জনগণের জন্য প্রকল্পটি এ সময়সীমার মধ্যে উন্মুক্ত করতে হবে মর্মে শর্ত জুড়ে দিয়ে চতুর্থবারের মতো অনুমতি দিয়েছে পরিকল্পনা কমিশনের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি)। এর পরে পদ্মাসেতু প্রকল্পের সময় কোনোভাবেই বাড়ানো যাবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে সংস্থাটি।
সূত্র জানায়, চলতি বছরের ২৯ আগস্ট আইএমইডির পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন সেক্টরের-২ (পরিবহন) মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো. কামরুজ্জামানের নেতৃত্বে একটি টিম সেতুর কার্যক্রম সরেজমিনে পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনের পর পরিবীক্ষণ প্রতিবেদনও জারি করা হয়। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে ২০১৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর ব্যয় বৃদ্ধি ছাড়া মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব আসে আইএমইডিতে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৬ সেপ্টেম্বর ব্যয় বৃদ্ধি ছাড়া মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়ে পর্যালোচনার জন্য একটি ফলোআপ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বাস্তবায়নকারী সংস্থার প্রতিনিধি, পরিকল্পনা কমিশনের প্রতিনিধি ও প্রকল্পের উপ-পরিচালক অংশ নেন। এই ফলোআপ সভায় সিদ্ধান্ত হয় শেষবারের মতো প্রকল্পের সময় ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানো যেতে পারে।
আইএমইডির মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো. কামরুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, ২০২১ সালের জুন মেয়াদে প্রকল্পটি সম্পন্ন করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে শর্ত দেওয়া হয়েছে এর পরে মেয়াদ বাড়ানোর ক্ষমতা আর আমাদের হাতে নেই। তবে আশা করছি প্রকল্পের অগ্রগতি ভালো। এই সময়ের মধ্যেই প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকার এ প্রকল্প। তাই যথাসময়ে শেষ করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আইএমইডি সূত্র জানায়, সংশ্লিষ্টদের আরও কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে অন্যতম প্রকল্পের খাতভিত্তিক অগ্রগতি ও যথাসময়ে বাস্তবায়ন সংক্রান্ত ওয়ার্কপ্ল্যান করে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিয়ে আইএমইডিতে পাঠাতে হবে, প্রকল্পের অর্থ ব্যয় একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বিধায় প্রকৃত ব্যয়ের চিত্র তথ্য-উপাত্তসহ আইএমইডিতে দ্রুত সময়ে পাঠাতে হবে এবং বর্ধিত সময়ে কার্যক্রম সম্পন্নের লক্ষ্যে মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ নিশ্চিত করতে হবে।
আইএমইডি সূত্র জানায়, কয়েকটি ভাগে বিভক্ত হয়ে এগিয়ে যাচ্ছে পদ্মাসেতু প্রকল্প। এরমধ্যে অন্যতম মূলসেতু, নদীশাসন, সার্ভিস এরিয়া, সংযোগ সড়ক, আবাসন নির্মাণ ইত্যাদি। ফলে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া এক খাতের টাকা অন্যখাতে ব্যয় করা যাবে না।
অগ্রগতি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ডিপিপির ব্যয় ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি ৭৬ লাখ টাকার বিপরীতে ব্যয় হয়েছে ৬৬ শতাংশ। প্রকল্পের শুরু থেকে আগস্ট ২০১৯ পর্যন্ত ব্যয়ের পরিমাণ ১৯ হাজার ৯৪৭ কোটি ৪১ লাখ টাকা।
প্রথমে ২০০৭ সালের জুলাই থেকে ২০১৫ সালের জুন মেয়াদে প্রকল্পটিসম্পন্ন হওয়ার সময়সীমা নির্ধারিত ছিল। এরপরে সময় বেড়ে দাঁড়ায় ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। আবারও ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর পযর্ন্ত সময় বাড়ানো হয়। সবশেষ ২০২১ সালের জুন মাস পর্যন্ত প্রকল্পটির সময় বাড়ানো হচ্ছে।
চতুর্থবারের মতো বেঁধে দেওয়া সময়ে প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করতে পারবে বলে জানায় সংশ্লিষ্ট সূত্র।
পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্পের উপ-প্রকল্প পরিচালক (প্রশাসন) ও যুগ্ম-সচিব দেওয়ান সাঈদুল হাসান বাংলানিউজকে বলেন, ২০২১ সালের জুনে প্রকল্পের কাজ শতভাগ সম্পন্ন হবে। এই তারিখ মাথায় রেখেই প্রকল্পের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। আশাকরি নির্ধারিত তারিখেই পদ্মাসেতু জনগণের জন্য উন্মুক্ত করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৮২১ ঘণ্টা, নভেম্বর ০২, ২০১৯
এমআইএস/এএ