ঢাকা, শনিবার, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

গ্রাম-নগরের বৈষম্য কমানোর তাগিদ

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১১৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০১৯
গ্রাম-নগরের বৈষম্য কমানোর তাগিদ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি): সীমিত এলাকার মধ্যে অপরিকল্পিতভাবে শহর নির্মাণের কারণে আবাসিক এলাকার বৈশিষ্ট্য পাল্টে যাচ্ছে বলে মনে করেন প্রখ্যাত নগরবিদ ও বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক নজরুল ইসলাম। 

একই সাথে তিনি সুযোগ-সুবিধায় গ্রাম-নগরের বৈষম্য কমানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।  

শনিবার (২৩ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুজাফফর আহমেদ চৌধুরী অডিটোরিয়ামে ‘নগরায়ণে বাংলাদেশ: অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক বক্তৃতায় এসব মন্তব্য করেন এই নগর পরিকল্পনাবিদ।

 

জ্ঞানতাপস আবদুর রাজ্জাক ফাউন্ডেশন ‘গুণীজন বক্তৃতামালা’র দ্বিতীয় পর্বের দ্বিতীয় বক্তৃতার অংশ হিসেবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী। স্বাগত বক্তৃতা করেন জ্ঞানতাপস আব্দুর রাজ্জাক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক ড. আহরার আহমদ।

অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে প্রণীত বাহাত্তরের সংবিধানে গ্রাম ও শহরের মধ্যকার বৈষম্য কমানোর অঙ্গীকার করা হয়েছিল। অথচ স্বাধীনতা-পরবর্তী প্রায় পাঁচ দশকে বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য হারে নগরায়ণ ঘটলেও তা কেন্দ্রীভূত থেকেছে প্রধানত ঢাকা ও এর আশেপাশের কয়েকটি শহর এবং কয়েকটি বিভাগীয় শহরের মধ্যে।  

‘বিভিন্ন বিভাগ ও জেলার মধ্যে নগরায়ণের মাত্রায় যেমন উল্লেখযোগ্য তারতম্য রয়েছে, তেমনি রয়েছে নগরের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের নাগরিক সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে প্রকট বৈষম্য। ফলে আমাদের বঙ্গবন্ধুর কাছে ফিরে যাওয়ার সময় হয়েছে। ’

তিনি বলেন, বাংলাদেশের নগর-ব্যবস্থায় মেগাসিটি ঢাকা নিরঙ্কুশ ‘প্রাইমেসি’ বা ‘নিয়ন্তা’ নগরের মর্যাদা ভোগ করে। জাতীয় জনসংখ্যার ১০ শতাংশ ঢাকা মেগাসিটিতে অথচ জাতীয় জিডিপির ৩৫ শতাংশ এই মেগাসিটির। আবার এই মেগাসিটি ঢাকার শ্রমশক্তির ৬০-৬৫ শতাংশই মামুলি জীবিকা নির্বাহী ‘ইনফরমাল সেক্টর’-এর সদস্য অথবা এর ওপর নির্ভরশীল। এই মেগাসিটির প্রায় ৪০ শতাংশ মানুষই দরিদ্রতার শ্রেণিভুক্ত।  

‘এ রকম এক বিশাল শহর, এর মধ্যে কসমোপলিটন চরিত্র খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। উচ্চতর শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবার ব্যবস্থা যেমন কিছুটা আছে, তেমনি বেড়ে উঠেছে অতি নিম্নমানের শিক্ষা-স্বাস্থ্য সেবা। অন্যান্য সেবার বেলাতেও একই পরিস্থিতি। ’

অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, ‘মেগাসিটির জনসংখ্যা বৃদ্ধি যে-গতিতে হয়েছে, এর পারিসরিক বিস্তৃতি একই গতিতে হয়নি, যোগাযোগ বা পরিবহন সেবা তো আদৌ সে-হারে বাড়তে পারেনি। ফলে সীমিত এলাকার মধ্যে শহর নির্মাণ চলছে। জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রবলভাবে বেড়ে যাচ্ছে। আবাসিক এলাকার বৈশিষ্ট্য বদলে গিয়ে মিশ্রিত এলাকা তৈরি হচ্ছে। ’

‘ঝলমলে অভিজাত আবাসিক এলাকার পাশাপাশি আরো দ্রুতগতিতে বেড়েছে হাজার হাজার বস্তি ও বাস্তুহারা কলোনি, নগর-পরিসরে সম্পদ ও সুযোগ-সুবিধার প্রকট বৈষম্য,’ যোগ করেন তিনি।  

বাংলাদেশ সময়: ২০০৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০১৯
এসকেবি/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।