ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

রিফাত হত্যা: মিন্নি-নয়নের গোপন বিয়ের সাক্ষ্য দিলেন কাজী

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৫২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০২০
রিফাত হত্যা: মিন্নি-নয়নের গোপন বিয়ের সাক্ষ্য দিলেন কাজী

বরগুনা: বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি ও নয়ন বন্ডের কথিত বিয়ের কাজী আনিচুর রহমান। এছাড়া মামলা সংশ্লিষ্ট মো. কামাল হোসেন ও মিনারা বেগম নামে অপর দু’জনও সাক্ষ্য দেন।

মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামানের আদালতে ওই সাক্ষীরা তাদের সাক্ষ্য দিয়েছেন।  

এ মামলার প্রাপ্তবয়স্ক আসামিদের বিরুদ্ধে ২৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে।

কাজী আনিচুর রহমান আদালতে বলেন, ‘২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর মিন্নি ও নয়ন বন্ডের বিয়ে আমি সম্পন্ন করি। ওই দিন নয়ন বন্ডের কয়েকজন বন্ধু আমাকে নয়ন বন্ডের বাসায় নিয়ে যায়। তখন বাসায় নয়ন বন্ডের মা এবং মিন্নিসহ অনেক লোক উপস্থিত ছিলেন। নয়ন বন্ডের বাসায় বসেই পাঁচ লাখ টাকা দেনমোহরে মিন্নি ও নয়ন বন্ডের বিয়ে দেই আমি।  

কাজী আরও বলেন, বিয়ে সম্পন্ন করার পর আমি জানতে পারি মিন্নি বরগুনা পৌরসভার আবু সালেহ কমিশনারের ভাইয়ের মেয়ে। তখন আমি সালেহ কমিশনারকে আমার মোবাইলফোন থেকে কল দিয়ে মিন্নি ও নয়ন বন্ডের বিয়ের খবর জানাই। তিনি আমাকে বিয়ের কথা গোপন রাখতে বলেন। এরপর মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোরও আমাকে মোবাইলফোনে বিবাহের বিষয়টি গোপন রাখতে অনুরোধ করেন।

আদালতে আনিচুর রহমান আরও বলেন, এরপর আমি জানতে পারি, কুমারী পরিচয়ে রিফাত শরীফের সঙ্গে মিন্নির বিয়ে হয়েছে। রিফাত শরীফের সঙ্গে বিয়ের পরদিন মিন্নির বাবা আমাকে ফোনে বলেন- মিন্নি ও নয়ন বন্ড আগামীকাল আপনার কাছে যাবে। আপনি তাদের ডিভোর্স করিয়ে দিয়েন। কিন্তু মিন্নির বাবার কথা অনুযায়ী ওই দিন তারা আমার কাছে আসেনি। এর পরদিন ফোন করে আবারও আমাকে একই কথা বলেন মিন্নির বাবা কিশোর। ওই দিনও ডিভোর্সের জন্য মিন্নি ও নয়ন বন্ড আমার কাছে না আসায় মিন্নির বাবাকে ফোন দেই। তখন মিন্নির বাবা আমাকে বলেন- ওরা দু’জনে কমিটমেন্ট করেছে, বিয়ের কথা কাউকে জানাবে না। গোপন রাখবে। আপাতত থাক।

রিফাত হত্যা মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী মজিবুল হক কিসলু বাংলানিউজকে জানান, মিন্নি ও নয়ন বন্ডের বিয়ের কাজী আনিচুর আদালতে বিয়ের রেজিস্টার বালাম উপস্থাপন করার পর এটি গ্রহণ করেন আদালত। কাজীর সাক্ষ্যতে বুঝা যায় মিথ্যা বলছেন মিন্নি, নয়নের সঙ্গেও বিয়ে হয়েছিল তার।

রিফাত হত্যা মামলার প্রাপ্তবয়স্ক আসামিরা হলেন- রাকিবুল হাসান রিফাত ফরাজি, আল কাইউম ওরফে রাব্বি আকন, মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত, রেজওয়ান আলী খান হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয়, মো. হাসান, মো. মুসা, আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি, রাফিউল ইসলাম রাব্বি, মো. সাগর এবং কামরুল ইসলাম সাইমুন।  

এ মামলার চার্জশিটভুক্ত প্রাপ্তবয়স্ক আসামি মুসা এখনো পলাতক। পাশাপাশি রিফাতের স্ত্রী মিন্নি এবং মামলার অপ্রাপ্তবয়স্ক ছয় আসামি জামিনে থাকলেও অন্যরা কারাগারে আছেন। ১ জানুয়ারি রিফাত হত্যা মামলার প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালত। এরপর ৮ জানুয়ারি অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন বরগুনার শিশু আদালত।

বাংলাদেশ সময়: ০৫৫০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০২০
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।