বাসিন্দারা। কারণ অবৈধ এসব যানবাহন যে পরিমাণে চলছে, তাতে নগরের প্রধান বাণিজ্যিক এলাকায় যানজট লেগেই থাকতো।
বরিশাল মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (ট্রাফিক) মো. খায়রুল আলম বলেন, বরিশাল মহানগর এলাকার গুরুত্বপূর্ণ সড়কসমূহের যানজট নিরসন ও সর্বসাধারণের চলাচল নির্বিঘ্ন ও নিরাপদ সড়ক গঠনের লক্ষ্যে উচ্চ আদালত দ্বারা নিষিদ্ধ ঘোষিত ব্যাটারিচালিত রিকশা ও হলুদ ইজিবাইক চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। প্রথম ধাপে নগরের প্রাণকেন্দ্র ঘিরে বেশ কয়েকটি সড়কে মঙ্গলবার থেকে এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলেও পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে মহানগর এলাকার সড়কে এ যানবাহনগুলো চলাচল নিষিদ্ধ করা হবে। আর জনগণের ভোগান্তি লাঘবে পর্যায়ক্রমে বন্ধের এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বরিশাল সিটি করপোরেশনের লাইসেন্স নিয়ে নগরে ২ হাজার ৬১০টি ব্যাটারিচালিত হলুদ ইজিবাইক (অটোরিকশা) চলাচল করে। তবে বাস্তবে নগরে চলাচলরত অটোরিকশার সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি।
এছাড়া প্যাডেলচালিত রিকশার চলাচলের অনুমতি থাকলেও, সেই রিকশার লাইসেন্স লাগিয়ে নগরে চলাচল করছে হাজারের মতো ব্যাটারিচালিত রিকশা। যে রিকশার বিরুদ্ধে উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে প্রশাসন।
আর বরিশাল মহানগর এলাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশার উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ না করলে বুধবার (২ অক্টোবর) থেকে আমরণ অনশনে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শ্রমিকরা।
বরিশাল মহানগর রিকশা-ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের দপ্তর সম্পাদক সুশান্ত সুকুল জানান, গত ১৯ আগস্ট থেকে কোনো ধরনের পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই বরিশাল শহরে দফায় দফায় ব্যাটারিচালিত রিকশা উচ্ছেদের নামে নির্মম প্রশাসনিক অভিযান চলছে। প্রায় দুই মাসব্যাপী অভিযানে এ পর্যন্ত পাঁচ শতাধিক ব্যাটারিচালিত রিকশা জব্দ করা হয়েছে এবং প্রায় প্রতিটি গাড়ির ব্যাটারি, মোটর খুলে রাখা হয়েছে। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ২ কোটি টাকা। এই বিপুল অর্থনৈতিক ক্ষতির পাশাপাশি দরিদ্র রিকশাচালকরা শিকার হয়েছে নানাবিধ আর্থিক হয়রানি ও নির্যাতনের।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ০১, ২০১৯
এমএস/আরবি/