ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

সারওয়ার আলীকে হত্যাচেষ্টা, দারোয়ান-চালক রিমা‌ন্ডে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৪৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৮, ২০২০
সারওয়ার আলীকে হত্যাচেষ্টা, দারোয়ান-চালক রিমা‌ন্ডে

ঢাকা: বাসায় ঢুকে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের অন্যতম ট্রাস্টি ডা. সারওয়ার আলীসহ পরিবারের সদস্যদের ছুরিকাঘাত করে হত্যার ঘটনায় তার বা‌ড়ির দারোয়ান ও গা‌ড়িচালক‌কে দুই দিন ক‌রে রিমা‌ন্ড মঞ্জুর ক‌রেছেন আদালত।

মঙ্গলবার (০৭ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ঢাকার মে‌ট্রোপ‌লিটন ম্যা‌জি‌স্ট্রেট শ‌হিদুল ইসলাম এই আ‌দেশ দেন।

রিমান্ডে যাওয়া দুজন হ‌লেন- সারওয়ার আলী যে বা‌ড়ি‌তে থাক‌তেন তার দারোয়ান মো. হাসান ও গা‌ড়িচালক হা‌ফিজুল ইসলাম।

এর আ‌গে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সুকান্ত সাহা তা‌দের দুজন‌কে আদাল‌তে হা‌জির করে সাত দি‌নের রিমান্ড আ‌বেদন ক‌রেন। শুনা‌নি শে‌ষে আদালত দুই দি‌নের রিমান্ড মঞ্জুর ক‌রেন।

গত ৫ জানুয়ারি রাতে তার উত্তরার বাড়িতে হত্যা‌চেষ্টার এ ঘটনা ঘটে। এ সময় সারওয়ার আলীর স্ত্রী কমিউনিটি ক্লিনিকের সাবেক প্রকল্প পরিচালক মাখদুমা নার্গিস, তাদের মেয়ে সায়মা আলী, জামাতা হুমায়ুন কবিরকেও হত্যার চেষ্টা চালায়। তাদের বাঁচাতে এগিয়ে আসা দুই প্রতিবেশীকেও ছুরিকাঘাত করে দুর্বৃত্তরা।

এ ঘটনায় সোমবার (০৬ জানুয়ারি) দুজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত-পরিচয় চার–পাঁচজনকে আসামি করে রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মামলা করেন সারওয়ার আলী। মামলায় বাড়ির দারোয়ান মো. হাসান, তাদের সাবেক গাড়িচালক হা‌ফিজুল ইসলামসহ অজ্ঞাতনামা চার-পাঁচজনকে আসামি করা হ‌য়ে‌ছে।

পুলিশ সূত্র জানায়, গত রোববার রাতে অজ্ঞাতপরিচয়ের দুই দুর্বৃত্ত উত্তরার ৭ নম্বর সেক্টরে ডা. সারওয়ার আলীর বাড়িতে ঢোকে। তারা ওই বাড়ির তৃতীয় তলায় গিয়ে তার মেয়ে সায়মা আলীর বাসার দরজায় ধাক্কা দেয়। দরজা খুলে দেওয়া হলে দুর্বৃত্তরা ভেতরে গিয়ে সারওয়ার আলীর মেয়ে ও জামাতাকে ছুরিকাঘাত করে হত্যার চেষ্টা চালায়।

পরে বাড়ির চতুর্থ তলায় গিয়ে সারওয়ার আলী ও তার স্ত্রীকে হত্যার চেষ্টা করে। এ সময় তাদের চিৎকারে ওই ভবনের এক বাসিন্দা ও প্রতিবেশীরা এগিয়ে গেলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। এ সময় প্রতিবেশীদের ওপরও ঝাঁপিয়ে পড়ে তারা।  

সারওয়ার আলী বলেন, দরজা খুলতেই ছুরি হাতে দুর্বৃত্তরা আমাকে হত্যার চেষ্টা চালায়। আমার স্ত্রী এগিয়ে এলে তাকেও ছুরিকাঘাত করে হত্যার চেষ্টা চালায় তারা। তখন তিনতলা থেকে আমার মেয়ে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯–এ ফোন করে। তারা বাঁচার জন্য চিৎকার করে। এরই মধ্যে দোতলার ভাড়াটে শাহাবুদ্দিন চাকলাদার ও তার ছেলে মোবাশ্বের চাকলাদার এগিয়ে আসেন। এরপর দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়।

তিনি বলেন, ফোন করার মিনিট চারেকের মধ্যেই পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। আমরা সন্দেহ করছি, ভবনের দারোয়ান হাসানের সঙ্গে দুর্বৃত্তদের সম্পৃক্ততা থাকতে পারে।

এদিকে পুলিশ জানায়, বাড়ির দারোয়ান হাসানের কাছ থেকে একটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে। ফোনটি ছিল ডা. মাখদুমা নার্গিসের গাড়িচালক নাজমুলের, সেটি দারোয়ান হাসান ব্যবহার করছিলেন। হামলার দিন দারোয়ানের ওই ফোনে কমপক্ষে ৩০টি কল এসেছিল।

সারওয়ার আলীর পরিবারের সদস্যদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, কিছুদিন আগে তাদের গাড়িচালক নাজমুলকে অন্য সড়ক ব্যবহার করতে বলা হয়। কিন্তু তিনি ওই সড়ক ব্যবহার করতে আপত্তি জানান। পরে বাসায় ফিরে নাজমুল আর চাকরি করবেন না বলে চলে যান।  

উত্তরা পশ্চিম থানার ওসি তপন চন্দ্র সাহা জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় পুলিশ। এরপর তল্লাশি চালিয়ে ওই বাড়ির পার্কিং স্থল থেকে একটি স্ক্রু ড্রাইভার, ব্যাগে থাকা সাতটি চাপাতি, বৈদ্যুতিক শক দেওয়ার যন্ত্র, টিভি ক্যামেরার স্ট্যান্ড, সিনথেটিক দঁড়ি ও একটি কেমিক্যাল স্প্রে উদ্ধার করা হয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ২১৪২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৭, ২০২০
কেআই/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।