বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে সাইনপুকুর অ্যাপার্টমেন্টে (মিরপুর-১) এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
আবু সাইয়ীদ বলেন, পাঁচটি বিষয় মাথায় রেখে চলন্ত রাস্তা ধারণাটি উপস্থাপন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, চলন্ত রাস্তা নিয়ে প্রথম কনসেপ্ট উপস্থাপন করা হয় ২০১৭ সালের ২২ আগস্ট বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে। বিষয়টি সরকারি পর্যায়ে আমলে নেওয়া হয় ও বিভিন্ন দপ্তরে বৈঠক হয়। এই প্রকল্পের অগ্রগতি রয়েছে। কিন্তু যে ধরনের অগ্রগতি হওয়া উচিত ছিল, তেমনটা এখনো হয়নি। আমি বিভিন্ন প্রকল্পে লক্ষ্য করে দেখেছি, অনেক ভুলভাল প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।
ঢাকার ফ্লাইওভারের কথা উল্লেখ করে আবু সাইয়ীদ বলেন, সংসদীয় কমিটিতেও আলোচনা হয়েছে ঢাকার ফ্লাইওভারগুলো ঠিকভাবে হয়নি। তবে আমি মনে করি না ঢাকার সবক’টি ফ্লাইওভার ঠিকভাবে হয়নি। দুই-তিনটি ফ্লাইওভার কার্যকর ভূমিকা রাখছে। যে পরিমাণ টাকা এখানে ব্যয় করা হয়েছে সে অনুযায়ী অধিকাংশ ফ্লাইওভার কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না।
মেট্রোরেলের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, মেট্রোরেল প্রকল্পে ব্যয় অনেক বেশি। বিভিন্ন দেশের মেট্রোরেলের খরচ পর্যালোচনা করে দেখা যায় তাদের খরচ অনেক কম। মনোরেলের খরচ আরও কম। আমাদের দেশের বিবেচনায় ভাবতে হবে কোন ধরনের ট্রান্সপোর্টেশনে যাবো। আর্থিক ও অন্য সব বিষয় বিবেচনায় আনতে হবে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে সরকারি পর্যায়ে সেভাবে করা হচ্ছে না। সরকারকেও ভাবতে হবে কীভাবে প্রকল্পগুলো হাতে নেবে।
এই চলচ্চিত্র পরিচালক বলেন, আমি যে সেক্টরে কাজ করছি, চলচ্চিত্র নির্মাণ করছি, এর পাশাপাশি পরিবহন ব্যবস্থা উদ্ভাবনের চেষ্টা করছি। এতে ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকলে প্রকাশ করা উচিত। তাহলে রাষ্ট্রীয়ভাবে আরও উদ্যোগ নেওয়া যাবে। সার্বিকভাবে আমাদের অবস্থান বিবেচনায় আনলে সংবেদনশীল মানুষ হিসেবে সেগুলো আমাকে কষ্ট দেয়। একারণেই আমি বিভিন্ন কাজ করছি। সমস্যা তুলে ধরায় আমি বিশ্বাসী নই। এটা করতে হবে, সেটা করতে হবে, তেমনটা নয়। কীভাবে সমস্যার সমাধান করা যায় সেগুলো আমি উপস্থাপন করতে চাই। আমি যা ভাবছি, সেগুলো কিন্তু চূড়ান্ত কিছু নয়। চূড়ান্ত হতেও পারে, নাও পারে। আমাদের ভাবতে হবে, বিকল্প পথে যেতে হবে। এটা নিয়ে কারও সন্দেহ নেই। যেভাবে চলছি এভাবে একটি শহর, একটি নগর, একটি দেশ ঠিক থাকতে পারে না।
তিনি আরও বলেন, চলন্ত রাস্তা প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে গড়ে প্রতি কিলোমিটার দুইশ’ কোটি টাকার মধ্যে হয়ে যাবে। যেখানে মেট্রোরেল প্রতি কিলোমিটার ১১শ’ কোটি টাকা খরচ করে তৈরি করা হচ্ছে। যে পরিবহন ব্যবস্থা আমাদের রয়েছে তার চেয়ে অনেক খরচ কম হবে ‘চলন্ত রাস্তা’ প্রকল্পে। চলন্ত রাস্তা শুধু এলিভেটেড পরিবহন না, এতে সুবিধা পাওয়া যাবে অনেক। পাশের লেনে হাঁটার ব্যবস্থা থাকবে, বাইসাইকেল লেন থাকবে। এই প্রকল্পে একই সঙ্গে অনেক সুবিধা পাওয়া যাবে।
চলন্ত রাস্তার উদ্ভাবক আবু সাইয়ীদ বলেন, আমি দেড় বছর ধরে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে পাইলট প্রকল্পের চিঠি দেওয়া হয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনকে। কিন্তু সিটি করপোরেশন কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না। যেকোনো উদ্ভাবনে আমাদের এগিয়ে আসতে হবে। বাংলাদেশে উদ্ভাবনের পরিবেশ অব্যাহত থাক, এটাই আমার চাওয়া। এই (চলন্ত রাস্তা) প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য সরকারের বোধ ও উদ্যোগের প্রয়োজন। একটি দেশ নতুন নতুন উদ্ভাবনের মধ্য দিয়েই এগিয়ে যায়।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০১৯
এমএমআই/একে